বেতন না দেওয়ায় স্কুলে আটক শিশু

সাধারণ ভাবে যেকোনও স্কুলে ফি বকেয়া থাকলেও তাকে পরীক্ষায় বসানো হয় না। এমনকী বছরের শেষে ফি নেওয়া হয়। তাই এই তুঘলকী আচরণ কেন?

Must read

প্রতিবেদন : স্কুলের বেতন দিতে পারেননি বাবা। এজন্য মানসিক নির্যাতনের শিকার হল মাত্র ৫ বছরের এক পড়ুয়া। ৪০ মিনিটেরও বেশি তাকে একাকী স্কুলঘরে আটকে রাখা হয় প্রিন্সিপালের নির্দেশে। বাড়ি ফেরার পর ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। অজ্ঞানও হয়ে যায়। ডাক্তার এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার দমদম রোডের কাশীপুর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। স্কুল কর্তৃপক্ষের এই আচরণে ওই পরিবার সিঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টও করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পড়ুয়াদের ওপর জোর করে ফি আদায় করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে। এর পরেও কীভাবে ফি না দেওয়ার ঘটনায় খোদ নার্সারির শিশু পড়ুয়াকে আটকে রাখা হল তা নিয়ে শুধু প্রশ্নই ওঠেনি, ধিক্কারও উঠেছে ওই স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে। যদিও এতবড় ঘটনার পরেও স্কুলের তরফে দুঃখ প্রকাশ করে কোনওরকম বিবৃতিও দেয়নি।

আরও পড়ুন-দুধ ফোটালে হচ্ছে রাবার

পরিবারের অভিযোগ, ব্যক্তিগত সমস্যা থাকার কারণে মাস তিনেক স্কুলের বেতন দিতে পারেননি পড়ুয়ার বাড়ির লোক। তারপর সেই টাকা দিতে চাইলে স্কুলের তরফ থেকে বলা হয় ওই টাকা প্রিন্সিপালের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট-এ পাঠাতে হবে এবং গোটা বিষয়টিকে রি-অ্যাডমিশন হিসেবে ধরা হবে। এরপর আজ স্কুলের পরীক্ষার শেষে প্রায় মিনিট ৪০ ওই শিশুকে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ পড়ুয়ার অভিভাবকদের। তাঁরা বলছেন, পরীক্ষার পর ৯.৩০ মিনিট নাগাদ স্কুল ছুটি হওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় ১০টা ১৫ মি পর্যন্ত খুদে পড়ুয়াকে আটকে রাখা হয়।

আরও পড়ুন-জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে স্মারকলিপি

এই বিষয়ে স্কুলের কাছে জানতে চাওয়া হলে স্কুলের তরফ থেকে বলা হয় প্রিন্সিপালের নির্দেশ মেনেই এমন কাজ করা হয়েছে। বাড়ি ফেরার পর পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপরই শিশুর পরিবার সিঁথি থানার দ্বারস্থ হয়ে স্কুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রশ্ন উঠেছে, বকেয়া ফি কেন প্রিন্সিপালের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট-এ জমা দিতে হবে? আবার রিঅ্যাডমিশনই বা কেন? পুলিশ এসব নিয়ে তদন্ত করছে। এক শিশু পড়ুয়ার ওপর এরকম মানসিক নির্যাতনের জন্য অভিভাবক মহলেও তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সাধারণ ভাবে যেকোনও স্কুলে ফি বকেয়া থাকলেও তাকে পরীক্ষায় বসানো হয় না। এমনকী বছরের শেষে ফি নেওয়া হয়। তাই এই তুঘলকী আচরণ কেন?

Latest article