প্রতিবেদন : নতুন বছরের শুরু থেকেই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের দাপটে বেহাল অবস্থা গোটা দুনিয়ার। পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ, বিশ্বের সর্বত্রই করোনার সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়ছে। অতিমারির তৃতীয় তরঙ্গের অভিঘাতে বিপর্যস্ত জনজীবন। এই পরিস্থিতিতেও বহু মানুষ এখনও ভেঙে চলেছেন করোনাবিধি। মাস্ক ব্যবহারে অনীহা বহু মানুষের। এই প্রবণতায় অশনিসঙ্কেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
রবিবারের খবর, গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩২ কোটির কাছাকাছি। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-Kolkata Police: করোনা আবহে থানায় না গিয়েই এবার হোয়াটসঅ্যাপে জানান অভিযোগ
রবিবার আমেরিকাতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৪ লক্ষ ৫৪ হাজার মানুষ। ২৪ ঘণ্টায় বাইডেনের দেশে মৃত্যু হয়েছে ৬৮২ জনের। আমেরিকায় শিশুদের মধ্যে বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ সবচেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে। ফলে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে গত কয়েকদিনে। আমেরিকায় এখনও পাঁচ বছরের কম বয়সিদের টিকা দেওয়া শুরু হয়নি। পাশাপাশি ৫ বছরের বেশি যাদের বয়স তাদের টিকা দেওয়া হলেও অনেক অভিভাবক সন্তানদের টিকা দিতে নিয়ে যাচ্ছেন না। এ কারণেই শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ আরও দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
আরও পড়ুন-করোনা আক্রান্তদের চাঙ্গা করতে নয়া উদ্যোগ হ্যালো, মহকুমাশাসক বলছি
অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, আয়ারল্যান্ডের মতো দেশে করোনার সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। ফলে এই সমস্ত দেশগুলিতে সরকার নতুন করে বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করেছে।
অন্যদিকে সরকারের এই সমস্ত বিধি-নিষেধকে উপেক্ষা করতে পথে নেমেছে মানুষ। সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ জানাতে বিভিন্ন দেশে চলছে বিক্ষোভ। ফ্রান্সে বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশকে পথে নামতে হয়েছে। একই পরিস্থিতির সাক্ষী হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সে দেশের বেশিরভাগ মানুষই নতুন করে জারি করা বিধিনিষেধ মানতে চাইছে না। সকলেই মনে করছে, ওমিক্রন তেমন প্রাণঘাতী নয়। তাই এত বিধিনিষেধের কী প্রয়োজন!
আরও পড়ুন-পড়ুয়াবন্ধু পুলিশের অভিনব ‘কৌশিশ’ নিখরচায় পরীক্ষা প্রস্তুতি–তালিম
যদিও বিশেষজ্ঞরা মানুষের এই মানসিকতাকেই চরম বিপদের সঙ্কেত বলে মনে করছেন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যত বেশি সংক্রমণ ছড়াবে ততবেশি নতুন স্ট্রেন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। বর্তমানের তুলনায় আরও বেশি ভয়ানক হতেই পারে সেই নতুন স্ট্রেন। সে কারণে প্রতিটি দেশেই বিশেষজ্ঞরা টিকাকরণে জোর দিচ্ছেন। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসেনারো তাঁর মেয়েকে টিকা দেবেন না বলে প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন। ফ্রান্সের এক সংসদ সদস্যও টিকা নেবেন না বলে জানিয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত দক্ষিণপন্থী দলের ওই সাংসদ করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন।