প্রতিবেদন : দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। রবিবার অন্ধপ্রদেশ ও চণ্ডীগড়ে আরও দু’জনের করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। ফলে দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৩৫। অন্ধ্রপ্রদেশ এবং চণ্ডীগডে় আক্রান্ত দুই ব্যক্তিই সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছেন।
আরও পড়ুন-KMC 50: দলবদলু-সুবিধাবাদীদের ভোট নয়, মৌসুমির প্রচারে স্পষ্টবাদী কুণাল ঘোষ
অন্ধপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ৩৪ বছরের ওমিক্রন আক্রান্ত ব্যক্তি ২৭ নভেম্বর আয়ারল্যান্ড থেকে দেশে ফেরেন। মুম্বই বিমানবন্দরে তাঁর করোনা পরীক্ষা হলে পজিটিভ রিপোর্ট আসে। মুম্বই থেকে বিশাখাপত্তনম ফেরার পর ওই ব্যক্তির আবার করোনা পরীক্ষা করা হয়। দ্বিতীয়বারের রিপোর্টও পজিটিভ হয়। এর পরই ওই ব্যক্তির নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য হায়দরাবাদে পাঠানো হলে সেখান থেকেই জানা যায় ওই ব্যক্তি ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশে এই প্রথম কোনও ব্যক্তির ওমিক্রন আক্রান্ত হলেন। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ১১ ডিসেম্বরের সর্বশেষ রিপোর্টে আক্রান্ত ব্যক্তির রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
আরও পড়ুন-টিকা বিক্ষোভ
অন্যদিকে, চণ্ডীগড় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ২২ নভেম্বর ইতালি থেকে দেশে ফেরা এক যুবক ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন। বিদেশ থেকে ফেরার কারণে ২২ বছরের ওই যুবকের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়। রবিবার সকালে জানা গিয়েছে ওই যুবক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।
মাত্র দিন পনেরো আগে করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু অতি সংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্ট ইতিমধ্যেই ৫৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। অনেকেই জানতে চাইছেন, ওমিক্রনের হাত ধরেই কি দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে?
আরও পড়ুন-মোদির বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পে বরাদ্দের ৮০ শতাংশই খরচ বিজ্ঞাপনে
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রিজিওনাল ডিরেক্টর ডক্টর পুনম ক্ষেত্রপাল জানিয়েছেন, ওমিক্রনের হাত ধরেই যে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে এমনটা মনে করার কোনও যুক্তি নেই। কারণ নতুন ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে পরিস্থিতির ভয়ঙ্কর অবনতি নাও হতে পারে। তবে এটা ঠিক যে, আমরা এক অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। ডক্টর ক্ষেত্রপাল বলেন, নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন অজানা রয়ে গিয়েছে। এমনিতেই করোনা এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তার ওপর এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট এসে পড়ায় আমাদের আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীর ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক
সংক্রমণ প্রতিরোধ প্রসঙ্গে হু বিশেষজ্ঞ বলেন, মানুষকে আরও বেশি করে সব ধরনের সর্তকতা মেনে চলতে হবে। মানতে হবে জনসাস্থ্য ও সামাজিক দূরত্ববিধি। বাড়াতে হবে টিকাকরণের হার।
ওমিক্রন নিয়ে হু-র এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ওমিক্রনের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। এই ভ্যারিয়েন্ট সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। যেভাবে ওমিক্রন ছড়াচ্ছে তাতে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হবে। ওমিক্রন জনজীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে তা এখনই বলা না গেলেও সব দেশকেই ওমিক্রনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন-গেরুয়া আক্রমণে ব্রিগেডিয়ার কন্যা
নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট রুখতে আলাদা কোনও পরীক্ষা বা সতর্কতার প্রয়োজন আছে কি না জানতে চাওয়া হলে ডক্টর ক্ষেত্রপাল বলেন, আক্রান্তদের প্রাথমিক তথ্য ও সমস্যা সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সেই তথ্য পেলেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। তবে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সব ধরনের পরিকাঠামো তৈরি রাখতে হবে। দেখা যাচ্ছে টিকা নেওয়ার পরেও বহু মানুষ ওমিক্রন আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সচেতনতা মেনে চলা ছাড়া ওমিক্রনের হাত থেকে বাঁচার দ্বিতীয় কোনও পথ নেই।