১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের কর্তৃক মানবাধিকার দিবসটি উদযাপন করা হয়। ওই বছরই জাতিসংঘ প্রথমবার মানবাধিকার বিষয়টি উত্থাপন করেছিল। এছাড়াও ‘সর্বজনীন মানব অধিকার সংক্রান্ত’ ঘোষণাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই তারিখটি নির্বাচন এবং নির্ধারণ করা হয়। এরপর ১৯৫০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তরফ থেকে এইদিনটি উদযাপনের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলিকে।
আরও পড়ুন-যৌনকর্মীদের মানবাধিকার
মানুষের সামাজিক অধিকার, শিক্ষার অধিকার, সাংস্কৃতিক, শারীরিক অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং তাদের সবরকম সুরক্ষাকে নিশ্চিত করতে প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর পালিত হয় মানবাধিকার দিবস।
এই দিনটি বিভিন্ন দেশে পালিত হয় মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে সভা-সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্যচিত্র কিংবা চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আরও অনেকিছুর মাধ্যমে। ১০ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করেই প্রতি পাঁচ বৎসর অন্তর ‘জাতিসংঘের মানব অধিকার ক্ষেত্র পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। এছাড়া নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদানও এই দিনে হয়। এই দিনে যাতে মানুষের মানুষের বৈষম্য ঘোচে এবং সকলে সমান সুযোগ-সুবিধা পায় সেই মর্মে জাতিসংঘ প্রতিটি দেশকে উৎসাহ অনুপ্রেরণা দেয়।
আরও পড়ুন-উপেক্ষিত এক আগুনের ফুলকি প্রয়াণের ৯০ বছর পরেও
১৯৯৩ সাল থেকে মানবাধিকার আইন এই দেশে কার্যকর হয়। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের নতুন চেয়ারপার্সন নিযুক্ত হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। নতুন দায়িত্বভার গ্রহণের পর তিনি বললেন মানবাধিকার সংক্রান্ত নানা কথা এবং পরবর্তী পরিকল্পনাগুলি।
প্রশ্ন : মানবাধিকার বলতে কী বোঝায়? সেই অধিকারের সীমারেখা চিহ্নিত করা যায় কীভাবে?
মানবাধিকার কী তা আমাদের মানবাধিকার সংক্রান্ত যে আইন রয়েছে প্রোটেকশন অফ হিউম্যান রাইটস অ্যাক্ট ১৯৯৩ তার সেকশন 2(1)(d)তে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সহজ কথায় বলতে গেলে মানবাধিকার হল সেই সব মৌলিক অধিকার যেগুলি থেকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষ মানুষকে নিপীড়িত বা বঞ্চিত করা যায় না। যখনই সেইসব নির্দিষ্ট অধিকারগুলির উল্লঙ্ঘন হবে, আইনের চোখে সেটা অপরাধ এবং বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে শাস্তিযোগ্য। বিষয়টিকে সহজ করে দেবার উদ্দেশ্যে আমরা মানবাধিকার কমিশন থেকে এই সংক্রান্ত একটা লিফলেট বের করেছি যাতে বিস্তারিত দেওয়া রয়েছে যে মানবাধিকার বলতে কী বোঝায়, কোনগুলোয় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। আমাদের কাছে এমন অনেক বিষয় অভিযোগ নিয়ে মানুষ আসছে যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের আওতায় পড়ে না। অনেকেই বিষয়টি জানেন না। তাই সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এই লিফলেট। ওতে মানবাধিকারের মধ্যে কোন কোন মৌলিক অধিকারগুলো রয়েছে সেই সম্পর্কে তো আছেই সঙ্গে কোন ব্যক্তি কী ধরনের সুরক্ষা পেতে পারে, কীভাবে আবেদনের জানাতে হয়, কোন ক্ষেত্রে সুয়ো মোটো প্রসিড করা যেতে পারে, আবেদন করলে তাতে কী কী লিখতে হবে, কোন ভাষায় লিখতে হবে ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য দেওয়া রয়েছে। এই লিফলেট বাংলা, হিন্দি, উর্দু এবং নেপালি ভাষাতে পাওয়া যায়। আমরা ইংরেজি ভাষাতেও বের করার কথা ভাবছি। এই লিফলেটগুলো যেমন বইমেলা, পৌষমেলা, গঙ্গাসাগর মেলা ইত্যাদি বিভিন্ন মেলাতে বিলি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-কলেজিয়াম বৈঠকের তথ্য প্রকাশ নয় : সুপ্রিম কোর্ট
প্রশ্ন : সামাজিক ক্ষেত্রে মানবাধিকার নিয়ে তোলপাড় হয়। আমাদের অন্দরমহলে মহিলাদের মানবাধিকার কি সুরক্ষিত?
না, আমি মনে করি না মহিলাদের মানবাধিকার এখনও সম্পূর্ণ সুরক্ষিত বলে। সে কারণেই যাতে সেই সুরক্ষা দেওয়া যায় সেইজন্য মহিলাদের জন্য নানা ধরনের আইন করা হয়েছে। কয়েকবছর আগেও যদি মহিলাদের সামাজিক, পারিবারিক অবস্থান ভাবেন তাহলে দেখবেন আজ তা অনেক বদলেছে। তাঁরা নিজের অধিকার নিয়ে সচেতন হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, বাড়িতে গৃহহিংসা থেকে তাঁরা যাতে সুরক্ষিত থাকে সেই সংক্রান্ত আইনের ইমপ্লিমেন্টেশন হচ্ছে, অ্যান্টি ডাউরি অ্যাক্ট হয়েছে, ৪৯৮ এ IPC ধারা তৈরি হয়েছে। মহিলাদের জন্য তাঁদের মানবাধিকার রক্ষা করতে নানারকম ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। সরকারের এই প্রচেষ্টা কিন্তু এই রাজ্যের ক্ষেত্রে উদাহরণীয়।
প্রশ্ন : আজকের পরিবর্তনশীল দুনিয়ায় মানবাধিকারের নিরিখে মহিলাদের অবস্থান কোথায়?
আমি অন্তত মনে করি না মহিলা-পুরুষ আলাদাভাবে কিছু হয়। নারী, পুরুষ সমান, তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার, আইনগত অধিকার সমান কাজেই সবটাই বিচার্য। তবে মহিলাদের জন্য কিছু বিশেষ প্রেটেকশন দেওয়া রয়েছে। মহিলাদের অবস্থান এখন অনেকটাই উন্নত। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে লিঙ্গবৈষম্য মুছে যায়। কিছু কিছু জায়গায় বাধা রয়েছে। একদিনে সবটা পাল্টানো সম্ভব নয়। আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজ তাই এখানে পুরুষদেরই আধিপত্য থেকে এসেছে। ফলে সেই জায়গা থেকে সরে আসতে গেলে সময় লাগবে। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বদল দরকার কিন্তু সবক্ষেত্রে যখন সেটা হয় না তখন জোর করে আইনের সাহায্য নিতেই হয়।
আরও পড়ুন-কোর্টে লড়াই পরাস্ত বিজেপি, মোরবিতে সাকেতের জামিন
প্রশ্ন : রাজনৈতিক ঘটনা হলে তো কথাই নেই, কোনও সাধারণ ঘটনা নিয়েও তোলপাড় হয় রাজ্যে। সর্বভারতীয় নিরিখে বাংলার মানবাধিকারের চিত্রটা ঠিক কী রকম?
আমি সদ্য দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। ওভার অল যেটুকু দেখি বিগত এক বছর এখানে কোনও সদস্য বা চেয়ারম্যান ছিলেন না। ফলস্বরূপ কাজের গতি একটু কম থেকেছে। প্রায় এক বছর কাজ কিছুটা আটকে ছিল। একজন শুধু অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ মেম্বার ছিলেন, ফলে কাজ এগোনো সম্ভব হয়নি। তবে আবার পুরোদমেই কাজ শুরু হয়েছে।
প্রশ্ন : মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রাজ্য কমিশনের কর্মকাণ্ড কীভাবে চলে? নতুন কোনও কর্মপদ্ধতি পরিকল্পনা রয়েছে?
মানবাধিকার কমিশনের কাজ হয় একটা দরখাস্ত ভিত্তিতে, আর অপরটা আমরা নিজেরা যখন ইনিশিয়েট করি বা সুয়ো মোটো যাকে বলে। এই নিয়ে একটি মিটিং সম্প্রতি হয়েছে। আমাদের একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে। তাতে এমনটা সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আমরা সামনের জানুয়ারি থেকে জেল ভিজিট শুরু করব। জেলে নানাধরনের সমস্যা আছে, যেমন জেলে চিকিৎসা পরিষেবার ঘাটতি রয়েছে, জায়গা সঙ্কুলান, অস্বাভাবিক মৃত্যু— এগুলো সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট বারবার অনেক আগে থাকতেই ব্যবস্থা নেবার কথা বলেছিল। আমরা সেই বিষয়টা নিয়ে এগোচ্ছি। কিছু সরকারি পাগলা গারদ রয়েছে, সেখানেও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না দেখার জন্য ভিজিট করার কথা ভাবা হচ্ছে। চাইল্ডস রাইটস প্রোটেকশন বা শিশু অধিকার সুরক্ষা ক্ষেত্র নিয়েও নানা পরিকল্পনা রয়েছে। এমন আরও অনেক এজেন্ডা রয়েছে।
আরও পড়ুন-কোর্টে লড়াই পরাস্ত বিজেপি, মোরবিতে সাকেতের জামিন
প্রশ্ন : মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ প্রশাসন যদি না মানে তাহলে সংশ্লিষ্ট যে উপভোক্তা তিনি কী করবেন?
এটা একটি রেকমেন্ডিং বডি অর্থাৎ প্রাথমিকভাবে আমরা সরকারের কাছে বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয় সুপারিশ করি। যে কমপ্লেনগুলো আসে সেগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব ইনভেস্টিগেশন টিম রয়েছে, সেই টিম দিয়ে আমরা অনেক কেসের ক্ষেত্রে ইনভেস্টিগেট করি। ওই সময় যদি দেখা যায় সত্যি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে তখন আমরা বিভিন্নরকম সুপারিশ করতে পারি। আইনেই সেগুলো বলা আছে কী কী করতে পারি। তবে প্রশাসন না মানলে আইনের সাহায্য নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। কোর্টে গিয়ে ইমপ্লিমেন্ট করাতে হবে। তবে সরকার মানে না এমনটা বললে ভুল বলা হবে। অনেক ক্ষেত্রেই সরকার সেই সুপারিশ অনুযায়ী কাজ করে। সরকার কমপেনসশনের একটা স্কেলও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। তার জন্য নোটিফিকেশন বের করেছে যাতে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবার কথা বলা হয়েছে। জেলে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন খাতে ক্ষতিপূরণে টাকা ন্যূনতম তিন লক্ষ থেকে ন্যূনতম পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-বিয়েবাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, মৃত একাধিক, আহত ৬০
প্রশ্ন: আদালত আগে না মানবাধিকার কমিশন?
আদালত তো আগে বটেই, তবে সকলে তো সবসময় কোর্টে যেতে পারে না। আর্থিক সামর্থ্য থাকে না, এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে বিচার পর্বও বিলম্বিত হয়। যদিও এখন সরকার লিগাল এড সার্ভিসের মতো অনেক কিছু করেছে যেখানে আইনি খরচ পুরো সরকার বহন করছে। জানি না সবাই এই লিগাল এড সার্ভিসের মতো বিষয়গুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কি না। এই সম্পর্কে অ্যাওয়ারনেস নেই। তাই মানবাধিকার কমিশনের কাছেই আসে। মানুষ মনে করেন মানবাধিকার কমিশনে গেলে তাড়াতাড়ি এবং নিখরচায় কাজটা হবে। এবার তারা যখন আসে আমরা যদি দেখি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে আমরা অনেক সময় কমপেনসেশনের জন্যও রেকমন্ড বা সুপারিশ করি। এবং সরকার কিন্তু সেটা দেয়।
প্রশ্ন : মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ অনেক সময় মানতে চায় না সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার। এক্ষেত্রে নিয়মটা ঠিক কী?
আমাদের এখানে মানে না বললে ভুল বলা হবে। সরকার ইমপ্লিমেন্ট করে। তবে মানতে না চাইলে কোর্ট ছাড়া কোনও উপায় নেই। আল্টিমেটলি বিচারটা কোর্টেই হবে।
আরও পড়ুন-তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়া সেল আরও শক্তিশালী হচ্ছে
সর্বসাধারণের জন্য রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে কয়েকটি কথা
মানসম্মানের সঙ্গে, সুস্থ, সবল, শিক্ষা দীক্ষা এবং সুরক্ষার সঙ্গে বাঁচা ও বেঁচে থাকার অধিকার।
আইন মেনে স্বাধীনভাবে ভারতবর্ষের যে কোনও প্রান্তে যাতায়াত, বসবাস, চাকরি, পেশা, ব্যবসা, বাণিজ্য করা।
আইনের চোখে প্রত্যেকের সমানাধিকার বিদ্বেষ ব্যতিরেকে শোষণমুক্ত আইনের শাসনে জীবন ধারণ করা প্রত্যেক ভারতীয়ের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের পর্যায়ে পড়ে। প্রকারান্তরে সেগুলিই মানবাধিকার রূপে স্বীকৃত।
উপরোক্ত অধিকারসমূহ কিংবা কোনও একটির কিংবা তার কোনও ভগ্নাংশের উল্লঙ্ঘন আইনের চোখে অপরাধ এবং ক্ষেত্র বিশেষে শাস্তিযোগ্য। সাধারণত দু’ভাবে মানবাধিকার হরণ হতে পারে। কোনও ব্যক্তি, গোষ্ঠী অথবা পক্ষ দ্বারা কিংবা রাষ্ট্র অথবা রাষ্ট্রীয় কর্তৃবৃন্দ কিংবা আইনের রক্ষক দ্বারা। প্রথম ক্ষেত্রে প্রতিকার পাওয়ার জন্য সাধারণত থানা, পুলিশ এবং আদালতের ব্যবস্থা আছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে প্রতিকার পাওয়ার জন্য মানবাধিকার কমিশন গঠন হয়েছে। তাঁদের কাছে ই-মেল, ডাকযোগে বা সশরীরে হাজির হয়ে অভিযোগ জমা দেওয়া যায়।
আরও পড়ুন-কঠিন ম্যাচেও জয়ের লক্ষ্য ইস্টবেঙ্গলের, আজ সামনে হায়দরাবাদ
কীভাবে লিখিত অভিযোগ জানাবেন
|| ১ || বাংলা, হিন্দি কিংবা ইংরেজি যে কোনও ভাষায় অভিযোগ করা যেতে পারে।
|| ২ || অনধিক দুশো শব্দের মধ্যে করতে হবে। টাইপ করা হলে ভাল।
|| ৩ || অভিযোগের সারমর্ম, ঘটনার দিন, তারিখ, সময় এবং সাক্ষ্য-প্রমাণাদি সহ দরখাস্ত করলে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে।
|| ৪ || অভিযোগকারীর ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিতে হবে। ই-মেল অ্যাড্রেস থাকলে তাও জানান।
|| ৫ || ঘটনা ঘটার তারিখ থেকে এক বছরের মধ্যে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে হবে। এক বছর আগের ঘটনার কোনও অভিযোগ নিষ্পত্তি করার এক্তিয়ার কমিশনের নেই।
|| ৬ || অভিযোগটি অবশ্যই চেয়ারপার্সন, পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনকে উদ্দেশ্য করে লেখা বাঞ্ছনীয়।
|| ৭ || একই অভিযোগ একাধিক কমিশনের কাছে করলে ফল পাওয়া দুষ্কর হতে পারে।
|| ৮ || অভিযোগটি পূর্বে ব্যবহৃত কোনও অভিযোগের ফটোকপি হলেও একই ফল হতে পারে। মনে রাখবেন যাঁরা আপনার অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন তাঁদের বিরক্তির উদ্রেক হয় এমন কিছু করা আপনার অভিযোগের জন্যই ক্ষতিকর।
|| ৯ || পারিবারিক কলহ, স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ, বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়া বিবাদ, পাওনাদার-দেনাদারের বিবাদ, মালিক-কর্মচারীর বিবাদ, শরিকি বিবাদ বা এমন বিবাদ যা দেওয়ানি আদালতের অন্তর্ভুক্ত বা যা ফৌজদারি বিচারাধীন বিবাদ অথবা নিষ্পত্তি হয়েছে এমন বিষয়গুলি মানবাধিকার কমিশনের কোনও এক্তিয়ারভুক্ত নয়।
|| ১০ || অভিযোগটিতে স্বাক্ষর করতে টিপসই দিতে ভুলবেন না। জরুরি তথ্য গোপন করবেন না। তাহলে অভিযোগটি পত্রপাঠ খারিজ হয়ে যেতে পারে।
|| ১১ || একই অভিযোগ ভিন্ন ভিন্ন নামে কিংবা বারে বারে করবেন না। প্রয়োজন হলে আপনার অভিযোগটি কী অবস্থায় আছে জানার জন্য কমিশনের ওয়েবসাইটে লগ-ইন করে দেখে নিতে পারেন।
|| ১২ || অভিযোগের কোনও বিশেষ বিষয় সম্বন্ধে কমিশন দেখছেন না এমন মনে হলে পুনর্বিচারের জন্য মূল অর্ডারের কপি পাওয়ার পর অনধিক দু’মাসের মধ্যে দরখাস্ত করতে পারেন।
|| ১৩ || জেনে-শুনে কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা অথবা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই ধরনের অভিযোগ করা হলে, কমিশন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারে।
|| ১৪ || আর্তের সেবা, তাঁদের আবেদনে সাড়া, দুঃস্থের প্রতি সহানুভূতি, দুর্বলের পাশে দাঁড়ানো, অন্যায়ের প্রতিবাদ মানুষ মাত্রেরই কর্তব্য এবং ভারতীয় সংবিধানে ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংশোধন দ্বারা এটি মৌলিক কর্তব্যরূপে স্থান পেয়েছে। যে সমস্ত নাগরিক এই কাজে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন এবং উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশন একটি করে সেবা শংসাপত্র প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।