শান্তনু বেরা, কাঁথি : শুধু চোরডাকাতের পিছনে দৌড়নো আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাই পুলিশের কাজ এমন একটা ধারণা সবার আছে। কিন্তু পুলিশ যে কত মানবিক উদ্যোগ নিতে পারে, সমাজের কত কাজে আসতে পারে, তারই এক বিরল নজির গড়ল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির জেলা পুলিশ। তারা বিনামূল্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিটের ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করল। প্রথম পর্বে ৬০০ জন পড়ুয়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-ফোন করলেই বাড়িতে হাজির হবেন স্বাস্থ্যকর্মী
৯ জানুয়ারি রবিবার থেকেই এই প্রশিক্ষণ শুরু হল। প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক–শিক্ষিকারা। করোনা আবহে রাজ্য জুড়ে বন্ধ স্কুল–কলেজ। খোলা নেই কোচিং সেন্টার। ফলে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিটের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে পড়ুয়ারা। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার জন্য জেলা পুলিশের এমন উদ্যোগে খুবই খুশি অভিভাবকমহল। কাঁথির আঠিলাগড়ির সুশান্ত মাইতি বলেন, ‘করোনার প্রথমপর্বে গান গেয়ে পাড়ায় পাড়ায় জনগণকে সচেতন করতে পুলিশকে দেখেছিলাম। এখন পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ। শুধু নিরাপত্তা নয়, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন পুলিশ সত্যিই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে।’
আরও পড়ুন-গ্রামের মেয়েরা বাঁচিয়ে রেখেছে টুসু-পরবকে
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগের নামকরণ করা হয়েছে ‘কৌশিশ’। অর্থাৎ প্রচেষ্টা। কাঁথি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপম সাউ বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় গত কয়েক বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে। অর্থাৎ এই জেলায় মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের অভাব নেই। করোনার কঠিন সময়ে শিক্ষার্থীদের জন্য পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’ মোবাইল ফোনে আসা লিঙ্ক ডাউনলোড করলেই মুশকিল আসান। এমনভাবে নিখরচায় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিটের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে রীতিমতো আপ্লুত শিক্ষার্থীরা। কাঁথির টাউন হলে এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) মানস সিংলা ও মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি।
অখিল পুলিশের এই উদ্যোগ নিয়ে বলেন, ‘করোনার তৃতীয় ঢেউ যখন হু হু করে বাড়ছে, সেই সময়ে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে পুলিশের এমন উদ্যোগ রীতিমতো প্রশংসনীয়।’ কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস জানান, ‘প্রাথমিকভাবে এই পদ্ধতিতে ৬০০ পড়ুয়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও, পরবর্তীকালে কাঁথি ছাড়াও জেলার যে কোনও প্রান্তের পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’