প্রতিবেদন : ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক বিপুল টাকা-সহ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁরা কোথা থেকে ওই টাকা পেয়েছেন, কোথায় তা নিয়ে যাচ্ছিলেন এর সদুত্তর দিতে না পারায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। অভিযোগ উঠছে, মহারাষ্ট্রের মতো ঝাড়খণ্ডেও পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও কংগ্রেস জোট সরকার ভেঙে রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে বিজেপি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও সেই অভিযোগ তুললেন।
আরও পড়ুন-পালাগান বাঁচাতে সরকারি উদ্যোগে কর্মশালা
বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে হেমন্ত বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিধানসভায় ওই তিন বিধায়কের আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিয়েছিল। ওই বিধায়কদের অস্বাভাবিক আচরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছিল যে, তাঁরা সরকারের মধ্যে কৌশল করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। সরকারের শরিক কংগ্রেসও জানিয়েছে, ওই বিধায়কদের আচরণ সন্দেহজনক।
আরও পড়ুন-মানিকচকের বাঁধ মেরমতির কাজ শুরু শীঘ্রই, ভাঙনরোধে রাজ্যের বরাদ্দ ৪২ কোটি
হেমন্ত সোরেন অভিযোগ করেন, বিজেপি নির্বাচনে হেরে অন্যায়ভাবে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি কখনও ভাবেননি যে, শরিক দলের কয়েকজন বিধায়ক সরকার ভাঙার খেলায় যোগ দিতে পারেন। তবে যা পরিস্থিতি তাতে বলা যায়, সরকার ভাঙা নয়, বরং সরকার কিনে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। কে বিধায়ক হবেন, কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন সেটা সাধারণ মানুষ ঠিক করেন। কিন্তু সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে, নেতারা সরকারের উপর বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। বরং তাঁরা একমাত্র অর্থ-সম্পদের উপর ভরসা রাখছেন। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, খেলতে গিয়ে কোনও বাচ্চা যদি হেরে যায় তখন সে খেলাটা ভণ্ডুল করে দেয়। বিজেপিও ঠিক তেমনই করছে। ভোটে জিতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতা দখল করতে না পেরে তারা এখন ঘুরপথে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। একদিন প্রকৃত সত্যটা সামনে আসবেই। হেমন্ত আরও বলেন, তিন বিধায়কের গ্রেফতারি নিশ্চিতভাবেই উদ্বেগের। একটা ষড়যন্ত্র চলছে, এই বিষয়ে আমাদের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল। আমরা পুরো পরিস্থিতির উপর সতর্ক নজর রাখছি। পর্যাপ্ত সময় নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে হয়তো দেখা যাবে সরকারের এই অস্থিরতা তৈরির পিছনে রয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন-২৮ অগাস্ট মালদহ থেকে কলকাতায় রেকর্ড যোগদান
ঝাড়খণ্ডের জোট সরকারকে ফেলে দিতে বিজেপি চেষ্টা চালাচ্ছে, তিনি কেন এটা মনে করছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বলেন, এই মুহূর্তে জেএমএম-কংগ্রেস জোট ক্ষমতায় রয়েছে। কিন্তু বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে চায়। দেশের কোনও রাজ্যে অন্য কোনও বিরোধী দল ক্ষমতায় থাকবে এটা মেনে নিতে পারেছে না বিজেপি। গেরুয়া শিবির যদি সরকার ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করে তবে কীভাবে সরকার ধরে রাখা যায় সেটা আমাদের দেখতে হবে। মানুষ আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। এখন আমাদের মানুষের স্বার্থরক্ষা করতে হবে। তবে সরকার টিকিয়ে রাখতে জোটসঙ্গী কংগ্রেসকেও এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী।