প্রতিবেদন : ব্রিটেনের মাটিতে ফের এক নতুন ইতিহাসের সূচনা হল। মার্গারেট থ্যাচার, টেরেসা মে-র পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর আসনে আবারও এক মহিলা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনককে হারিয়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হলেন লিজা ট্রুস (UK- Liz Truss)। মঙ্গলবার শপথ নেবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। বরিস জনসনের মন্ত্রিসভায় বিদেশসচিবের দায়িত্বে ছিলেন লিজা।
চূড়ান্ত পর্বে লিজা-ঋষির লড়াই জমে উঠেছিল। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ পিছিয়ে পড়েছেন ঋষি। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগে ফলাফলটাও যেন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শেষবেলায় আশ্চর্যজনক কিছু হতে পারে, এমনটা আশা করে বুক বেঁধেছিলেন ঋষি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী ফলাফলে কোনও চমক মেলেনি। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী শেষ হাসি হেসেছেন লিজা (UK- Liz Truss)। টোরি সদস্যদের প্রায় ৮১ ৩২৬ ভোটে জনসন মন্ত্রিসভার প্রাক্তন অর্থসচিবকে হারিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় এজেন্সির নিরপেক্ষতার দাবিতে পথে নামল তৃণমূল
এদিন জয়ের খবর মেলার পর লিজা বলেন, কনজারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচিত হয়ে আমি গর্বিত। আমার প্রতি আস্থা রাখায় এবং দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় সকলকে ধন্যবাদ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। নির্বাচনী প্রচারে প্রচারে কর ছাড়ের যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তিনি রক্ষা করবেন। একই সঙ্গে ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নেও সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে পরাজয় মেনে নিয়ে ঋষি বলছেন, তিনি দেশের নতুন কনজারভেটিভ সরকারকে সব ধরনের সহায়তা করবেন। নির্বাচনী ফল জানার পর দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিতে গিয়ে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রশংসা করেন লিজা। তিনি বলেন, ব্রেক্সিট সম্পন্ন করেছেন বরিস। করোনার টিকা বাজারে এনে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি। এমনকী, ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধেও কড়া অবস্থান নিয়েছেন। একইসঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ব্রিটেনের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে তিনি বদ্ধপরিকর।
পুরো নাম মেরি এলিজাবেথ ট্রুস। ১৯৭৫ সালের ২৬ জুলাই ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন্ম। বাবা জন কেনেথ এবং মা প্রিসিলা মেরি। বাবা ছিলেন লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের অধ্যাপক। মা-ও ছিলেন শিক্ষক। লিজার বয়স যখন চার বছর তখন তাঁর পরিবার চলে আসে স্কটল্যান্ডে। অক্সফোর্ডের মেরটন কলেজে পড়াশোনা করেছেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির লিবারেল ডেমোক্র্যাটসের প্রেসিডেন্ট এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাট যুব ও ছাত্রদের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি। তবে ১৯৯৬ সালে স্নাতক হওয়ার পর যোগ দেন কনজারভেটিভ পার্টিতে।