শুভেন্দু ও তৎকাল ভুঁইফোঁড়দের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার আদি নেতৃত্বের বিদ্রোহে-বিপাকে নন্দীগ্রাম বিজেপি, শুরু গণইস্তফা

নন্দীগ্রাম তো বটেই, গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে বিজেপিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে৷ জল গড়িয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরেও

Must read

প্রতিবেদন : নন্দীগ্রামে বিজেপির বিদ্রোহ ও গণইস্তফা। শুভেন্দু অধিকারীর উপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দলের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন একাধিক দাপুটে আদি বিজেপি নেতা ও কর্মী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির নেতাদের গণইস্তফায় প্রবল চাপে পড়েছে বিজেপি। নন্দীগ্রাম তো বটেই, গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে বিজেপিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে৷ জল গড়িয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরেও।

আরও পড়ুন-সোমবার আবহাওয়া বদল মঙ্গলেই সুন্দরবনে হামলা!

এই আদি বিজেপি নেতা-কর্মীরা সাংবাদিক বৈঠক করে শনিবার স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, নব্য বিজেপি নেতা ও কর্মীদের তীব্র মানসিক অত্যাচার-অসম্মান-অপমান ও বঞ্চনার কারণে দলীয় সব পদ থেকে গণইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন। বিশেষ করে দলবদলু শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর আদি বিজেপি নেতা-কর্মীরা চূড়ান্ত অপমানিত-লাঞ্ছিত হয়েছেন, হচ্ছেন। আদি বিজেপি নেতা বটকৃষ্ণ দাস, জয়দেব দাসদের বক্তব্য, শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে বিজেপির সব নিয়ম-নীতি ভেঙে দিয়ে নিজের মর্জিমতো তুঘলকি কায়দায় জেলায় দল চালাচ্ছেন বা বলা ভাল, দলকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন তাতে সামনে বিজেপির ভরাডুবি নিশ্চিত। এই ভয়ঙ্কর মানসিক ও রাজনৈতিক অপমান-লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরেই দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করছেন। কিন্তু এরপর তাঁরা কী করবেন সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি। আগামী ৩১ অক্টোবরের পর তাঁদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন। ঘটনায় হতভম্ব শুভেন্দু এখন কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণে পদ ছাড়লেন প্রায় ১৫ জন আদি বিজেপি নেতা।

আরও পড়ুন-ঘোমটার আড়ালে কেন সিপিএম! গোয়েবেলসীয় কায়দায় সেই মিথ্যাচার

শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি দল থেকে পদত্যাগ করে অব্যাহতি চাইলেন নন্দীগ্রামের সেই দাপুটে বিজেপি নেতাদের অন্যতম জয়দেব দাস। তিনি শুধু নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা নন, তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য এবং চণ্ডীপুর বিধানসভার অবজারভারও ছিলেন। এমন আরও এক দাপুটে বিজেপি নেতা হলেন বটকৃষ্ণ দাস। তিনি বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি বিজেপি যুব মোর্চার কাঁথি সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বে ছিলেন। এর বাইরেও এই বিক্ষুব্ধদের মধ্যে আছেন জেলা কমিটির সদস্য তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা শিবশঙ্কর সাহু। তিনিও দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করছেন। এঁদের পথে ধরেই আরও একাধিক বিজেপি মণ্ডল সভাপতি এবং বিজেপি নেতৃত্ব পদত্যাগ করেছেন। একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি নেতার পদক্ষেপের ফলে কার্যত দিশাহারা অবস্থা নন্দীগ্রাম বিজেপির। আসলে এই বিক্ষুব্ধ আদি বিজেপি নেতারা শুভেন্দু ও তৎকাল বিজেপি নেতাদের কোনওমতেই মেনে নিতে পারছেন না। অল্পদিন বিজেপিতে এসে আদি বিজেপি নেতা থেকে কর্মী-সর্মথকদের উপর বিরোধী নেতা ও তাঁর তৎকাল অনুগামীরা ছড়ি ঘোড়াচ্ছেন বলে আদি বিজেপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ। সেই নতুন বিজেপি নেতাদের দৌরাত্ম্যে এখন কোণঠাসা অবস্থা আদি বিজেপি নেতাদের। সভা-সমিতিতে তাঁরা ডাক পাচ্ছেন না। এভাবেই দলের অন্দরে ইতিমধ্যে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন আদি বিজেপি নেতারা।

আরও পড়ুন-যখন তিনি ডাকাত কালী

আদি বিজেপি নেতারা শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদের অভিযোগ, কঠিন দিনের বিজেপির সৈনিকদের নিয়ে বর্তমান বিজেপি জেলা নেতৃত্বরা একবারও বসেননি। রাজ্য নেতৃত্বকে জানালেও কোনও সুফল মেলেনি। বরং উপরের নেতারা বলছেন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিধানসভা কেন্দ্র হওয়ায় তাঁর কথা ছাড়া আমরা বসতে পারব না। বিক্ষুব্ধদের আরও দাবি, নন্দীগ্রামে কোনও দলীয় শৃঙ্খলা মানা হচ্ছে না। এদিন নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, এটা বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এটুকু বলতে পারি, শুভেন্দু অধিকারী যে রাজনৈতিক দলে থাকবে সেই দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা শান্তিতে থাকতে পারবেন না। ও একাই সব দখল করে রাখতে চায়।

Latest article