প্রতিবেদন : কেন্দ্রীয় বাজেটে মোদি সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা খুবই কম৷ কারণ, ২০১৪ সালের পর থেকে দেখা যাচ্ছে বিজেপি সরকার তেলা মাথায় তেল দিয়ে চলে৷ উচ্চবিত্তদের জন্যই বাজেট তৈরি করে৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিক্ষেত্রে যে পরিমাণ বাজেট বরাদ্দ করা উচিত তা হয় না৷ বুধবার সংসদে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের আগেরদিন মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বাজেট ঘিরে দলের প্রত্যাশা সম্পর্কে বললেন সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়৷ তাঁর কথায়, বিজেপি সরকারের আর্থিক নীতির ফলে করোনাকাল ও তার পরবর্তী সময় গরিব মানুষ আরও গরিব হয়েছে এবং ধনী মানুষের সম্পদ প্রভূত পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে৷ এই ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল৷ তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারে উচিত যে সব সরকারি কর্মসূচি এই মুহূর্তে চালু রয়েছে সেগুলির গতি বাড়ানো এবং সাধারণ মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়া৷ এছাড়া মধ্যবিত্ত করদাতাদের কথাও ভাবা উচিত৷ শিল্পপতিদের যেমন নানা ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া এবং তাঁরা সুবিধা পান, তেমনই সাধারণ মানুষের কথা ভেবে জনমুখী বাজেট তৈরি করা উচিত৷
আরও পড়ুন-আসারামের যাবজ্জীবন জেল
সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের মোদি সরকার কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন৷ রাজনৈতিক লক্ষ্য সামনে রেখে অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরি করা হয়েছে৷ যেসব গরিব মানুষ বিভিন্ন প্রকল্পে শ্রমদান করেছেন, গত একবছর ধরে তাঁরা মজুরি পাচ্ছেন না৷ বলা হচ্ছে, দুর্নীতি হয়েছে, ভুয়ো জব কার্ড হয়েছে৷ অথচ কেন্দ্রীয় সরকার যে যে বিষয় উল্লেখ করেছে সেগুলি নির্দিষ্ট সময়ে সংশোধন করেছি আমরা৷ তারপরেও টাকা আটকে রাখা হচ্ছে৷ অথচ ভুয়ো জবকার্ড তৈরিতে দেশের মধ্যে ১ নম্বরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, ২ নম্বরে মধ্যপ্রদেশ৷ আর ৩ নম্বরে গুজরাত, যেটি কিনা খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের রাজ্য৷ সবগুলো বিজেপি শাসিত রাজ্য৷ দুর্নীতি হওয়ার পরেও সেখানে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হচ্ছে না, ওই রাজ্যগুলির টাকাও আটকে রাখা হচ্ছে না৷ আর এখানে বাংলায় বিজেপি বিরোধী সরকার চলছে৷ যেহেতু ওঁরা দামামা বাজিয়ে অব কি বার ২০০ পার স্লোগান দিয়েছিলেন এবং তা ব্যর্থ হয়েছে৷ সেই কারণেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হচ্ছে৷ বাংলার মানুষ এর সমুচিত জবাব আগামিদিনে দেবে৷
আরও পড়ুন-বেনিয়মে এগিয়ে বিজেপি রাজ্য, বাংলাতেই শুধু কেন্দ্রীয় দল, মেনে নিলেন মন্ত্রী
রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় আরও বলেন, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে৷ প্রতিবারই সমীক্ষায় এরকম তথ্য দেওয়া হয়৷ কেন্দ্রীয় সরকার এক কথা বলে, আইএমএফ এক কথা বলে, আর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এক কথা বলে৷ পরে দেখা যায় প্রতি সংস্থাই নিজেদের দেওয়া তথ্য পরিবর্তন করছে৷ তখন দেখা আর্থিক বৃদ্ধির হার কমছে৷ যারা এখন অথনৈতিক বৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশ বলছেন তাঁরা গজদন্ত মিনারে বসে এগুলি তৈরি করেছেন৷ বাস্তবের সঙ্গে এর কোনও মিল নেই৷ তর্কের খাতিরেও যদি ধরে নেওয়া হয় যে ৬.৫ শতাংশ হারে জিডিপি বৃদ্ধি হবে সেক্ষেত্রেও তার সরাসরি প্রভাব সাধারণ মানুষের উপর পড়বে না৷