সুমন তালুকদার, বসিরহাট: একদিকে বিরোধীদের লাগাতার কুৎসা ও সমালোচনা, অন্যদিকে কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণ। কিছুই রুখতে পারছে রাজ্যের সাফল্যকে। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পকে বাধ্যত স্বীকৃতি দিতে হচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। এবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতরের স্বীকৃতি আদায় করল দুটি জেলা হাসপাতাল। ‘লক্ষ্য’ প্রকল্পে কোয়ালিটি সার্টিফিকেশন–এর জন্য হল পুরস্কৃত। আজ বসিরহাট জেলা হাসপাতালের কথা।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় সমাজসেবায় আদিবাসী তরুণী
এগিয়ে শতাংশে : শতাংশের হিসেবে বেশি নম্বর পেয়ে প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল, দ্বিতীয় উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট জেলা হাসপাতাল। আগেও গ্রামীণ হাসপাতালে পরিকাঠামো বিষয়ক মাপকাঠিতে দেশের সেরা হয়েছিল বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার টাকি গ্রামীণ হাসপাতাল। এবার প্রসূতি বিভাগের পরিকাঠামো ও পরিষেবার মানের নিরিখে দ্বিতীয় স্থান পেল বসিরহাট জেলা হাসপাতাল। ন্যূনতম ৮৫ শতাংশ যোগ্যতামানে লেবার রুম পরিকাঠামোর জন্য ৯০ শতাংশ ও মেটারনিটি ওটি–র জন্য ৮৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছে।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েতে অনলাইনে বাড়ির নকশা
দুর্দান্ত পরিকাঠামো : রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের
সহায়তায় এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে সার্বিকভাগে গোটা বসিরহাট জেলা হাসপাতালের তো বটেই, বিশেষ করে প্রসূতি বিভাগের পরিকাঠামো রাজ্যের যে কোনও বড় হাসপাতালের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। সুপার এবং প্রশাসনিক কর্তারা সবসময় এদিকে নজর রাখেন।
দক্ষ চিকিৎসক, নার্স : মেটারনিটি ওয়ার্ডে ছয়জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। রয়েছেন ৪০ জন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স। হাসপাতালে সবমিলিয়ে রয়েছেন ৭৬ জন চিকিৎসক ও ১৭১ জন স্টাফ নার্স। যাঁরা মেটারনিটি বিভাগ ছাড়াও মেটারনিটি ওটি এবং লেবাররুমেও রোগীদের সেবা করেন। দিনে–রাতে চিকিৎসক ও নার্সদের অক্লান্ত পরিষেবা এই সাফল্যের সোপান।
আরও পড়ুন-বেআইনি পার্কিং রুখতে কঠোর পুলিশ
আধুনিক পরিষেবা : গর্ভবতী মায়েরা যে পরিস্থিতিতেই আসুন, তা সামাল দেওয়ার যথাযোগ্য ব্যবস্থা রয়েছে এই হাসপাতালে। বিশেষ পরিস্থিতিতে গর্ভবতী মায়েদের জন্য রয়েছে এইচডিইউ। ওয়ার্ডের মধ্যেই আছে আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবস্থা। সদ্যোজাতদের জন্য আছে এসএনসিইউ, পিকু ইত্যাদি।
আরও পড়ুন-ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকেই ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, অ্যাডিনো নিয়ে বিজেপির রাজনীতি
চিকিৎসক ও কর্মী সমন্বয় : এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে দক্ষ চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের চমৎকার সমন্বয়। জরুরি ক্ষেত্রে দ্রুত সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। বসিরহাট জেলা হাসপাতাল সুপার ডাঃ রঞ্জন রায় জানালেন, ২০২২–এর ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এসেছিল। তাদের বিচারেই প্রসূতি বিভাগের এই সাফল্য। এর পিছনে রয়েছে চিকিৎসক, নার্স, হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের কর্মী এবং কোয়ালিটি সার্কেলের সদস্যদের অবদান। তিনি আরও জানান, এই বসিরহাট জেলা হাসপাতালটি বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায়। স্থানীয় চিকিৎসক বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় কাজ করে যাচ্ছি। সমালোচকদের সমালোচনা এবং কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও কেন্দ্র বারবার বাধ্য হচ্ছে রাজ্যের প্রকল্পকে স্বীকৃতি দিতে।