প্রতিবেদন : উৎকণ্ঠার অবসান। ঘরে ফিরলেন নিমতার তমাল। একটানা তীব্র মানসিক চাপ, কখনও বিনিদ্র রাত, কখনও-বা আবার দুঃস্বপ্নের রাত। তালিবান-তাণ্ডবের মধ্যেও মাথা ঠান্ডা রেখে দেশে ফেরার পথ খুঁজছিলেন তমাল ভট্টাচার্য। শেষপর্যন্ত পেয়েও গেলেন।
রবিবার রাতেই আফগানিস্তান থেকে দিল্লি হয়ে কলকাতা ফিরে এলেন এই যুবক। সঙ্গে কলকাতারই আরও এক বাঙালি, লেকভিউ রোডের বাসিন্দা। আঁতকে ওঠারই কথা। সশস্ত্র তালিবান জঙ্গি ছেলের পিঠে হাত রেখে কথা বলছেন, এমন ছবি দেখলে কোন বাবা-মা না শিউরে উঠবেন আতঙ্কে! তমালেরও এমনই এক ছবি আচমকা চোখে পড়ে যাওয়ায় চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তমালের বাবা-মা-ও। কিন্তু অসাধারণ ইচ্ছেশক্তি আর মনের জোরে যতটুকু যোগাযোগের সুযোগ মিলেছে, মা-বাবাকে সান্ত্বনা দিয়ে গেছেন তমাল।
আরও পড়ুন : পাট্টা পেয়ে কৃতজ্ঞতা মুখ্যমন্ত্রীকে
ফিরে এসে নিজের অভিজ্ঞতার কথা যা জানিয়েছেন, সেটাও বেশ অবাক করার মতোই। তাঁর সঙ্গে এতটুকু নাকি দুর্ব্যবহার করেননি তালিবানরা। বরং অন্য কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী তাঁর ওপরে বা আটকে-পড়া অন্য ভারতীয়দের ওপরে যাতে হামলা না চালায়, তার জন্য সদাসতর্ক নজরদারি চালিয়েছে তালিবানরা। শুধু কি তাই, তালিবানদের ক্রিকেটপ্রেমও অবাক করেছে তমাল এবং অন্যান্য ভারতীয়দের।
আরও পড়ুন :অগ্নিযুগের আলোচনায় বিমল দাশগুপ্ত, বীণা দাস
যে আবাসনে তমালরা থাকতেন, সেখানে নাকি প্রায়ই ব্যাট-বল হাতে দেখা যেত তালিবানদের। ক্রিকেটের নেশায় ডুবে যেতো জঙ্গিদল। ৩৪ বছর বয়সের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার তমাল কারদান আন্তর্জাতিক স্কুলে ফিজিক্স আর কেমিস্ট্রির শিক্ষকতা করবেন বলে এ বছরই মার্চে পাড়ি দিয়েছিলেন কাবুলে। কয়েকমাস যেতে না যেতেই তালিবান-কাণ্ড। কিন্তু তমাল উপলব্ধি করেছিলেন এই ভয়ঙ্কর বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার প্রাথমিক শর্ত নিজেকে স্ট্রেস-ফ্রি রাখা। তারই সুফল পেলেন তমাল। তালিবানদের ডেরা থেকে বেরিয়ে এলেন ঠান্ডা মাথায়। রবিবার দুপুরেই বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে দিল্লি ফিরে আসেন তমাল এবং আফগানিস্তানে আটকে পড়া একদল ভারতীয়। গাজিয়াবাদে নামেন তাঁরা। তারপর রাতের বিমানে দিল্লি থেকে কলকাতা। রাত তখন প্রায় ১১টা। এবং হাসিমুখে স্বগৃহে প্রত্যাবর্তন।