প্রতিবেদন : নিজের পদের অপব্যবহার করে ফৌজদারি মামলার তদন্তে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা এবং তাঁর স্বামী প্রতাপচন্দ্র দে-র বিষয়ে রিপোর্ট তলব করল সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই আজ বিশ্বের দরবারে সমাদৃত শারদোৎসব
৬৪ বছরের এক বিধবা বৃদ্ধা এবং তাঁর মেয়ে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁর সম্পত্তি নিয়ে দুটি মামলার তদন্তে অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করছেন বিচারপতি এবং তাঁর আইনজীবী স্বামী। লক্ষণীয়, দুটি মামলারই তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্যের গোয়েন্দা দফতর বা সিআইডি। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি খান্না ও বিচারপতি ভাট্টির বেঞ্চ সিআইডিকে কোনও চাপের কাছে মাথা নত না করে তদন্ত চালিয়ে যাবার নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তে কোনওরকম হস্তক্ষেপ হলেই তা সঙ্গে সঙ্গে আদালতকে জানানোরও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ।
আরও পড়ুন-ইডেনে বাজি, ভয় পেয়ে দৌড়ল মাউন্টেড পুলিশের ঘোড়া, আহত ২ পুলিশকর্মী
ঘটনার সূত্রপাত ওই বৃদ্ধার পৈতৃক সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে। তাঁর বক্তব্য, বাবার মৃত্যুর পর সম্পত্তির একাংশ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর দাদা ও দাদার পরিবার তাঁকে ওই সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চক্রান্ত শুরু করে। এর জন্য শুধু হুমকি নয়, দৈহিক নির্যাতনও চালানো হয় তাঁর উপরে। যার প্রমাণ রয়েছে সিসিটিভি ফুটেজেও। বৃদ্ধার দাদার পরিবার তাঁদের আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করে বিচারপতি সিনহার স্বামী প্রতাপচন্দ্র দে-কে। অভিযোগ, বিচারপতি তাঁর চেম্বারে ডেকে সিআইডির তদন্তকারী অফিসারদের ব্যাপক ধমক দেন এবং বলেন, এটা তো দেওয়ানি মামলা। এখানে ফৌজদারী তদন্ত কেন?
আরও পড়ুন-আজ থেকে শুরু উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিং
তদন্ত বন্ধ করার জন্য সিআইডিকে চাপ দেন তিনি। আসলে এই ঘটনায় তদন্তকারীরা এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল বলেই এই চাপ দেওয়া হয়, অভিযোগ মামলাকারী বৃদ্ধার। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। আবেদনকারী মহিলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এব্যাপারে দুটি মামলা বিচারাধীন। একটি হল প্রতারণা এবং ফৌজদারি ষড়যন্ত্র। দ্বিতীয়টি হল খুনের চক্রান্ত এবং বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ। তাঁর অভিযোগ, তদন্ত মাঝ পথে বন্ধ করার জন্য হাইকোর্টের বিচারপতি এবং তাঁর আইনজীবী স্বামী চাপ সৃষ্টি করছে।
আরও পড়ুন-কালীপুজোর আগেই শীত-ভাব
এই কারণেই থমকে দাঁড়িয়েছে তদন্ত। পুলিশি নিরাপত্তার জন্য শীর্ষ আদালতে আর্জি জানানো হয় মামলাকারীর পক্ষ থেকে। সোমবারের শুনানিতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই তদন্তের বিষয়ে সাম্প্রতিকতম একটি রিপোর্ট তারা ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে পেশ করেছে। মামলাকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গেই চলছে। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ এদিন স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে কোনও চাপের কাছে মাথা নত না করে তদন্তের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এবিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হলে তা যেন অবিলম্বে আদালতকে জানানো হয়। রাজ্য সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, ডিসেম্বরে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট একটি মুখবন্ধ খামে আদালতে পেশ করতে হবে।