প্রতিবেদন : সোমবার মধ্যরাতেই শেষ হয়েছে গাজা ভূখণ্ডে চারদিনের আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির সময়সীমা। এরপর কী হবে? নতুন করে অনিশ্চয়তা আর আশঙ্কার দোলাচলে গাজাবাসী। যদিও এর পাশাপাশি যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা অব্যাহত। কাতার, মিশর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় সমস্ত বন্দিমুক্তির প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চালু রাখা হোক। হামাসও শক্তি হারিয়ে এবিষয়ে নমনীয় অবস্থান নিয়েছে। পাল্টা চাপের কৌশল জারি রেখে ইজরায়েলও যুদ্ধবিরতি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে বলে খবর।
আরও পড়ুন-গ্রামে শিক্ষকতা, সমস্যা মেটাতে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী
গত ৭ অক্টোবর থেকে চলতে থাকা লাগাতার হামলার মুখে কার্যত ধ্বংসস্তূপ গাজা উপত্যকা। ইজরায়েলি সেনার লাগাতার হামলায় জেরবার হামাস বন্দিমুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে গিয়েছে। শুক্রবার থেকে মাত্র চারদিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে এদিন মধ্যরাতে (স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ৭টা)। মেয়াদ শেষের পর এবার কী পরিণতি হতে চলেছে গাজার? তা নিয়ে বাড়ছে কৌতূহল। অবশ্য ইতিমধ্যেই গাজার মাটিতে দাঁড়িয়ে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, লড়াই থামবে না। ফলে নতুন করে হামলার প্রমাদ গুনছে গাজা উপত্যকা।
আরও পড়ুন-যমজ নগরীতেও এবার পালিত হল দেব-দীপাবলি
জানা গিয়েছে, এই ৪ দিনের যুদ্ধবিরতিতে এখনও পর্যন্ত ৬৩ জন পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। অন্যদিকে, ১১৭ জনকে মুক্তি দিয়েছে ইজরায়েল। পাশাপাশি ১৮ শিশু ও ৪৩ মহিলা সমেত ১৮৩ জন এখনও হামাসের হেফাজতে। এর মাঝেই গাজার মাটিতে পা রেখে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধ শেষ হতে এখনও অনেক বাকি। হামাসকে পুরোপুরি উপড়ে ফেলতে হবে। সেই সঙ্গে এটাও নিশ্চিত করতে হবে, গাজা যেন ইজরায়েলের বিপদের কারণ হয়ে উঠতে না পারে। তবে ইজরায়েল যতই হুঙ্কার দিক, যুদ্ধ থামানোর জন্য গোটা বিশ্বের তরফে চাপ দেওয়া হচ্ছে ইজরায়েলকে।
আরও পড়ুন-স্কুলে ভর্তির বয়সসীমা জারি নতুন নির্দেশিকা
রবিবার আমেরিকার তরফে বিবৃতি জারি করে ইজরায়েলের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, তারা যেন যুদ্ধবিরতি জারি রাখে। আরও পণবন্দির মুক্তির বিনিময়ে আরও চারদিন যুদ্ধবিরতির দাবি রেখেছে হামাস। এখনও কিছু বন্দি হামাস-সহ অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে আটক রয়েছে। তার মাঝে ফের হামলা হলে বাকি পণবন্দিদের ভবিষ্যতে মুক্তি পাওয়া কঠিন হয়ে উঠতে পারে। পণবন্দিদের পরিবারের পাশাপাশি ইজরায়েলের মিত্র দেশগুলি আরও বেশি মানুষের মুক্তি নিশ্চিত করতে চাপ বাড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন-তৃণমূল কর্মী খুনে গ্রেফতার হল বিজেপির বুথ সভাপতি
এর মধ্যে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে তাঁর কোনও সমস্যা নেই। অবশ্য এই বিষয়ে আগেও নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন, প্রতি ১০ জন বন্দিমুক্তির বিনিময়ে ১ দিনের যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর কথা। ফলে গাজার মাটিতে দাঁড়িয়ে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি আসলে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া হামাসকে চাপে রাখার পন্থা বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।