প্রতিবেদন : গোড়াতেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম দু’দফায় ভোটের হারবৃদ্ধি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় রীতিমতো সংশয় প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এবারে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। জবাব চাওয়া হল কয়েকটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের। ৩২ পাতার এই চিঠি আগাগোড়াই ভরা সুনির্দিষ্ট তথ্যে। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপকে ঘিরে একরাশ সন্দেহ। তৃণমূল জবাব চেয়েছে মূলত ৩টি প্রশ্নের। জানিয়েছে দাবিও।
আরও পড়ুন-বন্যায় ভাসছে ব্রাজিল, মৃত ৮৫, গৃহহীন প্রায় দেড় লাখ
প্রথমত, লোকসভাকেন্দ্র ভিত্তিক ভোটদাতার সংখ্যা কত, তা প্রকাশ্যে আনতে হবে কমিশনকে। দ্বিতীয়ত, ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন কত বৈধ ভোটার, সুস্পষ্টভাবে জানাতে হবে সেই তথ্যও। এখানেই শেষ নয়, তথ্য দাবি করা হয়েছে ইভিএম ব্যবহারেরও। অর্থাৎ, প্রথম ও দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা অনুপাতে কত ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল, সে তথ্যও অবিলম্বে জানানোর দাবি রেখেছে তৃণমূল। লক্ষণীয়, গত বুধবারই জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদের নির্বাচনী সভায় এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, সব বিরোধী দলকে বলব, এদিকে নজর দিন। নিজের নিজের রাজ্যে ইভিএমের হিসেব রাখুন। বিজেপি যেখানেই কম ভোট পাচ্ছে, সেখানেই রাতের অন্ধকারে তালা ভেঙে ঢুকছে ওরা। বদলে দিচ্ছে ইভিএম। জননেত্রীর অভিযোগ, ১৯ লক্ষ ইভিএম এখনও মিসিং। আমরা অনেকবার খোঁজ করেছি। ভুয়ো ইভিএম অন্য জায়গা থেকে এনে ঢুকিয়ে দিচ্ছে ওরা। যেখানে বিজেপির ভোট কম, সেখানেই বাড়তি মেশিন ঢোকাচ্ছে ওরা।
আরও পড়ুন-অনলাইন ক্লাস এবার গরম ও পুজোর ছুটিতেও
এবারে তৃতীয় দফা ভোটের আগেই সোমবার ভোটের শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে দলের সন্দেহ-সংশয় কমিশনে নথিভুক্ত করে রাখল তৃণমূল। সংশয়ের কারণটা আসলে খুবই যুক্তিসঙ্গত। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় সারাদেশে মোট কত শতাংশ ভোট পড়েছে, সেই হিসেব কমিশন প্রকাশ করে গত মঙ্গলবার। ১৯ এপ্রিল প্রথম পর্বের নির্বাচনে বাংলায় ভোটগ্রহণ হয় ৩টি কেন্দ্রে। পরদিন অর্থাৎ ২০ তারিখে কমিশনের তথ্যের দাবি, দেশে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ। আবার ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের পর কমিশন জানায়, দেশে গড় ভোটের অঙ্ক ৬০.৯৬ শতাংশ। ওইদিনও বাংলায় ভোট হয়েছিল ৩টি কেন্দ্রে। কিন্তু অবাক কাণ্ড, এরপরেই আগের বিবৃতি বদল করে পরে আবার নতুন বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রথম দফায় সারাদেশে ভোট পড়েছে ৬৬.১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায় দেশে ভোট পড়েছে ৬৬.৭১ শতাংশ। অর্থাৎ কমিশনের দেওয়া প্রথম হিসেব থেকে ৬ শতাংশ ভোট বেড়ে গেল দ্বিতীয় হিসেবে। রহস্যটা এখানেই। এখানেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
লক্ষণীয়, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের চিঠি দিয়ে ভোটের শতাংশ বৃদ্ধির হারের বিষয়ে কমিশনের তথ্যে সংশয় প্রকাশ করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। তাঁর কথায়, নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।