বারুইপুরের শিবানীপীঠে দেবীকে আমিষ ভোগ দেওয়াই রীতি

দেবীর পীঠস্থান এই বঙ্গে বহু স্থানে রয়েছে। বলা যেতে পারে যে এই বঙ্গদেশের মাহাত্ম্যই দেবীপীঠের জন্য। এছাড়া অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান তো আছেই

Must read

সংবাদদাতা, বারুইপুর : দেবীর পীঠস্থান এই বঙ্গে বহু স্থানে রয়েছে। বলা যেতে পারে যে এই বঙ্গদেশের মাহাত্ম্যই দেবীপীঠের জন্য। এছাড়া অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান তো আছেই। বঙ্গদেশের মধ্যে কলকাতা হল কালীক্ষেত্র। এই তিলোত্তমার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও বহু প্রাচীন কালীমন্দিরের ইতিহাস।
কালীঘাটের কালী কলকাতার অধীশ্বরী হলেও অন্যান্য মন্দিরের দেবী কালিকা কলকাতার ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে রয়েছে দেবী কালিকার এমনই এক পীঠস্থান যা শিবানীপীঠ নামে পরিচিত। এই পীঠস্থান প্রতিষ্ঠা করেন সেই অঞ্চলের ভট্টাচার্যবাড়ির পূর্বপুরুষরা যা আজ এক অতি মাহাত্ম্যপূর্ণ স্থান হিসাবে পরিচিত।

আরও পড়ুন-তৃণমূলের দেখানো পথেই বকেয়া আদায়ে দিল্লি অভিযানে বিজয়ন

মন্দির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ভট্টাচার্য পরিবারের বারুইপুরে আগমন বাইরে থেকে। ১৩০০ বঙ্গাব্দ নাগাদ বারুইপুর অঞ্চলের জমিদার রমেন্দ্র রায়চৌধুরী তাঁদের বংশের কুলদেবতার সেবার জন্য ব্রাহ্মণ নিয়ে আসেন লক্ষ্মীকান্তপুরের গোকর্ণি থেকে। সেই ব্রাহ্মণদের তিনি তাঁর জমিদারিতে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন। সেই থেকে এই অঞ্চলে একটি পাড়ার নাম হয় ‘ভট্টাচার্যপাড়া’, যে অঞ্চলে ভট্টাচার্য ব্রাহ্মণরা থাকতে শুরু করেন। অক্ষয়কুমারের নাতনি নিরুপমাদেবী এবং জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ অনুরূপাদেবী স্বপ্নাদেশ পান যে, তাঁদের বাড়ির পাশের পুকুরে দেবীর ঘট রয়েছে। সেইমতো তাঁরা সেই পুকুর থেকে দেবীর ঘট তোলেন দুর্গাদাসবাবুর। এরপর মন্দিরের দেবীবিগ্রহের প্রথম নাম ছিল মা ভবানী। কিন্তু পরবর্তীকালে দুর্গাদাসবাবু স্বপ্নাদেশ পান যে তাঁর মেয়ের নামে মা কালিকার নাম রাখতে। সেইমতো শিবানীর নামেই মায়ের নাম হয়।

আরও পড়ুন-সংশোধনাগারের দর্শনার্থীদের জন্য এবার বাধ্যতামূলক আধার কার্ড

দেবী বিগ্রহটি সম্পূর্ণ নিমকাঠের তৈরি এবং উচ্চতা প্রায় চার ফুট। বিগ্রহটি তৈরি করেন বারুইপুরেরই স্থানীয় শিল্পী। তিনি বিগ্রহটি তৈরি করে মাকে মাথায় করে নিয়ে আসেন। আগে যে স্থানে দুর্গাপুজো হত সেখানেই দেবীর মন্দির তৈরি করেন দুর্গাদাস ভট্টাচার্য। ঘটটি উদ্ধার করেন এবং ১৯৬৬ সালের কালীপুজোর দিন প্রতিষ্ঠিত হন মা শিবানী। এই দেবীকে প্রতিষ্ঠা করেন দুর্গাদাস ভট্টাচার্য। দেবীকে নিত্য আমিষ ভোগই নিবেদন করা হয় বলে জানালেন শুদ্ধস্বত্ত্ব ভট্টাচার্য। ভোগে থাকে সাদাভাত, ভাজা, তরকারি, মাছ, চাটনি, পায়েস ইত্যাদি। অতীতে প্রতীকী বলিদান হলেও এখন সেই প্রথা বন্ধ। এই পীঠস্থানে কালীবিগ্রহ ছাড়া পারিবারিক নারায়ণ, গোপাল আর দু’টি শিবমন্দির রয়েছে কেদারনাথ ও বিশ্বনাথ।

Latest article