প্রতিবেদন : মঞ্চে সুরের জাদুকর এ আর রহমান। বিশাল স্টেডিয়ামে ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর ‘রং দে বাসন্তি …’। শেষবেলায় সত্যিই রং ছড়িয়ে গেল আইপিএল (IPL Closing Ceremony)।
ন’সপ্তাহের ধুন্ধুমার ক্রিকেট শেষে আরও রঙিন হল কোটিপতি লিগ। রণবীর সিং (Ranveer Singh) ও এ আর রহমানের (AR Rahman) হাত ধরে। একজন মঞ্চ মাতিয়ে দিলেন নাচে-গানে। দৌড়ে-লাফিয়ে। এবং ঈষৎ অভিনয় সহযোগে। অন্যজন দল নিয়ে এসে সুরের জাল বিছিয়ে দিলেন মোতেরার স্টেডিয়ামে।
তিন বছর। হ্যাঁ, আইপিএলের সমাপ্তি অনুষ্ঠান (IPL Closing Ceremony) ফিরল তিন বছর পর। সেই রবি শাস্ত্রী-ই ফের হাজির হলেন মাইক্রোফোন হাতে। ‘থ্যাঙ্ক ইউ লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলম্যান’, আইপিএল মঞ্চে ভারী গলায় এটা তাঁকেই মানায়। নীল পোশাকের উপর উত্তরীয়। মাঝে গোটা সাতেক বছর কেটে গিয়েছে। আরও বড় দায়িত্বে ছিলেন প্রাক্তন ভারতীয় কোচ। তিনি ফিরলেন। আর ফিরে এল আইপিএলের সমাপ্তি অনুষ্ঠানও।
আরও পড়ুন: বিরাট-বার্তা: ফের মিলব পরের বছর
শাস্ত্রী প্রথমে ডেকে নিয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, বোর্ড সচিব জয় শাহ ও আইপিএল চেয়ারম্যান ব্রিজেশ প্যাটেলকে। তারপর ডাক পড়ল দুই অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া এবং সঞ্জু স্যামসনের। ট্রফির সামনে এসে দাঁড়ালেন দু’জনে। তখনও কেউ জানেন না কার হাতে এই ট্রফি উঠবে।
মেগা সমাপ্তির অনুষ্ঠান শুরু হল রণবীরকে দিয়ে। এই রণবীর শুধু বলিউডের চনমনে অভিনেতা নন, ‘৮৩’-তে কপিলদেবের ভূমিকায় অভিনয় করা ‘ক্রিকেটার’ও। যেটা বোঝা গেল কয়েকবার হাতে ব্যাট তুলে নেওয়ায়। হাওয়ায় বার কয়েক ছক্কাও হাঁকিয়ে নিয়েছেন অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের স্বামী।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় সাতশো শিল্পী অংশ নিলেন সমাপ্তি অনুষ্ঠানে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর ও ভারতীয় ক্রিকেটের আট দশককে তুলে ধরা হল পঁয়তাল্লিশ মিনিটের অনুষ্ঠানে। রণবীর বেশিটাই তাঁর ফিল্মের গানের সঙ্গে গ্যালারিকে মাতিয়ে গেলেন। ‘বাবুজি কো চাল দেখো’, ‘…এন্ট্রিয়ার’, এমন অনেক গানের সঙ্গে রং-বেরঙের পোশাকে জমিয়ে দিয়েছেন তিনি।
অনুষ্ঠানের বাকিটা অবশ্য বরাদ্দ ছিল রহমানের জন্য। তিনি শুরুই করলেন সুপারহিট ‘মা তুঝে সেলাম’ দিয়ে। কালো টি শার্টের উপর কালো ছাপ-ছাপ কোট। চোখে কালো চশমা। রহমান একটা করে গান ধরছেন আর পিছনে পর্দায় ভেসে উঠছে ভারতীয় ক্রিকেটের একটা করে যুগ। ২০১০-এ আসা মাত্র পর্দায় চ্যাম্পিয়নদের ছবি স্পষ্ট হয়ে গেল। কোন চ্যাম্পিয়ন? ধোনির নেতৃত্বে ২০১১-র বিশ্বকাপ জয়।
রহমানের সুরের তালে তখন গলা মেলাচ্ছেন মাঠের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা রাজস্থান ও গুজরাটের ক্রিকেটাররাও। ‘রং দে বাসন্তি’ গেয়ে তিনি এবার ধরলেন শেষ গান ‘জয় হো’। স্টেডিয়ামও যেন তারই অপেক্ষায় ছিল। কোভিডকে অতীত করে সত্যিই যেন জয় হল মন পাগল করা ক্রিকেটের।