উত্তরকাশীতে (UttarKashi) একটি নির্মীয়মান টানেলে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের চেষ্টা শনিবার সকালে আবার নতুন করে শুরু হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে খনন কাজ বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে এনএইচআইডিসিএল একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে এদিন রাত আনুমানিক ২.৪৫ নাগাদ, পঞ্চম পাইপ বসানোর সময়, সুড়ঙ্গে একটি বিকট ফাটলের শব্দ শোনা গিয়েছিল, যার পরে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছিল।
যাইহোক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এই বিষয়ে জানান ৬০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পিছনে আটকে থাকা শ্রমিকরা পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ পাচ্ছেন এবং তাদের সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ রয়েছে। এখনও অবধি, উদ্ধারকারী দলগুলি ধসে পড়া টানেল থেকে মাত্র ২৪ মিটার ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে। প্রযুক্তিগত সমস্যার মধ্যেই, ইন্দোর থেকে আনা আমেরিকান আউগার মেশিনের সাহায্যে উদ্ধারকার্য চলছিল। ‘আমেরিকান অগার’ খুব সহজে ৭০ মিটার পাথর কেটে ফেলতে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। অনুভূমিক ড্রিলিং সফল না হলে হওয়ার ফলে একটি বিশেষ দল এখন টানেলের উপরের অংশ থেকে লম্বা অবস্থায় ড্রিলিং করার চিন্তাভাবনা করছে।
উদ্ধার অভিযানের আজ সপ্তম দিন। আটকে পড়া ব্যক্তিদের সহকর্মীরা অভিযান নিয়ে তাদের হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা দাবি করেছে যে কোম্পানি এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা ছিলেন তারাই বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী। আন্দোলনকারীরা তাদের আটকে থাকা সহকর্মীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য টানেল কেটে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তারা আরও বলেন, শুধুমাত্র জল এবং ছোলার উপর নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পারবেন না কর্মীরা এভাবে।
উত্তরকাশী টানেলে উদ্ধার প্রচেষ্টা শুক্রবার বিকেলে কিছুক্ষনের জন্য স্তব্ধ ছিল। টানেলের মধ্যে পঞ্চম টিউব ঢোকানোর সময় ধ্বংসাবশেষ ড্রিলিং মেশিনের দিকে আরও একবার পড়ে গেলে কাজ থামাতে হয়। সতর্কতা হিসেবে, সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে উদ্ধার কর্মীদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়, যার ফলে প্রায় এক ঘণ্টার জন্য অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। পাইপের মাধ্যমে ভিতরে পাঠানো হয়েছে খাবার, জল, অক্সিজেন, ওয়াকিটকি। শ্রমিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আর ৩০ থেকে ৪০ মিটার ধ্বসাবশেষ সরানো বাকি রয়েছে। হামাগুড়ি দিয়ে শ্রমিকরা এই পাইপ দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন। বেরোনোর সময় কেউ আহত হলে স্ট্রেচার দিয়ে বার করা হবে তাকে। পাইপ বসানোর কাজ চলছে। ঘটনার উপর নজর রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী জানান উত্তরাখণ্ডের মুখ্য়মন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি।
ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের ডিরেক্টর আংশু মনীশ খালখো সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন ‘যদিও আমরা আশা করেছিলাম যে প্রতি ঘন্টায় পাঁচ মিটার স্থাপন করা হবে, আমরা এখনও পর্যন্ত দেড় থেকে এক মিটার পাইপ স্থাপন করতে পেরেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে পাইপের অংশগুলিকে সারিবদ্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল যাতে ঢালাই ভেঙে না যায় কারণ ক্রমবর্ধমান কাঠামোটি টানেলের ভিতরে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বসানো হয়েছিল।’। ড্রিলটি ধ্বংসস্তূপ বা শক্তিশালী পাথর ভেদ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাক-আপ হিসেবে একটি অতিরিক্ত অগার মেশিন আনা হচ্ছে। কখন শেষ হবে এবং শ্রমিকদের কখন উদ্ধার করা হবে তা অনুমান করতে অস্বীকার করেন তিনি।