প্রতিবেদন : মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে অশনি সঙ্কেত৷ শুধুমাত্র বদলার হুমকিতেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেনি ইরান। রবিবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই ইজরায়েলে হানা দিয়েছে তারা। ইজরায়েলকে নিশানা করে কয়েকশো ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়েছে ইরান৷ ইজরায়েল অবশ্য রুখে দিয়েছে বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্রকে। হামলা রুখতে পাশে পেয়েছে আমেরিকাকে। ইজরায়েলের দাবি, ইরানের ২০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে তারা। বন্ধু দেশগুলোর সহযোগিতায়। অবশ্য কোন পক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র ঠিক কোথায় আছড়ে পড়েছে, তা স্পষ্ট নয়৷ তবে এই হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড বাহিনী৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, এভাবে ইজরায়েল-গাজার যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলিও জড়িয়ে পড়তে পারে৷
আরও পড়ুন-সিএএ হলে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা জলাঞ্জলি যাবে, সাফ কথা অমর্ত্যর
ইরানকে পালটা জবাব দিলেও দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে ইজরায়েল। দেশের সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার৷ রবিবার থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইজরায়েল৷
রবিবার ভোরে ইজরায়েলের উপর অতর্কিতে হামলা চালায় ইরানের কয়েকশো ড্রোন, ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং ক্রুজ মিসাইল৷ ঘুমচোখে নাগরিকরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাইরেনের শব্দ। তারপরেই ইজরায়েলের পালটা আক্রমণের পালা। টিভি চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ইরানি হানার খবর। সেইসঙ্গে সতর্কবার্তাও। যুদ্ধ আবহে দেশবাসীর জন্য একাধিক সতর্কতা জারি করেছে ইজরায়েল সরকার৷ সতর্কীকরণ সাইরেন শুনে দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ ১০ মিনিটের জন্য সেখানে থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে৷
আরও পড়ুন-চিনার পার্কের রেস্তোরাঁয় আগুন
ইজরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র রিয়র অ্যাডমিরাল জেনারেল ড্যানিয়ল হগারি জানান, বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে আগামী বেশ কয়েকদিনের জন্য দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ সেই সঙ্গে, যে কোনও অনুষ্ঠানে ১০০০ জনের বেশি মানুষ উপস্থিত হতে পারবে না৷ দেশবাসীর সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি৷ তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন অ্যাডমিরাল জেনারেল৷ তিনি বলেছেন, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ ব্যবস্থাকে গুছিয়ে নিয়েছি আমরা। এই হামলার জবাব দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল ইজরায়েল।
লক্ষণীয়, গত ১ এপ্রিল আকাশপথে হামলায় সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে দুই জেনারেলের মৃত্যু হয়৷ সেই ঘটনার বদলা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে ইরান৷ তবে এই ঘটনায় ইজরায়েল কোনও মন্তব্য করেনি৷
কয়েকদিন ধরেই ইরানের সুপ্রিম আয়াতোল্লাহ আলি খামিনি সিরিয়ায় হামলার পাল্টা জবাব দেবেন বলে ইজরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন৷ এদিকে ইরানের ড্রোন হামলার পর ইজরায়েলও লেবাননের দক্ষিণে বিভিন্ন জায়গায় আকাশপথে হামলা চালাতে শুরু করেছে৷ লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠী হেজবোল্লাহ জানিয়েছে, তারাও ইজরায়েলের গোলান হাইটসে সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে পাল্টা রকেট ছুঁড়েছে৷