প্রতিবেদন : বিজয়া শেষে মা পাড়ি দিয়েছেন কৈলাসে। তবু এখনও দুর্গোৎসবের রেশ কাটেনি। এখনও পুজো শেষে ঠাকুর দেখা বাকি। আর এ ক’দিন বাংলার আকাশ-বাতাস যখন শারদ বন্দনায় মুখরিত, চতুর্দিকে যখন আলো ঝলমলে পরিবেশ, তখন জয়পুরের ‘লক্ষ্মীগ্রাম’ খালনায় চলে লক্ষ্মী-উৎসবের নীরব প্রস্তুতি।
আরও পড়ুন-ছুটি শেষ, বিরাটরা এবার লখনউয়ে
এ গ্রামে বিজয়া দশমী কাটলেই উদ্যোক্তারা মাতেন লক্ষ্মীপুজোর মণ্ডপ, প্রতিমাসজ্জার থিম ও বিষয় ভাবনায়। শুরু হয়ে যায় মণ্ডপসজ্জার কাজ। হাতে মাত্র চারদিন। তার মধ্যেই চোখধাঁধানো লক্ষ্মীপুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়ে যায়। থিম, চাকচিক্যে ভরা মণ্ডপ, যা চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে দুর্গাপুজোর কলকাতাকেও। আসলে এ গ্রামে একদিন নয়, হয় তিনদিনের লক্ষ্মী উৎসব। এই লক্ষ্মী আরাধনাই খালনাকে করে তুলেছে স্বতন্ত্র। তা খালনাকে নতুন পরিচিতি দিয়েছে। খালনা হয়ে উঠেছে বাংলার ‘লক্ষ্মীগ্রাম’।
আরও পড়ুন-লেজার শো নিয়ে বিরক্ত ম্যাক্সওয়েল
দুর্গোৎসবের পর প্রতিমা নিরঞ্জন হতে না হতেই এ গ্রামে পড়ে যায় সাজসাজ রব। কারণ স্বাভাবিক নিয়মেই বিজয়া দশমীর চারদিন পরেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর চন্দ্রালোকিত রাত এসে পড়ে। তিনশো বছরের সুপ্রাচীন লক্ষ্মীপুজোগুলো এখানে শুধু ঐতিহ্যের স্মারক নয়, থিমনির্ভর ও বিষয় ভাবনায় স্বতন্ত্র।
সুপ্রাচীন ঐতিহ্য সমন্বিত এই পুজোর সঙ্গে আজ আধুনিকতার স্পর্শ লেগেছে। অভিনবত্ব বিরাজ করে মণ্ডপে মণ্ডপে। খালনার লক্ষ্মীপুজোয় সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের চারুময়ী লক্ষ্মীতলা, কৃষ্ণরায়তলা, ক্ষুদিরায়তলার পুজো তো আছেই, বারুইপাড়া মিলন সংঘ, খালনা হরিসভার আমরা সবাই, খালনা বাজারের আমরা সকলের পুজোও তাক লাগিয়ে দেয়। জয়পুরের খালনায় ৩৫টি বড় বাজেটের পুজো-সহ মোট দেড়শোর বেশি বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো হয়।
আরও পড়ুন-বিশ্বকাপেই অনিশ্চিত হার্দিক, গ্রেড ওয়ান লিগামেন্ট টিয়ারের আশঙ্কা, সারতে অন্তত দু’সপ্তাহ
হাওড়ার প্রাচীন গ্রাম খালনা। বণিক সম্প্রদায় অধ্যুষিত এই গ্রাম। খালনার মানুষের ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি থেকেই উদ্ভব হয় এ গ্রামের লক্ষ্মীপুজোর। ক্রমেই দৃষ্টিভঙ্গির বদল ঘটে। কালের নিয়মে সেই পুজো এখন উৎসবে পরিণত। এই উৎসবমুখর লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামজুড়ে তৈরি হয় এক অলৌকিক পরিমণ্ডল।