কোদালিয়ার বাড়ির পুজোতেও আসতেন স্বয়ং নেতাজি

বর্তমানে বসু পরিবারের উত্তরসূরিরা এই পুজোর আয়োজন করেন। এখন এই পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছেন

Must read

নকীব উদ্দিন গাজী, কোদালিয়া: এলাকার মানুষের কাছে এই পুজোর একটা আলাদা টান। তাই শত থিমের পুজো, জাঁকজমকে ভরা বারোয়ারি পুজো ফেলেও এলাকার মানুষ পুজোর দিনগুলিতে একবারের জন্য হলেও ছুটে আসেন এখানে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানা এলাকায় কোদালিয়ার বসু পরিবারের পুজোমণ্ডপে। কারণ, দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নিজেই যে এই বাড়ির পুজোতে বছরের পর বছর কাটিয়েছেন। তাই নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত এই কোদালিয়ার বসু পরিবারের পুজো এলাকার মানুষের কাছে একটা আলাদা আবেগ।

আরও পড়ুন-শিথিলতা বরদাস্ত নয়, উৎসবের মধ্যেও চলবে নজরদারি, ডেঙ্গি মোকাবিলায় কর্মীদের ছুটি বাতিল

এলাকার মানুষের কাছে এটি নেতাজির বাড়ির পুজো বলেই পরিচিত। মায়ের সঙ্গে কোদালিয়ার এই বাড়িতেই দুর্গাপুজোর সময় আসতেন ছোট্ট সুভাষ। এলাকার মানুষজনের মুখেই জানা গেল, শৈশব, কৈশোর থেকে শুরু করে যখন যুবক তিনি, যখন দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার জন্য ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, তখনও এই বাড়ির দুর্গাপুজোয় আসতেন তিনি। এলাকার বয়স্করা অনেকেই স্বচক্ষে দেখেছেন নেতাজিকে। এখানে এলে এই অঞ্চলের বিপ্লবীদের সঙ্গেও আলোচনায় বসতেন তিনি।

আরও পড়ুন-রেকর্ড নয়, রোহিতের চোখ কাপে

বর্তমানে বসু পরিবারের উত্তরসূরিরা এই পুজোর আয়োজন করেন। এখন এই পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছেন। তবে অষ্টমীতে সকলেই আসেন এই পারিবারিক পুজোতে। বসু পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় বসু ও চিত্তপ্রিয় বসু এখন এই পুজোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তাঁদের উদ্যোগেই এখনও প্রতিবছর সাড়ম্বরে দেবীদুর্গার আরাধনা হয় বসু বাড়িতে।

আরও পড়ুন-বিরোধী দলনেতার প্রতিহিংসার রাজনীতি নিয়ে এক্সে সরব তৃণমূল কংগ্রেস

প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এই পুজো। একেবারে সাবেকি প্রতিমা। বসু বাড়ির ঠাকুরদালানেই প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। মহালয়ার পরের দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজো। এই পুজোর পুরোহিত সজল চক্রবর্তী জানান, তিনি ১৯৭৫ সাল থেকে এই পুজো করে আসছেন। তিনি নিজে না দেখলেও তাঁর বাবা এই বাড়ির পুজোতে নেতাজিকে দেখেছেন। বসু পরিবারের প্রতিবেশী ও রাজপুর সোনারপুর পুরসভার পুরপ্রধান পল্লব দাস জানিয়েছেন, আজও সাবেকি প্রথা মেনে ঐতিহ্য অনুযায়ী বসু পরিবারের পুজোর আয়োজন করা হয়৷ নেতাজির বাড়ির পুজো হওয়ায় এই পুজো দেখতে ভিড় জমান অনেকেই। ফলে জৌলুস কিছুটা কমলেও আজও বসু পরিবারের বনেদিয়ানার দৌলতে এটি জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বনেদি বাড়ির পুজো।

Latest article