প্রতিবেদন : ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক যখন চরম অবনতির মুখে, তখন নিহত খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের পুত্রের মন্তব্য চরম বেকায়দায় ফেলল ট্রুডো প্রশাসনকে। নিজ্জরপুত্রের দাবি সত্য হলে এর জবাবদিহি করতে হবে কানাডাকে। কারণ যে নিজ্জরের মৃত্যু ঘিরে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে দু’দেশের, তাঁর পুত্র বলরাজ দাবি করেছেন, কানাডার গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল বাবার। এমনকী মৃত্যুর ২-৩ দিন আগেও কানাডার একাধিক গোয়েন্দা আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন হরদীপ সিং নিজ্জর। মৃত খালিস্তানি জঙ্গিনেতা নিজ্জরের পুত্রের এই স্বীকারোক্তিতে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন-ব্যক্তিগত আলোচনা চান কানাডার বিদেশমন্ত্রী
এই বয়ান ভারতের হাতে কূটনৈতিকভাবে নতুন হাতিয়ার তুলে দিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
কানাডার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজ্জরপুত্র বলরাজ জানান, ১৮ জুন কানাডায় এক গুরুদ্বারের বাইরে খুন হয়েছিলেন বাবা। মৃত্যুর ২-৩ দিন আগেও কানাডার গোয়েন্দা আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, শেষ সাক্ষাতে গোয়েন্দাদের তরফে নিজ্জরকে পরামর্শ দেওয়া হয় বাড়িতেই সবসময় থাকার জন্য। বলরাজের দাবি অনুযায়ী, কানাডার গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের। খোদ জঙ্গিপুত্রের মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি খালিস্তানি জঙ্গি হওয়ার পাশাপাশি কানাডার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিও করতেন নিজ্জর? যার জেরেই নিজ্জরের মৃত্যুতে বেপরোয়া হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলছে কানাডা? এমনকী পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে এই মৃত্যু নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো! উল্লেখ্য, নিজ্জরের মৃত্যুর পর কানাডার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ আনেন, কানাডাবাসী খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের নেপথ্যে ভারতের হাত রয়েছে।
আরও পড়ুন-ঝাড়খণ্ড যাওয়ার পথে নিম্নচাপ ফের বাঁক খেয়ে ফিরে এসেছে বাংলায়
এর পর থেকে ভারত-কানাডা টানাপোড়েন অব্যাহত। দুই দেশ থেকেই অপর দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি কানাডা জানায়, তারা হিংসা রুখতে কাজ করবে, কিন্তু পাশাপাশি বাক্স্বাধীনতা ও বিক্ষোভ দেখানোর স্বাধীনতাকেও রক্ষা করবে। কার্যত তারই জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, তিনি কানাডাকে জানিয়েছেন, বাক্স্বাধীনতার অর্থ সন্ত্রাসবাদে উসকানি নয়। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। বাক্স্বাধীনতা কী, তা ভারতের অন্য কারও থেকে শেখার প্রয়োজন নেই। বাকস্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসবাদে উসকানি দেওয়া হলে সেটা স্বাধীনতার অপব্যবহার। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এই পর্যায়ে যাওয়ার পর এবার নিজ্জর পুত্র বলরাজের চাঞ্চল্যকর মন্তব্যে তীব্র অস্বস্তিতে পড়ল ট্রুডোর দেশ।