প্রতিবেদন : প্রথম পর্বের সেমিফাইনালে হায়দরাবাদকে তাদের মাঠে রুখে দিয়ে ম্যাচ অমীমাংসিত রেখে ফিরছে মোহনবাগান। খেলার ফল গোলশূন্য। তবে মোহনবাগান গোলে বিশাল কাইথ না থাকলে বিপক্ষের ডেরা থেকে খালি হাতে ফিরতে হত সবুজ-মেরুনকে। অ্যাওয়ে ম্যাচ ড্র রেখে ফেরায় সুবিধাজনক জায়গায় থেকে সোমবার যুবভারতীতে ঘরের মাঠে ফিরতি পর্বের সেমিফাইনাল খেলতে নামবে জুয়ান ফেরান্দোর দল। সেদিনই ঠিক হবে ১৮ মার্চ গোয়ায় আইএসএল ফাইনালের টিকিট পাবে কোন দল।
আরও পড়ুন-খোয়াজার সেঞ্চুরি, বড় রানের দিকে অস্ট্রেলিয়া
মোহনবাগান এদিন প্রতিআক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলে। কোচ জুয়ানের স্ট্র্যাটেজিও বোধগম্য ছিল না। খুব সাদামাটা ফুটবল। তবু হায়দরাবাদের দাপটের মধ্যেও মোহনবাগানই ম্যাচের সহজতম সুযোগ পেয়েছিল। শুরু থেকে মোহনবাগান ডিফেন্সে একের পর এক আক্রমণের ঢেউ তুলে আনে হায়দরাবাদ। হায়দরাবাদ মোহনবাগানের ডান দিকটাই টার্গেট করেছিল আক্রমণের জন্য। প্রথম ৩০ মিনিট সবুজ-মেরুন রক্ষণ কার্যত কেঁপে গিয়েছিল। ১০ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ পেয়ে যায় হায়দরাবাদ। কিন্তু মোহনবাগানের পরিত্রাতা হয়ে দাঁড়ান এবারের লিগে গোল্ডেন গ্লাভস জয়ী গোলকিপার কাইথ। হোলিচরণ নার্জারির সেন্টার থেকে শক্তিশালী হেড করেন তাদের অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড জোয়েল চিয়ানিজ।
আরও পড়ুন-মিডিয়ার প্রচারে কান নয়, বাড়ি বাড়ি যান, শ্রমিকভাইদের উদ্দেশে বললেন ঋতব্রত
ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত সেভ করেন কাইথ। এর পরও মুহুর্মুহু আক্রমণে গোলমুখ খুলে ফেলেছিল হায়দরাবাদ। জেভিয়ার সিভেরিও, বোরহা হেরেরাও গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। কিন্তু কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে সবুজ-মেরুন রক্ষণ। একাধিক ক্ষেত্রে তিন কাঠির নিচে দাঁড়িয়ে দলের পতনরোধ করেন কাইথ। রক্ষণে ভাল খেলেন স্লাভকো। হায়দরাবাদের দাপটের মধ্যেই নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে মোহনবাগান। ৩৮ মিনিটে সহজতম সুযোগটা পায় জুয়ানের দল। দিমিত্রি পেত্রাতোসের সেন্টার শুভাশিস বোস দুর্দান্ত দক্ষতায় নামিয়ে দেন। কিন্তু উপরে উঠে আসা প্রীতম কোটালের ডান পায়ের শট ক্রসবারে লাগে। নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে মোহনবাগান।
আরও পড়ুন-যে নামে কেন্দ্রের আপত্তি, তাঁকেই বড় দায়িত্ব দিলেন প্রধান বিচারপতি
প্রথমার্ধের ভুল শুধরে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে পরিকল্পিত ফুটবল খেলার চেষ্টা করে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। দিমিত্রি, আশিস রাইয়ের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। তার মধ্যেই প্রতিআক্রমণে প্রায় গোল তুলে নিয়েছিল হায়দরাবাদ। বক্সের বাইরে থেকে মহম্মদ ইয়াসিরের বাঁ-পায়ের জোরালো শট মোহনবাগান গোলকিপারকে পরাস্ত করে পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। ৬১ মিনিটে দুর্দান্ত একটি আক্রমণ তুলে এনে গোলের লকগেট খুলে ফেলে মোহনবাগান। কিন্তু মনবীর সিংয়ের ভুলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করে তারা। ডানদিকে বল পাওয়া মনবীর বক্সের মধ্যে ঢুকে ফাঁকায় থাকা বুমোস বা দিমিত্রিকে পাস বাড়াননি।
আরও পড়ুন-নিকৃষ্টতম স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায় ভারত, আন্তর্জাতিক সমীক্ষার রিপোর্ট
হায়দরাবাদের ঘরের মাঠে এদিন শেষ ম্যাচ ছিল। জিতে কলকাতায় ফিরতি সেমিফাইনালের আগে এগিয়ে থাকতে চেয়েছিল ম্যানুয়েল মারকুয়েজ রোকার দল। পুরো ফিট না থাকলেও ৬১ মিনিটে দলের সেরা বিদেশি স্ট্রাইকার বার্থলোমিউ ওগবেচেকে নামিয়ে দিয়েছিলেন হায়দরাবাদ কোচ। এর আগে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতি ম্যাচেই গোল করেছেন নাইজেরিয়ান। কিন্তু ম্যাচের বাকি সময়ে আইএসএলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারকে আটকে দিয়ে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ম্যাচ অমীমাংসিত রেখে ফিরছে মোহনবাগান।
সবুজ-মেরুনের স্প্যানিশ কোচ নিষ্প্রভ বুমোস ও পুইতিয়াকে তুলে ফেডরিকো গালেগো এবং হামতেকে নামিয়েছিলেন। কিন্তু অ্যাওয়ে ম্যাচে অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হয়ে ঝুঁকি নিতে চাননি জুয়ান।