প্রতিবেদন : ইজরায়েলের মাটিতে হামাসের ভয়ঙ্কর হামলা ও পাল্টা প্রত্যাঘাতে আর একটা যুদ্ধ শুরু হয়েছে পৃথিবীর বুকে। এমনিতেই বছর পেরিয়ে গিয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের। ফের যুদ্ধের অশনিসংকেত। ইজরায়েল-হামাসের সংঘাতে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দেড় হাজারের বেশি মানুষের। যুদ্ধের এই আবহে হামাস বাহিনীর এক কমান্ডারকে ঘিরে জোর আলোচনা শুরু। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইজরায়েলের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছেন এই ব্যক্তি।
প্যালেস্টাইনের নাগরিক মহম্মদ দেইফ (Mohammed Deif)। ২০২২ সাল থেকে হামাসের সামরিক বাহিনীর প্রধান তিনি। বিভিন্ন হামলার ঘটনায় মূলচক্রী। ষাটের দশকে গাজার এক শরণার্থী শিবিরে জন্ম দেইফের। আরবি ভাষায় দেইফ শব্দের অর্থ ‘অতিথি’। জন্মের সময় দেইফের নাম ছিল মহম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরি। সেই সময় মিশরের দখলে ছিল গাজা। পরে দেইফ নামে পরিচিতি পান তিনি। গাজায় ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। ১৯৬৭ সালের জুন মাসে গাজা কব্জা করে ইজরায়েল। গত শনিবার ইজরায়েলের ভূখণ্ডে যেখানে হামাস বাহিনী ঢুকে হামলা চালিয়েছে, পঞ্চাশের দশকে দেইফের বাবা, কাকারা সশস্ত্র প্যালেস্তিনীয়দের সঙ্গে সেই এলাকাতেই হানা দিয়েছিল। ছোট থেকেই যুদ্ধের পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা দেইফের। ১৯৮৭ সালে হামাস তৈরি করা হয়। বর্তমানে এই হামাসের নেতৃত্বে দেইফ। তবে এখন তাঁর শরীর অশক্ত। হুইলচেয়ারে চলাফেরা। সেখান থেকেই হামাস বাহিনীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই কমান্ডার। তাঁর একটি চোখ নেই। ২০ বছর আগে এয়ার স্ট্রাইকে মরতে মরতে কোনওক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন দেইফ। সেই হামলায় এক চোখ, এক হাত এবং এক পা হারান। তারপর থেকে হুইলচেয়ারেই।
১৯৮৭ সালে যখন হামাস তৈরি হয় সেই সময় আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়েছিল ইজরায়েলে। ওই ঘটনায় দেইফ জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। তার জেরে তাঁকে জেলে পাঠিয়েছিল ইজরায়েল। প্যালেস্টাইনের হয়ে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে বারবার আক্রমণ চালিয়েছেন দেইফ। হামাসের সেই ‘মাথা’ই এখন ইজরায়েল সরকারের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা। শোনা যায়, কমপক্ষে সাতবার দেইফকে মারার চেষ্টা হয়। তাঁকে খতম করতে ২০১৪ সালে একটি বাড়িতে হামলা চালায় ইজরায়েল সরকার। সেই হামলায় মৃত্যু হয় দেইফের (Mohammed Deif) স্ত্রী এবং দুই সন্তানের।