নয়াদিল্লি : এবার শিল্পীদেরও উচ্ছেদ করতে নামল মোদি সরকার। কোনওরকম সৌজন্যের পরোয়া না করেই রাজধানীর সরকারি আবাসন থেকে বের করে দেওয়া হল বৃদ্ধ, নবতিপর খ্যাতনামা শিল্পীকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রখ্যাত ওড়িশি নৃত্যশিল্পী গুরু মায়াধর রাউতের পদ্মশ্রীর মানপত্র ছুঁড়ে ফেলা হল রাস্তায়। সেইসঙ্গে অন্যান্য শংসাপত্র-সহ মূল্যবান সামগ্রীও। সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি উচ্ছেদের এই দানবীয় চেহারা দেখে নিন্দার ঝড় সব মহলে। নিয়মমাফিক উচ্ছেদের নামে নরেন্দ্র মোদি সরকারের এই রুচিহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও স্বৈরতান্ত্রিক কাজের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার এই প্রসঙ্গে ট্যুইট করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ৯০ বছরের কিংবদন্তি গুরু মায়াধর রাউতের সঙ্গে এভাবেই ব্যবহার করলেন মোদি! ভগবান এবার প্রধামন্ত্রীর গায়ে কয়েক ফোঁটা সংস্কৃতি বর্ষণ করুন এবং তাঁর মোটা মাথাওয়ালা গৃহমন্ত্রীর মাথাতেও কয়েক ফোঁটা গঙ্গাজল।
আরও পড়ুন-নারী-সুরক্ষায় উইনার্স
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এদিন কিংবদন্তি শিল্পীর কন্যা মধুমিতা রাউত বলেন, সরকারি আধিকারিকরা যখন আমাদের বাড়িতে পৌঁছন তখন আমরা মধ্যাহ্নভোজ সারছিলাম। আজ আমি প্রচণ্ড দুঃখ পেয়েছি। সোনাল মানসিং এবং রাধা রেড্ডির মতো নৃত্যশিল্পীদের যিনি প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, তাঁর প্রতি এই আচরণ প্রত্যাশিত ছিল না। গত পাঁচ দশক ধরে দিল্লিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন তিনি। কোথাও নিজের নামে এক ইঞ্চি জমি নেই। এমন এক শিল্পীর প্রতি কীভাবে এই আচরণ করে সরকার? প্রত্যেক নাগরিকের নিজস্ব সম্মানবোধ আছে। এদিন যা করা হল তা কোনও শিল্পীর প্রাপ্য নয়। জানা যায়, ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক প্রবীণ শিল্পী। গৃহহীন হয়ে শিল্পীকে অবশেষে এক শিক্ষার্থীর বাড়ির বেসমেন্টে আশ্রয় নিতে হয়েছে।
আরও পড়ুন-বাজারে ভিনরাজ্যের আম
প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সাল থেকে দিল্লিতে ন্যূনতম ভাড়ায় প্রখ্যাত শিল্পীদের ভাড়া থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথমে তিন বছরের চুক্তি থাকলেও পরবর্তী সময়ে সেই চুক্তি পুনর্নবীকরণ করা হত। ২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিল্পীদের পাকাপাকি উচ্ছেদের প্রস্তুতি শুরু হয়। ২০২০ সালে তাঁদের বাড়ি খালি করার নির্দেশ পাঠায় কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন ও আবাসন মন্ত্রক। যদিও তার বিরোধিতায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন একাধিক শিল্পী।