প্রতিবেদন : মানহানির মামলায় গুজরাতের সুরাত আদালত সর্বোচ্চ দু’বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi)। এরপরই চলতি আইন দেখিয়ে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করে দিয়েছেন লোকসভার স্পিকার। ঘটনা ঘিরে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। সামান্য মানহানির মামলাকেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগ উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তবে আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, এখনও রাহুল গান্ধীর সামনে সাংসদ পদ ফেরত পাওয়ার সুযোগ আছে। এই মুহূর্তে তিনি যদি উচ্চতর আদালতে শাস্তির রায়ের উপর স্থগিতাদেশ আদায় করতে পারেন সেক্ষেত্রে সাংসদ পদ ফিরে পেতে বাধা নেই রাহুল গান্ধীর।
আরও পড়ুন: গান্ধীজির ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপালের, নিন্দা
বর্তমান জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, কোনও সাংসদ বা বিধায়ক যদি কোনও মামলায় দু’বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য কারাবাসের সাজা পান সেক্ষেত্রে তাঁর সাংসদ বা বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যায়। শুক্রবার জারি করা লোকসভার স্পিকারের সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রিতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। শনিবার এই ধারার সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে। ৮(৩) ধারার পাশাপাশি আগে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৪) ধারা ছিল। ওই ধারা অনুযায়ী কোনও সাংসদ বা বিধায়ক দোষী সাব্যস্ত হলে তাতে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য তিনমাস সময় পেতেন। কিন্তু ২০১৩ সালে লিলি থমাস বনাম ভারত সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় ছিল, কোনও জনপ্রতিনিধি কোনও অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর যদি ন্যূনতম দু’বছরের সাজা পান তাহলে তিনি অবিলম্বে আইনসভার সদস্য পদ হারাবেন। ঘটনাচক্রে ইউপিএ জমানায় মনমোহন সিং সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে পুরনো ব্যবস্থা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ওই সময় তৎকালীন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের অধ্যাদেশ সর্বসমক্ষে ছিঁড়ে ফেলে সরকারের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। ঘটনাচক্রে সেই আইনেই এখন খারিজ হয়েছে রাহুলের সাংসদ পদ।