অনির্বাণ দাস: ওড়িশা এফসিকে পরিষ্কার ২-০ গোলে হারিয়ে আইএসএলের সেমিফাইনালে মোহনবাগান। শনিবার রাতের যুবভারতী স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিল প্রায় ৩৫ হাজার সবুজ-মেরুন সমর্থক। ম্যাচ শেষে তাঁদের মুখে হাজার ওয়াটের আলো। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নটা যে এদিন উসকে দিলেন হুগো বুমোস, দিমিত্রি পেত্রাতোসরা।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লাগামহীন কুৎসা, আইনি জালে কং-নেতা
মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ জুয়ান ফেরান্দোর উপর সমর্থকদের একাংশের অভিযোগ, তিনি কোনও জেনুইন স্ট্রাইকার ছাড়াই দলকে খেলাচ্ছেন। তবে জুয়ানের সৌভাগ্য, তিনি বুমোস ও দিমিত্রির মতো দু’জন বিদেশিকে পেয়েছেন। যাঁরা নিজেদের দিনে একটা-দুটো মুভেই ম্যাচে ফারাক গড়ে দিতে পারেন। এদিনও সেটাই হল। ঘরের মাঠে খেলা হলেও, মোহনবাগান শুরুটা করেছিল বাড়তি সতর্কতার সঙ্গে। প্রথম পনেরো মিনিট তো চলে গেল প্রতিপক্ষকে মেপে নিতেই। তবে ১৬ মিনিটের মাথায় দিমিত্রির ফ্রি-কিকে মাথা ছুঁইয়ে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন কার্ল ম্যাকহিউ। কোনওরকমে কর্নারের বিনিময়ে দলকে পতনের হাত থেকে বাঁচান ওড়িশার গোলকিপার অমরিন্দর সিং। সেই শুরু। এর পর থেকেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন জুয়ানের ফুটবলাররা।
আরও পড়ুন-শ্রদ্ধায়-স্মরণে ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়
৩৬ মিনিটে বুমোসের গোল। এবার দিমিত্রির জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে বাঁচিয়েছিলেন অমরিন্দর। কিন্তু সেই কর্নার থেকেই গোল। দিমিত্রির নেওয়া কর্নার ব্যাক হিল করেছিলেন মনবীর সিং। বল বিপন্মুক্ত করতে পারেনি ওড়িশা রক্ষণ। ফাঁকায় দাঁড়ানো বুমোস বাঁপায়ের শটে বল জালে জড়িয়ে দেন। বিরতির আগে ওড়িশার সুযোগ বলতে গেলে একটাই। একা বিশাল কাইথকে পেয়েও বল বারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন দিয়েগো মৌরিসিও।
আরও পড়ুন-রাজ্যে রাজ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার থাবা, আক্রান্ত বড়রাও, ওষুধে সতর্কতা
বিরতির পর শুরুটা তেড়েফুঁড়ে করেছিল ওড়িশা। সেই সময় টানা মিনিট দশেক সবুজ-মেরুন রক্ষণকে চাপে রেখে গোটা কয়েক কর্নার আদায়ও করে নিয়েছিল। তবে প্রীতম-শুভাশিসরা সতর্ক থাকায় কোনও বিপদ ঘটেনি। পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে অন্তত দু’বার গোলের মুখ খুলে ফেলেছিল মোহনবাগানও। কিন্তু দু’বারই অবিশ্বাস্য ভাবে সুযোগ হাতছাড়া করেন লিস্টন কোলাসো।
তবে ৫৮ মিনিটে চমৎকার একটি আক্রমণ থেকে গোল করে মোহনবাগানের জয় নিশ্চিত করে দেন দিমিত্রি। মাঝমাঠে বিপক্ষের এক ফুটবলারের পা থেকে বল ছিনিয়ে নেন ম্যাকহিউ। এরপর সেই বল বাড়িয়ে দেন বুমোসকে। ডানদিক দিয়ে তীব্র গতিতে ওড়িশার বক্সে ঢুকে পড়েন বুমোস। তাঁর বাড়ানো ক্রস থেকে বল পেয়ে জোরালো শটে গোল করেন দিমিত্রি।
আরও পড়ুন-শুধু আন্তর্জাতিক পুরস্কার নয়, বাংলার পর্যটন দেশে মডেল
তবে এমন জয়ের দিনেও জোড়া চোটে চাপে সবুজ-মেরুন শিবির। খেলা শুরু হওয়ায় দশ মিনিটের মধ্যেই গোড়ালিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন আশিক কুরুনিয়ান। এর পর ৬১ মিনিটে মাথায় গুরুতর চোট পান গোলকিপার কাইথ। মাঠেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। ছুটে আসে মেডিক্যাল টিম। শেষ পর্যন্ত কাইথ উঠে দাঁড়ালেও কোনও ঝুঁকি না নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেমিফাইনালে আশিক ও কাইথ, দু’জনেরই খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ইস্টবেঙ্গল আইএসএল শেষ করেছে ১০ নম্বরে। কলকাতার আরেক প্রধান মহামেডান স্পোর্টিংও আই লিগে ধুঁকছে। এই পরিস্থিতিতে বঙ্গ ফুটবলকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে মোহনবাগান।