মণিপুর নিয়ে মৌন মোদি, তীব্র কটাক্ষ বিরোধীদের

জ্বলছে বিজেপি-রাজ্য: শতাধিক প্রাণহানি, ঘরছাড়া বহু

Must read

নয়াদিল্লি: বিরোধী-শাসিত কোনও রাজ্য হলে এতক্ষণে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি, রাজনৈতিক কুৎসা, অসংখ্য কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়ে দোষারোপ করত কেন্দ্র। কিন্তু বিজেপি-শাসিত মণিপুরের (More violence in Manipur) সাম্প্রতিক অরাজকতায় যেহেতু নিজেদের ব্যর্থতাই বেআব্রু হয়ে গিয়েছে, তাই সন্তর্পণে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে নিশ্চুপ মোদি সরকার (Modi Government)। সদামুখর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কোনও বাণী শোনা যায়নি অগ্নিগর্ভ মণিপুর নিয়ে, যেখানে দেড়মাস ধরে জনজাতি সংঘর্ষ চলছে, প্রায় ১৫০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ ঘরছাড়া। অমিত শাহ গিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি, কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকার কার্যত নাস্তানাবুদ হচ্ছে উত্তর-পূর্বের এই ছোট্ট রাজ্যে শান্তি ফেরাতে। ঢাক পিটিয়ে রবিবার আরও একটি ‘মন কি বাত’ করলেন মোদি। কিন্তু মণিপুর (More violence in Manipur) নিয়ে তাঁর ‘মন কি বাত’ শোনা গেল না। বিজেপি-শাসিত রাজ্য জ্বলছে, অথচ একটি শব্দও খরচ করলেন না প্রধানমন্ত্রী। এই নিয়ে মোদিকে আক্রমণ করেছে বিরোধী দলগুলি। বিজেপি সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে যাতে হইচই না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও এদিনও কংগ্রেসকে টার্গেট করতে ভুললেন না প্রধানমন্ত্রী। জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসের সমালোচনা করলেন। ২৫ জুন ঘোষিত হয়েছিল জরুরি অবস্থা। এদিনের মন কি বাত অনুষ্ঠানে ওই দিনটিকে গণতন্ত্রের কালো দিন বলে মন্তব্য করলেন তিনি। অতীতের জরুরি অবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক আক্রমণে তাঁর উৎসাহ দেখা গেলেও মৌনীবাবা হয়ে রইলেন ভারতের একটি রাজ্যের বর্তমান অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সম্পর্কে। মণিপুর প্রসঙ্গে কেন্দ্রের মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি ট্যুইট করেছেন, আদিম মানব সমাজে মানুষের জীবন ছিল একাকী, নোংরা, দরিদ্র, নিষ্ঠুর এবং সংক্ষিপ্ত। মণিপুরের পরিস্থিতি এখন তার থেকে ভিন্ন নয়। কেন্দ্রীয় সরকার সেখানে মানুষ ও তাদের সম্পত্তি রক্ষা করতে চরমভাবে ব্যর্থ এবং অবহেলিত। এটা দেশের লজ্জা। মোদির নীরবতাকে কটাক্ষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার বলেন, ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি কথা-বলা প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে নীরব কেন? এটা কি সত্যি যে ভোটের সময় কিছু আদিবাসীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল বিজেপি। আদিবাসীদের হত্যা করতে অশান্তি সৃষ্টিকারীদের কি বন্দুক লুঠ করায় ইন্ধন জুগিয়েছে সরকার? প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রশ্নের জবাব দিতেই হবে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ ট্যুইটে লেখেন, ৪৫ দিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন অশান্তির পর অবশেষে সেখানে শান্তি ফেরানোর আহ্বান জানাল আরএসএস। তাদের বিভাজন এবং মেরুকরণের নীতি উত্তর-পূর্বের স্বাভাবিক স্থিতি নষ্ট করে দিচ্ছে। যার উদাহরণ মণিপুরের অশান্তি। তবে তাদের খ্যাতনামা প্রাক্তন প্রচারক যিনি রাজ্যে এবং কেন্দ্রের শাসনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেন সেই প্রধানমন্ত্রীর মুখে কোনও কথা নেই। কখন প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে কিছু বলবেন বা করবেন? তিনি শুধুই প্রচারমন্ত্রী হয়ে উঠেছেন, প্রধানমন্ত্রী নন। মন কি বাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আরও একটি মন কি বাত, তবে মণিপুর নিয়ে মৌন।” তাঁর অভিযোগ, মন কি বাতে ভারতের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে মণিপুরের বিপর্যয় নিয়ে তাঁর অবস্থান কী?

আরও পড়ুন- উধাও করমণ্ডলের চালক, রেলের ভূমিকায় ধোঁয়াশায় পড়েছে পরিবার

Latest article