আন্তর্জাতিক মঞ্চে খেলাধুলোয় সাফল্য পাচ্ছে ভারত। অলিম্পিক, এশিয়াড, কমনওয়েলথ গেমসে পদকের সংখ্যা বাড়ছে। জাতীয় ক্রীড়াদিবস উপলক্ষে আমরা কথা বলেছিলাম তিন দিকপালের সঙ্গে। দাবায় বাংলার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া, ভারতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক অতনু ভট্টাচার্য, বিশ্বকাপ ও কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী প্রাক্তন জাতীয় তিরন্দাজ দোলা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেদের ভাবনাচিন্তা, অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন।
আরও পড়ুন-সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে এ কী অবস্থান ! সিপিএম নেতাদের নামে মামলা
অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরুক ফুটবল
অতনু ভট্টাচার্য
(প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার)
কিছুটা স্বস্তি নিয়েই জাতীয় ক্রীড়াদিবস নিয়ে কলম ধরছি। গত কয়েকটা দিন ধরে ভারতীয় ফুটবলের উপর দিয়ে যে ঝড়-ঝাপটা বয়ে গেল! ভারতীয় ফুটবলের একজন প্রাক্তন সৈনিক হিসেবে ফিফার নির্বাসন আমাকে দুঃখ দিয়েছিল। সেই নির্বাসন শেষ পর্যন্ত উঠেছে। যেভাবে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন চলছিল, তাতে যে নির্বাসনের খাঁড়া নেমে আসতে পারে, সেটা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এতে শাপে বর হল। অন্ধকার অধ্যায় পিছনে ফেলে এবার ভারতীয় ফুটবল সঠিক পথে এগোবে।
আরও একটা কথা, এখন ভারতীয় ফুটবল দলে হাতেগোনা বাঙালি ফুটবলার থাকে। কিন্তু আমাদের সময় জাতীয় দলে ৮ থেকে ৯ জন বাঙালি দাপিয়ে খেলত। অথচ আজ! আশি বা নব্বইয়ের দশকে কলকাতার তিন প্রধানে এমন কিছু ফুটবলার ছিলেন, যাঁরা ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে ম্যাচের ফল পাল্টে দিতে পারতেন। এঁদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব ফ্যান বেস ছিল। অর্থাৎ প্রিয় দলের পাশাপাশি এঁদের খেলা দেখতেও মাঠে ভিড় জমাতেন দর্শকরা। সুরজিৎ সেনগুপ্ত, সুব্রত ভট্টাচার্য, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, কৃশানু দে—কাকে ছেড়ে কার নাম নেব?
আরও পড়ুন-আলোর কাজে উঠে আসবে ইতিহাস, পুরাণ
আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ফুটবলারদের মধ্যে কলকাতা ময়দানে ক্রাউডপুলার ছিল বাইচুং ভুটিয়া, বাসুদেব মণ্ডল, তুষার রক্ষিত, মেহতাব হোসেনের মতো কয়েকজন। বাইচুং জন্মসূত্রে বাঙালি না হলেও, ওর ফুটবলার হিসেবে বেড়ে ওঠা এবং পরিচিতি কলকাতা ময়দানে। তাই ওর নামটা নিলাম। তারপর থেকে শূন্যতা। এরজন্য আমি অবশ্য এআইএফএফ এবং আইএফএ—দু’পক্ষকেই দায়ী করব। আমাদের সময় নেহরু গোল্ড কাপ চালু হয়েছিল। যেখানে আমরা আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, পোল্যান্ড, রাশিয়া, যুগোশ্লাভিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চিনের মতো শক্তিশালী দেশগুলোর বিরুদ্ধে খেলতাম। এতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি, তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হত। বিদেশি দলের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা বাড়ত। আর এখন তো টুর্নামেন্টই হয় না। একটা আইএসএল। তাও আবার গোটা বছরে মাত্র ১৯-২০টা ম্যাচ খেলে ক্লাবগুলো। আইএসএলের ঠেলায় আই লিগ ধুঁকছে। আগে আমরা গোটা বছরজুড়ে টুর্নামেন্ট খেলতাম। এখন সেসব কোথায়? আমি তো বলব, গোটা দেশে ফুটবলকে ছড়িয়ে দিতে ব্যর্থ ফেডারেশন।
আরও পড়ুন-করোনা টিকার মেধাস্বত্ব চুরির অভিযোগে ফাইজারের বিরুদ্ধে মামলা মডার্নার
আইএফএও নিজেদের দায় এড়াতে পারে না। কলকাতা লিগ টিমটিম করে চলছে। জেলা লিগগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ। অথচ গত কয়েক যুগ ধরে কলকাতা ময়দানে ফুটবলারদের সাপ্লাইলাইন ছিল জেলা ফুটবল। স্কুল ফুটবল তো প্রায় অস্তিত্বহীন। এমন হলে বাঙালি ফুটবলার উঠে আসবে কীভাবে। এখনও যে হাতেগোনা ফুটবল প্রতিভা উঠে আসছে, তাও কিন্তু এই জেলাস্তর থেকেই। তাই বাংলার ফুটবলের পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হলে জেলা এবং স্কুলস্তরের ফুটবলকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই না তৃণমূলস্তর থেকে প্রতিভা উঠে আসবে।
আরও পড়ুন-রাহুল ঘনিষ্ঠদের কটাক্ষ কংগ্রেস সাংসদ মণীশের
আমি আরও একটা কথা বলতে চাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু বাংলার খেলাধুলোর উন্নতির জন্য অনেক চেষ্টা করছেন। গত কয়েক বছরে ফুটবলের পরিকাঠামোয় অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা জেলায় জেলায় বেশ কিছু ফুটবল স্টেডিয়াম পেয়েছি। ভাল মাঠও তৈরি হয়েছে। নৈহাটিতে যে এত সুন্দর একটা ফুটবল মাঠ সমেত স্টেডিয়াম দেখতে পাব, তা আমি তো ভাবতেই পারিনি। মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবগুলোকেও আর্থিক সাহায্য করছেন নিয়মিত।
তবে মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমার বিনীত অনুরোধ, উনি যে অর্থ ক্লাবগুলোকে অনুদান হিসেবে দিচ্ছেন, সেই অর্থ ক্লাবগুলো ফুটবলের উন্নতিতে খরচ করছে কি না, সেদিকেও একটু লক্ষ্য রাখা উচিত। খালি ভাল মাঠ এবং স্টেডিয়াম হলেই তো চলবে না। নতুন প্রজন্মের বাচ্চাগুলোকে মাঠমুখী করতে হবে। তবেই না আঁধার থেকে আলোয় ফিরবে বাংলা এবং ভারতীয় ফুটবল। আর এই দায়িত্ব নিতে হবে ক্লাবগুলোকে। জেলাস্তরে নতুন নতুন প্রতিভা তুলে আনার জন্য অ্যাকাডেমি গড়তে হবে। স্কুলেও পড়াশোনার পাশে খেলাধুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলা ফুটবলের অতীত গৌরব ফিরলে আখেরে লাভবান হবে ভারতীয় ফুটবলও। কারণ বাংলাই দেশকে চিরদিন পথ দেখিয়ে এসেছে। সেটা খেলাধুলোর মাঠ হোক কিংবা রাজনীতি বা অন্য কোনও ক্ষেত্র। জাতীয় ক্রীড়াদিবসে এটাই আমার চাওয়া।
আরও পড়ুন-বিশ্ব ব্যাডমিন্টন: ব্রোঞ্জে থামলেন সাত্ত্বিক ও চিরাগ
স্কুলের পাঠক্রমে
আসুক দাবা
দিব্যেন্দু বড়ুয়া
(বাংলার প্রথম
গ্র্যান্ডমাস্টার)
সত্তর দশকে যখন আমি দাবা খেলা শুরু করি, তখন কথাটা খুব শুনতাম। ‘তাস-দাবা-পাশা, তিন কর্মনাশা’। আজ পরিস্থিতিটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। দাবা এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। এ বছরের জুলাই-অগাস্ট মাসে চেন্নাইয়ে হয়ে গেল দাবা অলিম্পিয়াড। ছেলে এবং মেয়ে—দুটো বিভাগেই ভারত ব্রোঞ্জ পেয়েছে। মানে বিশ্ব দাবায় প্রথম তিনটে দেশের মধ্যে ভারত অন্যতম। গোটা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রচুর প্রতিভাবান দাবাড়ু উঠে আসছে।
আরও পড়ুন-চেয়ার চলে যাবে! উপাচার্যকে হুমকি এবিভিপি নেতার
আমি যখন খেলতে শুরু করি, তখন দাবার বই এদেশে ছিল রীতিমতো দুষ্প্রাপ্য। সেভাবে পাওয়াই যেত না। যখন টুর্নামেন্ট খেলতে বিদেশে যেতাম, তখন একটা-দুটো বই কিনে আনতাম। তার দামও ছিল প্রচুর। তাই টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার অনেক আগে থেকেই টাকা জমাতে হত। কেউ একটা বই কিনে আনলে অন্যরা সেটা জেরক্স করে নিত। এখন ইন্টারনেটের যুগ। সহজেই বিদেশি বইগুলো নেট থেকে ডাউনলোড করে নেওয়া যায়।
যে কোনও খেলাকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য একজন আইকন লাগে। ভারতীয় দাবায় এই ভূমিকা পালন করেছে বিশ্বনাথন আনন্দ। ১৯৮৮ সালে আনন্দ প্রথম ভারতীয় দাবাড়ু হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পায়। তারপর থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছিল। আনন্দকে দেখে গোটা দেশের তরুণরা দাবার প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে।
আরও পড়ুন-চেয়ার চলে যাবে! উপাচার্যকে হুমকি এবিভিপি নেতার
১৯৯১ সালে দ্বিতীয় ভারতীয় দাবাড়ু হিসেবে আমি গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পাই। বাংলার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার আমি। সেই সময় গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পাওয়া খুব কঠিন কাজ ছিল। এখনও কাজটা কঠিন। তবে আমাদের সময় তো এখনকার মতো এত বেশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হত না। এখনকার অভিভাবকরা ছেলেমেয়েকে দাবায় আনতে আগ্রহী। এটা কিন্তু খুব ইতিবাচক দিক। জাতীয় ক্রীড়াদিবসে আমার একটা প্রত্যাশা আছে। সেটা হল স্কুলের পাঠক্রমে দাবাকে যুক্ত করা হোক। কলকাতার বেশ কিছু নামী স্কুলেই এটা চালু হয়েছে। যেখানে দাবাকে একটা সাবজেক্ট হিসেবে শেখানো হয়। তবে দাবা পাঠক্রমে যোগ হলে সেটা আরও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়বে। এতে আখেরে লাভবান হবে সমাজ। কারণ সব বাচ্চাই তো আর ভবিষ্যতে পেশাদার দাবাড়ু হবে না। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত দাবা চর্চার ফলে তাদের মস্তিষ্ক আরও ক্ষুরধার হয়ে উঠবে। এটা বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত যে, দাবা চর্চা করলে মস্তিষের কোষগুলো সচল থাকে। মেধা বাড়ে। যা এই বাচ্চাগুলো ভবিষ্যতে যে পেশাই বেছে নিক, তাতে সাহায্য করবে। সমাজে অপরাধের সংখ্যাও অনেক কমবে বলে আমার বিশ্বাস।
আরও পড়ুন-কর্নাটকে শিক্ষা দুর্নীতির অভিযোগে মোদিকে চিঠি
আরও একটা কথা, শুধু দাবাই নয়, সব খেলাধুলো নিয়েই আমাদের একটা জাতীয় ক্রীড়ানীতি চালু করা উচিত। এতে রাজ্য এবং কেন্দ্রকে সমানভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আগের থেকে অনেক উন্নতি হলেও এখনও ভারতীয় খেলাধুলোয় পরিকাঠামোর বড় অভাব। আমাদের রাজ্য সরকার খেলাধুলোর উন্নতিতে অনেক কাজ করছে। বিশেষ করে, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খেলাকে ভীষণভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এটাই আরও ছড়িয়ে দিতে হবে।
অলিম্পিক স্পোর্টস
নিয়ে উৎসাহ বেড়েছে
দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়
(কমনওয়েলথ গেমস এবং বিশ্বকাপে সোনাজয়ী তিরন্দাজ)
বছর ছয়-সাত আগেও বাংলায় ক্রিকেট, ফুটবল নিয়ে উৎসাহ ছিল বেশি। এই দু’টি খেলার বাইরে অন্য কোনও অলিম্পিক স্পোর্টসে মানুষের উৎসাহই দেখা যেত না। ছবিটা এখন বদলেছে। অলিম্পিক, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়াডে পদকের সংখ্যা বেড়েছে। ছেলেমেয়েদের সামনে এখন রোল মডেলের অভাব নেই। নীরজ চোপড়া, নিখাত জারিন, অচিন্ত্য শিউলির মতো অ্যাথলিট স্বপ্ন দেখাচ্ছেন নতুন প্রজন্মকে। আমি নিজে আর্চারি অ্যাকাডেমির দায়িত্বে আছি। দেখতে পাচ্ছি, ছোট ছেলেমেয়েরা তিরন্দাজি শিখতে কতটা উৎসাহী। একই ভাবে অন্য খেলাতেও আগ্রহ বেড়েছে। রাজ্য সরকার বাংলায় খেলাধুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছে।
আরও পড়ুন-বৃষ্টি ও বন্যায় পাকিস্তানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৬২
তবে আমি মনে করি বছরে একবার জাতীয় ক্রীড়া দিবস পালন করে অথবা স্পোর্টস ডে উদযাপন করে খেলাধুলার উন্নতি সম্ভব নয়। ভিত তৈরি হয় স্কুল থেকে। তাই স্কুল স্পোর্টসে উন্নতি দরকার। পরিকাঠামো একজন শিক্ষার্থীর নাগালের মধ্যে থাকা উচিত। আমি কোরিয়ায় খেলতে গিয়ে দেখেছি, ওখানে স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে কী অসাধারণ পরিকাঠামো। ওরা স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুর্নামেন্ট খেলেই বিভিন্ন বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে জায়গা করে নেয়। আমাদের দেশে অনেক প্রতিভা। তাঁদের চিহ্নিতকরণ সম্ভব একমাত্র স্কুল থেকে। কে কোন খেলায় পারদর্শী তাদের সেই খেলায় উপযুক্ত ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুলগুলিতে রাখতে হবে ভাল মানের কোচ। থাকতে হবে প্রশিক্ষণের জন্য আধুনিক সরঞ্জাম। এর জন্য প্রতিটি স্কুলে খেলাধুলোকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।
ক’দিন আগেই দেখলাম, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। খুব ভাল পদক্ষেপ। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে স্কুলেই পরিকাঠামো পেয়ে যাক ছাত্রছাত্রীরা। একটা বা দুটো স্কুল নয়, অধিকাংশ স্কুলেই থাকা উচিত অন্তত তিন বা চারটি খেলার পরিকাঠামো। টেবল টেনিস, তিরন্দাজি, ব্যাডমিন্টন, বক্সিং— যে যা খেলতে চাইছে বা তাদের দক্ষতা রয়েছে তাদের সেই পরিকাঠামো দিতে হবে।
আরও পড়ুন-শহরে ডার্বির উত্তাপ, তিন বছর পর যুবভারতীতে বড় ম্যাচ
শুধু বাংলা নয়, দেশের প্রতিটি প্রান্তের স্কুল থেকে খেলাধুলোর উন্নতিতে জোর দিতে হবে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে লড়াই খুব কঠিন। সেখানে লড়াইয়ের জন্য আগে থেকে যাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে তৈরি হয়ে যায় একজন প্রতিযোগী, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের দায়িত্ব নিতে হবে। খেলা ছাড়ার পর আমরা যারা কোচিংয়ে এসেছি তাদের দায়িত্বটা অনেক বেশি। কিন্তু অনেকেই আছে যারা অবসর নেওয়ার পর আর মাঠের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। আমি বলব, অবসরের পর প্রাক্তনরাও কিছু ফিরিয়ে দিক। কোচিংয়ে এসে খেলোয়াড় তৈরি করুক। একজন খেলোয়াড়ই জানবে খেলোয়াড়দের চাহিদা, সুযোগ-সুবিধা। রাজ্য সরকার এখন প্রাক্তনদের নিয়ে কাজ করছে।
আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে এখন প্রতি বছর বাংলায় ‘খেলা হবে দিবস’ পালিত হচ্ছে। এতে বিভিন্ন জেলায় স্কুল স্তরে খেলাধুলায় আগ্রহ তৈরি হয়েছে। পরিকাঠামোয় জোর দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার ক্রীড়া বাজেট বাড়িয়েছে। কিন্তু আমি চাই, স্কুল স্তর থেকে প্রতিভা অন্বেষণ। তার জন্য ট্রেনিং পরিকাঠামো তৈরি হোক বিদ্যালয়ের আঙিনা থেকেই।