প্রতিবেদন : বিবিসির তথ্যচিত্রে মোদির ভাবমূর্তি ধাক্কা খাওয়ার পর প্রতিহিংসা মেটানোর চেনা কায়দাতেই এগোচ্ছে কেন্দ্র। বিবিসির দিল্লি ও মুম্বই অফিসে আয়কর দফতরের ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান বৃহস্পতিবারও অব্যাহত। আইটি সমীক্ষার নামে অভিযান শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার। গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্রে দেশে-বিদেশে মুখ পোড়ার পর ভারতে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে নামিয়েছে মোদি সরকার। আইটির ম্যারাথন তল্লাশি অভিযানে দিল্লি বিবিসি অফিসে আটকে রয়েছেন ১০ জন কর্মী। তাঁদের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি মেলেনি। তবে সম্পাদকীয় বিভাগের কর্মীদের যাওয়া-আসায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি।
আরও পড়ুন-স্টেশনের গরিব হকার দোকানিদের উচ্ছেদ নোটিশ, অমানবিক রেল দফতর
এদিকে বিবিসির এই তথ্যচিত্র বিতর্কে নতুন করে উসকানি দিয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়। মোদি সরকারের কাছে নিজের নম্বর বাড়াতে ধনকড় বলেছেন, পশ্চিমি সংবাদমাধ্যম সব সময় ভারতকে ছোট করার ষড়যন্ত্র চালায়। এদেশের বুদ্ধিজীবীরা মনে করেন, বিদেশের যা কিছু সবটাই ভাল। বাক্স্বাধীনতার নামে দেশকে ছোট করার ষড়যন্ত্র কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। এই চেষ্টাকে সমূলে বিনাশ করতে হবে। ধনকড় আরও বলেন, গত শতাব্দীতে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, একজনের কাছে মারাত্মক প্রাণঘাতী যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে। যদিও পরে দেখা যায় সেই দাবি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা।
আরও পড়ুন-সাত লাখে বৈদ্যুতিক চুল্লি
নরেন্দ্র মোদির জমানায় গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক অব্যাহত। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাতে মোদি সরকার আয়কর বিভাগকে দিয়ে এই তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই তথ্যচিত্রের লিঙ্ক মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। ওই তথ্যচিত্রে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকার কড়া সমালোচনার পাশাপাশি ভারতে মুসলিমদের দুর্দশা তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যচিত্র প্রদর্শনে মোদি সরকারের নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্র কেন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, সে বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন-জয়ন্তী মহাকালের পুজোয় বাড়তি বাস
আয়কর দফতর অবশ্য এখনও সরকারিভাবে এই অভিযানকে তল্লাশি বলছে না। তারা বলছে, এটা রুটিন সমীক্ষা। আয়কর কর্তারা বিবিসির কাছে তাদের বিভিন্ন লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন। আয়কর দফতরের দাবি, তারা আগেই সংস্থার বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছিল। কারণ সংস্থাটি তাদের লাভের অঙ্ক অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছিল। সমীক্ষার কাজ আরও কয়েকদিন চলতে পারে বলে জানা গিয়েছে। বিবিসির দাবি, তারা আয়কর দফতরের সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা করছে। সরকারি যন্ত্র ব্যবহার করে বিবিসির উপর এই আক্রমণের কড়া সমালোচনা করেছে এডিটরস গিল্ড ও একাধিক মিডিয়া সংগঠন।