কাশিমবাজার রাজবাড়ির পুজোয় এখনও জাঁকজমক

মারাঠা দস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার ফিরোজপুর থেকে বহরমপুরের কাশিমবাজারে চলে আসেন অযোধ্যারাম রায়।

Must read

কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: শতাব্দীপ্রাচীন কাশিমবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজো এবারেও জাঁকজমকপূর্ণভাবে শুরু হল। প্রতিপদ থেকে। ছয় পুরোহিত মিলে রবিবার সকাল থেকে পুজো শুরু করেছেন। দূরদূরান্ত থেকে হাজির রায় পরিবারের সদস্যরা।
মারাঠা দস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার ফিরোজপুর থেকে বহরমপুরের কাশিমবাজারে চলে আসেন অযোধ্যারাম রায়। ভগবানগোলার বাড়ির মতো কাশিমবাজারের বাড়িতেও শুরু হয় দুর্গাপুজো। মুর্শিদাবাদে আলিবর্দি খাঁর রাজত্বকালে সেই সময় ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে সখ্য বাড়িয়ে রেশমের ব্যবসা করেন অয্যোধ্যারামের পুত্র দীনবন্ধু।

আরও পড়ুন-পুলিশ হওয়ার স্বপ্নে থানায় কাজ শিখতে হাজির কন্যাশ্রীর দল

ব্রিটিশ সরকারের ‘রায়’ উপাধি পেয়ে ১৭৪০-এ কাশিমবাজারে একটি রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করেন দীনবন্ধু। তিনিই জাঁকজমকের সঙ্গে দুর্গাপূজার সূচনা করেন, জানালেন রাজবাড়ির দশম বংশধর পল্লব রায়। পরিবারের প্রবীণ সদস্য প্রশান্ত রায় বলেন, কালক্রমে পুজোর জৌলুস কমেছে। রাজবাড়ির ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে কাজের সন্ধানে কলকাতা চলে যান পরিবারের সদস্যরা। বছর কয়েক পরে সেই রাজবাড়ি পুরনো চেহারায় ফিরে আসে বর্তমান সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। তবে আগে যেভাবে হাতি, ঘোড়া, বন্দুক, বরকন্দাজ নিয়ে শোভাযাত্রা হত, সেটা এখন নেই। এখন বিদ্যুৎ এসেছে।

আরও পড়ুন-পাঁচমুড়ার টেরাকোটায় সাজবে উত্তরবঙ্গ থেকে দিল্লির মণ্ডপ

বিদেশের মেমসাহেবরা এখনও পুজো দেখতে আসেন। অনেকে আবার রাজবাড়ির হোটেল ভাড়া করেও থাকেন। ছোট রাজবাড়ির আরতি দেখার জন্য মন্দির প্রাঙ্গণ ভর্তি হয়ে যায়। তিনটি পুরাণ সংযুক্ত করে রাজবাড়ির নিজস্ব পুঁথি দেখে শুরু হয় দুর্গা-আরাধনা। প্রথা মেনে অপরাজিতা পুজো হলেও নীলকণ্ঠ পাখি আর ছাড়া হয় না। বলির পরিবর্তে মাছের ভোগ নিবেদন হয়। পুজোর সময় সারাদিন খোলা থাকে রাজবাড়ির মন্দির।

Latest article