কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: ৫১ সতীপীঠের অন্যতম নবগ্রামের কিরীটেশ্বরী মন্দির। হিন্দু-মুসলিম ও বৌদ্ধধর্মের সমন্বয়ে এই মন্দির কালীপুজো সেজে উঠেছে। হাজার হাজার ভক্ত মন্দিরে রাতভর পুজো দিলেন সোমবার। দক্ষযজ্ঞের সময় সতীর কিরীট অর্থাৎ মাথার মুকুট পড়ে নবগ্রামে। ১১০৪ বঙ্গাব্দে কিরীটেশ্বরী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন নাটোরের রানি ভবানী। সেই থেকে নিয়মিত জাগ্রত মায়ের পুজোপাঠ হয়ে আসছে মন্দিরে। বর্তমান সেবাইত দিলীপ ভট্টাচার্য জানান, ‘‘একসময় বৌদ্ধতন্ত্রের প্রভাব ছিল, নাটোরের রানি ভবানী মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় নকশা দিয়ে তা প্রমাণ করে দেন।
আরও পড়ুন-ঝড়ের ধাক্কায় ভাঙল মণ্ডপ
মন্দিরের খিলানে রয়েছে ইসলামিক আর্কিটেকচার। রয়েছে হিন্দু স্থাপত্যশৈলীর আটচালা। ফলে তিন ধর্মের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে কিরীটেশ্বরী মন্দির। মন্দিরের চার চালায় তিনটি ধর্ম প্রতিষ্ঠিত।” মন্দিরে নিত্যপূজো হয় আজও, তবে শনি-মঙ্গলবার ভক্তদের ভিড় হয়। কালীপুজোয় মানতের পাঁঠাবলি হয়। এবারেও কালীপুজোয় সারা রাত পুজো হল প্রথা মেনে। হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটল।
আরও পড়ুন-বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে উত্তাল রাজ্য, পদ্মর দালালি করতে আসরে অশোক
মন্দিরের আরেক সেবাইত শুভঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, এখানে দুটি মন্দিরের মধ্যে একটিতে তন্ত্রসাধনা হয়েছিল। আরেকটি মন্দিরে সতীর কিরীট পড়েছিল। দুটি মন্দিরেই নিয়মিত পূজার্চনা করেন তাঁরা। প্রতি অমাবস্যায় মায়ের শিলামুর্তিকে স্নান করানো হয়। অন্যান্য দিন ওই মূর্তি ঢেকে রাখা হয়। ভক্তরা বাইরের মায়ের মূর্তিতে ফুল নিবেদন করেন, পুজো দেন। কালীপজোয় আলাদা মূর্তি গড়া হয় না। ষোড়শ মূর্তিতেই পুজো হয়। বারাকপুরের দীপেন্দ্রনাথ রায় সপরিবারে পুজো দিতে এসে বলেন, ‘‘গুয়াহাটির কামাখ্যা মন্দিরের সঙ্গে কিরীটেশ্বরী মন্দিরের তুলনা করা যায়।” জাগ্রত মায়ের নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো দিলেন তিনি-সহ কয়েক হাজার ভক্ত।