প্রতিবেদন : দেশে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জানুযারি শেষে বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে দেশে সংক্রমণ শিখরে পৌঁছবে। সংক্রমণ রোধ করতে বিশেষজ্ঞরা বারবার সব ধরনের সভা-সমাবেশ, জমায়েত নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সেই পরামর্শ কানে তোলা তো দূর অস্ত, বরং উৎসবের নামে জনসমাগম ও মেলা আয়োজনে রাশ টানেনি উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। আগামী মাসে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ভোটের কথা মাথায় রেখেই হিন্দুত্বের প্রচারে ফায়দা তুলতে চলতি করোনা পরিস্থিতিতেও প্রয়াগরাজে মাঘ মেলার অনুমতি দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার।
আরও পড়ুন-ছকভাঙা একটি গোয়েন্দা চরিত্র গোরা
এই মেলা থেকে করোনা কীভাবে ছড়াচ্ছে তার হাতেগরম প্রমাণও মিলেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই মেলায় যোগ দেওয়া ৪২ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৩৮ জন পুলিশকর্মী এবং বাকি চারজন পুণ্যার্থী। আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি মেলা সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় এখনও পর্যন্ত ৩৮০ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। পাশাপাশি ওই এলাকায় অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। যা খুবই উদ্বেগের।
আরও পড়ুন-কল্পনা, তবু গল্প না
প্রতিবছর প্রয়াগরাজের মাঘ মেলায় বিভিন্ন রাজ্য থেকে বহু মানুষ যোগ দিতে আসেন। প্রশাসন জানিয়েছিল, মেলায় যোগ দিতে হলে ২৪ ঘণ্টা আগে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ হলে তবেই মেলায় যোগ দেওয়ার অনুমতি মিলবে। কিন্তু ওই নির্দেশ স্রেফ কাগজেকলমে থেকে গিয়েছে। নির্দেশ বাস্তবায়নে কোনও কড়াকড়ি ছিল না। উল্টে দেখা গিয়েছে, বহু মানুষ কোনওরকম রিপোর্ট না নিয়েই দিব্যি মেলায় যোগ দিয়েছেন। বেশিরভাগ মানুষেরই মুখে মাস্ক নেই। লাখ লাখ মানুষের ভিড়ে দূরত্ববিধি মানার নির্দেশ দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। গঙ্গায় ঠাসাঠাসি ভিড়ে চলেছে পুণ্যস্নান।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, প্রয়াগরাজের মেলায় যেভাবে ভিড় হয়েছে তাতে সংক্রমণ কয়েকদিনের মধ্যেই এক ঝটকায় বহুগুণ বাড়বে। কারণ বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ আক্রান্ত হয়ে মেলা থেকে বাড়ি ফিরবেন। যোগী সরকারের মাঘ মেলা আগামী দিনে করোনার সুপার স্প্রেডার হয়ে উঠবে, এমন আশঙ্কা বাড়ছে।