প্রতিবেদন : সব ক্ষেত্রে বাংলাকে চরম বঞ্চনা করার পরও নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৫ বছরে পশ্চিমবঙ্গে কমেছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা। সোমবার সন্ধ্যায় বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নীতি আয়োগ। সেখানে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দারিদ্রের দিক থেকে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির থেকে অনেক ভাল অবস্থায় রয়েছে বাংলা। নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্যাপ্ত খাদ্য, জীবনধারণের মান, শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে অন্যান্য ডবল ইঞ্জিন শাসিত রাজ্যের থেকে বহু ক্ষেত্রেই এগিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বহুমাত্রিক দারিদ্রের হার ২০১৫-১৬ সালের ২৪.৮৫ শতাংশ কমে ২০১৯-২১ সালে হয়েছে ১৪.৯৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন-ভাঙনের কারণ কেন্দ্রের বঞ্চনা
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে গরিব মানুষের হার ছিল ২১.২৯ শতাংশ। ২০১৯-২০২১ সালের রিপোর্টে সেটা কমে হয়েছে ১১.৮৯ শতাংশে। এর ফলে কেন্দ্রই স্বীকার করল, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলে বাংলার যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে।
২০১৯-২০ সালের জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, বিহারে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩৩.৭৬ শতাংশ। উত্তরপ্রদেশে তা ২২.৯৩ শতাংশ। অসমে ১৯.৩৫, অরুণাচল প্রদেশে ১৩.৭৬ শতাংশ। পর্যাপ্ত পুষ্টির ক্ষেত্রেও সবচেয়ে পিছিয়ে বিহার। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, অসমের থেকে অনেক এগিয়ে বাংলা। পর্যাপ্ত খাবারের ক্ষেত্রে বিহারের ৪২.২০ শতাংশ মানুষ বঞ্চিত। মোদি-শাহর রাজ্য গুজরাতে পর্যাপ্ত খাবারটুকু জোগাড় করতে পারেন না ৩৮.০৯ শতাংশ মানুষ। উত্তরপ্রদেশ ও অসমের ক্ষেত্রে এই হার ৩৬.৪৩ ও ৩১.৮৩ শতাংশ। মহারাষ্ট্রে ৩২.২৯ শতাংশ এবং মধ্যপ্রদেশে ৩৪.৬৩ শতাংশ মানুষের মানুষের পর্যাপ্ত খাবার জোটে।
শিশু ও কিশোর অবস্থায় মৃত্যুর ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গের থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে ডবল ইঞ্জিনের উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, হরিয়ানা, ত্রিপুরা, অসমের মতো রাজ্যগুলি। শিশু ও কিশোর অবস্থায় মৃত্যুর হার উত্তরপ্রদেশে ৩.৫৪ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ২.৩২ শতাংশ, হরিয়ানায় ১.৮৫ শতাংশ, গুজরাতে ১.৮১ শতাংশ। শীর্ষে থাকা বিহারে এই হার ৪.১৪ শতাংশ। ত্রিপুরা ও অসমে যথাক্রমে ১.৫৫ এবং ১.৭৭ শতাংশ। তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে শিশু ও কিশোরের মৃত্যুর হার ১.০৬ শতাংশ। প্রসূতিদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও বিজেপি শাসিত গুজরাত উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরা, মণিপুর, অসম, উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যগুলির থেকেও বাংলার অবস্থা অনেক ভাল। সারা দেশে পানীয় জল প্রকল্পের ব্যপক প্রচার করা হলেও মোদি-শাহর রাজ্য গুজরাত-সহ বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যের থেকে পানীয় জলের জোগানে এগিয়ে বাংলা।