প্রতিবেদন : সিঙ্গুর (Deucha Pachami- Singur) আন্দোলন যে যথার্থ ছিল, তা রীতিমতো যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার জানবাজারে কালীপুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বললেন, আমরা আন্দোলন করেছিলাম বলেই দেশজুড়ে জমিরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে বাধ্য হয়েছিল কেন্দ্র। আমাদের জন্যই টাটারা চলে গিয়েছে বলে যারা প্রচার করছে, তারা মিথ্যাচার করছে। জননেত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, আমরা বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছিলাম। কিন্তু জোর করে জমি নেওয়ার বিরোধিতা করেছিলাম। বিকল্প জমির সন্ধান করতে বলেছিলাম। টাটারা তো এখন বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যে বিনিয়োগ করছে। বিরোধীদের ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী কিছুটা ক্ষোভের সুরে প্রশ্ন তোলেন, দেউচা-পাঁচামির সঙ্গে সিঙ্গুরের তুলনা টানা হচ্ছে কোন যুক্তিতে? দেউচা-পাঁচামিতে জোর করে কোনও জমি নেওয়া হয়নি। কয়েক লক্ষ ছেলেমেয়ে চাকরি পাবে এখানে। ইতিমধ্যেই কয়েকশো ছেলেমেয়েকে চাকরি দিয়েছি আমরা। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেন, তাঁর সরকার যাতে কোথাও জোর করে কোনও জমি না নেয় সেদিকে নিজে নজর রাখেন তিনি।
মিথ্যাচারের জবাবে : সিঙ্গুর (Deucha Pachami- Singur) আন্দোলন নিয়ে মিথ্যাচারের জন্য এদিন সিপিএমকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন জননেত্রী। তাঁর মন্তব্য, তাপসী মালিকের মতো মেয়েকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রতিবাদ, আমাদের আন্দোলন ছিল এরই বিরুদ্ধে। আমরা আন্দোলন করেছিলাম বলেই গোটা দেশের জন্য তৈরি হয়েছে কৃষিজমি রক্ষা আইন। আমরা আজও যদি কিছু করি, আগে জমিদাতাদের কথা শুনি।
অর্থহীন তুলনা : অনেকে সিঙ্গুরের সঙ্গে দেউচা-পাঁচামির তুলনা করছেন। কিন্তু কেন? বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লাকেন্দ্র। গর্ব হওয়া উচিত। এই প্রকল্পে কয়েক লক্ষ ছেলেমেয়ে চাকরি পাবে। আমরা ইতিমধ্যেই কয়েকশো ছেলেমেয়েকে চাকরি দিয়েছি। শনিবার আরও ৩০০ জনকে চাকরি দেওয়া হবে।
প্রসারিত কর্মসংস্থান : কর্মসংস্থানের পথকে প্রসারিত করতে রাজ্যে খুলে যাচ্ছে একের পর এক বিনিয়োগের দরজা। কথাটা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সারাদেশে ৪০ শতাংশ বেকার বেড়েছে। কমেছে কর্মসংস্থান। কিন্তু বাংলায় কর্মসংস্থান বেড়েছে ৪০ শতাংশ।
আরও পড়ুন-রাজনৈতিক প্রতিহিংসা: সৌরভের নাম গেল না আইসিসিতে
জঙ্গলমহল সুন্দরী : মুখ্যমন্ত্রীর কথায় এসে পড়ে জঙ্গলমহল সুন্দরী প্রকল্পের কথাও। বলেন, ৭২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হচ্ছে। ডানকুনি থেকে পানাগড়, পানাগড় থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত ট্রেড করিডর হচ্ছে।
নির্বাচন বলেই কি : আমূল দুধের দামবৃদ্ধিতে বৈষম্যের ব্যাপারেও সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিস্মিত মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, বাংলা সহ সব জায়গায় যখন আমূল-পণ্যের দাম বাড়ল, তখন শুধুমাত্র নির্বাচন বলেই দাম বৃদ্ধি হল না গুজরাটে। বাংলার প্রতি কেন এমন বৈষম্য?
তিনি রেলমন্ত্রী থাকার সময় বাংলায় রেলের অগ্রগতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে বুঝিয়ে দেন, বিরোধীদের যাবতীয় ঈর্ষা, সমালোচনা উপেক্ষা করে উন্নয়নের গতি আরও বৃদ্ধি পাবে বাংলায়।