নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : আদানি ইস্যুতে আন্দোলন জারি রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সকালে সংসদের সভা মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর ইডি, সিবিআই এবং অর্থমন্ত্রকের দফতরে গিয়ে এই ইস্যুতে সাংসদদের লেখা চিঠি এবং ‘অ্যারেস্ট আদানি’ লেখা টুপি দিয়ে আসে তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদল। তাঁদের দাবি, গৌতম আদানিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। বৃহস্পতিবার সভা শুরু হতেই উভয়কক্ষে আদানি নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করে বিরোধীরা। ফলে উভয়কক্ষই দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন-মনরেগাতে বাংলার বকেয়া, ক্ষোভ তৃণমূলের
অর্থমন্ত্রক, ইডি, সিবিআই দফতরে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা : সংসদ ভবনের দলীয় কার্যালয়ে বৈঠকের পর সিবিআই, ইডি এবং অর্থমন্ত্রকের দফতরে রওনা দেয় তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদল। ইডি এবং সিবিআই দফতরে চিঠি জমা দিতে যাওয়া প্রতিনিধিদলে ছিলেন দোলা সেন, শান্তা ছেত্রী, অপরূপা পোদ্দার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অসিত মাল। ইডি দফতরের ভিতরে ঢুকতে গেলে তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে চূড়ান্ত অসৌজন্য দেখানো হয়। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সাংসদদের তীব্র বচসা হয়। ইডি দফতরে ‘অ্যারেস্ট আদানি’ লেখা টুপি এবং চিঠি জমা দেন তৃণমূল সাংসদরা। যদিও কোনও প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়নি বলে অভিযোগ দলীয় প্রতিনিধিদের। অন্যদিকে সিবিআই দফতরে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে সেখানে চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির সদর দফতর থেকে বেরিয়ে সাংসদ দোলা সেন বলেন, এলআইসি এবং এসবিআইকে ডুবিয়ে দিয়ে আদানিকে বাঁচাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। আদানিকে গ্রেফতারের দাবি জানাতে আমরা ইডি দফতরে এসেছিলাম। আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির তদন্ত এবং আদানিকে গ্রেফতার করে দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে, এটাই আমাদের দাবি। এদিকে অর্থমন্ত্রকে যাওয়া তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদলে ছিলেন শান্তনু সেন, আবিররঞ্জন বিশ্বাস, প্রতিমা মণ্ডল, সুনীল মণ্ডল, আবু তাহের, মৌসম বেনজির নুর, সুস্মিতা দেব এবং খলিলুর রহমান। অর্থমন্ত্রকের দফতরের তরফে তৃণমূলের চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়।
আরও পড়ুন-ফের এক বড় রিপোর্ট ফাঁস হবে, দাবি হিন্ডেনবার্গের
চিঠি এবং টুপি দেওয়ার পর বিজয় চকে সাংবাদিক বৈঠক : তিন দফতরে চিঠি এবং টুপি জমা দেওয়ার পর সংসদ ভবন সংলগ্ন বিজয় চকে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং লোকসভার প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। সাংবাদিক সম্মেলনে সৌগত রায় বলেন, কেন্দ্রের শাসক দল চায় না সংসদে আদানি প্রসঙ্গ আসুক। আদানি প্রসঙ্গে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট, এলআইসির ৩৬,০০০ কোটি এবং স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ২৭,০০০ কোটি টাকা তছরুপ নিয়েও আলোচনা চাই আমরা। সরকার সেটা চায় না বলেই প্রথম দিন থেকেই তারা সংসদ চলতে দিচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, আদানি কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সঙ্কল্পবদ্ধ তৃণমূল। মেহুল চোকসি রক্ষাকবচ পেয়েছে কেন্দ্রের থেকে, এটাই বিজেপির আসল চেহারা।
আরও পড়ুন-এক বছরেই পাল্টে গিয়েছে তৃণমূলের পুরসভার ভোল
ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, একটানা ১০ দিন স্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সংসদ চলতে দিল না বিজেপি। কোনও তদন্ত, আলোচনা বা বিষয়টি নিয়ে চর্চা করতে চায় না তারা। সেই কারণেই পরিকল্পনা করে সংসদ অচল করে দেওয়া হল।