নিজের রোজগারের টাকা দিয়ে সম্পত্তি বাড়িয়েছেন স্বামী। স্ত্রী গৃহবধূ (housewife)। তার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয় চেন্নাইতে (Chennai)। সম্পত্তি সংক্রান্ত সেই মামলায় মাদ্রাজ হাইকোর্ট (Madras Highcourt) জানিয়েছে ঘর সামনালোর দায়িত্বে থাকা স্ত্রীরও সম্পত্তিতে অবদান সমান, অধিকারও সমান। স্ত্রী সংসার, সন্তান সামলাচ্ছেন বলে স্বামী নিশ্চিন্তে উপার্জন করতে পারছেন। এই অবস্থায় কোনমতেই স্ত্রীর অবদান উপেক্ষা করা যাবে না। ওই মামলায় স্ত্রীকে ৫০ শতাংশ সম্পত্তির অধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এই মর্মে বিচারপতি কৃষ্ণান রামস্বামী বলেছেন, আইন অনুযায়ী, কারও অবদান অমান্য করতে পারে না আদালত।
আরও পড়ুন-প্রয়াত ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র বাপিদা
প্রসঙ্গত এই বিষয়ে কান্নাইয়ান নাইডু নামে এক ব্যক্তি ২০০২ সালে একটি মামলা করেন। তিনি বলেন, তাঁর সম্পত্তি দখল করতে চাইছেন তাঁর স্ত্রী। তিনি বিদেশে কর্মরত ছিলেন। সেই টাকা দিয়ে তাঁরই নামে সম্পত্তি কিনেছিলেন তাঁর স্ত্রী। স্ত্রী বিপথে চালিত হচ্ছে বলে আদালতে দাবি করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন-আদিপুরুষ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের
এই অবস্থায় স্ত্রীর বক্তব্য ছিল, স্বামী বিদেশে থাকাকালীন সন্তান ও সংসারের সব দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য চাকরির সুযোগ ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। তার বাপের বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে স্বামীকে বিদেশে যাওয়ার খরচ দিয়েছিলেন তিনি। তিনি সেলাই করে টিউশন পড়িয়ে টাকা রোজগার করতেন। নিম্ন আদালতে যদিও মামলার রায় গিয়েছিল স্বামীর পক্ষেই।
আরও পড়ুন-গাড়ি ব্যবহারে ও বাইক মিছিলে নিষেধাজ্ঞা, নির্দেশিকা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের
ইতিমধ্যেই মামলাকারীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর দুই সন্তান হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সম্পত্তির উত্তরাধিকার চেয়ে। হাইকোর্ট সব শুনে স্ত্রীকে ৫০ শতাংশ ভাগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেই মামলাতে আদালত জানায় সরাসরি টাকা দিয়ে সাহায্য না করলেও বাড়ির সব কাজ করে, স্বামীকে সাহায্য করেছেন স্ত্রী। সংসার সামলানো ৮ ঘণ্টার কাজ নয়, ২৪ ঘণ্টার কাজ।
আরও পড়ুন-জাতীয়তাবাদী বঙ্কিম বঙ্কিমী জাতীয়তাবাদ
মাদ্রাজ হাইকোর্ট জানায়, ‘সন্তান ও পরিবারের দায়িত্ব ৮ ঘণ্টার চাকরির মতো নয়। এটা ২৪ ঘণ্টার কাজ। স্বামী বিদেশে ৮ ঘণ্টার চাকরি করে টাকা পাঠাতেন। তিনি ওই চাকরি করতে পারতেন, কারণ ২৪ ঘণ্টা ধরে সংসারের দায়িত্ব নিতেন স্ত্রী। সে কারণেই ওই সম্পত্তি কেনা সম্ভব হয়েছিল। যখন স্ত্রী সব কাজ ছেড়ে পুরো জীবনটা সংসারের কাজে ব্যয় করেন, তখন তাঁরও কিছু প্রাপ্য় থাকে।’