সুস্মিতা মণ্ডল, পাথরপ্রতিমা: আইলা, আমফান থেকে ইয়াস। একাধিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার অচিন্ত্যনগর পঞ্চায়েত। চারদিক মৃদঙ্গভাঙা, পাখিরালা নদী ও বঙ্গোপসাগর দিয়ে ঘেরা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বিষ্ণুপুর গ্রাম। কৃষি ও মাছচাষের ওপর নির্ভরশীল এই গ্রামের মহিলারা। কেউ নদীতে মিন ধরেন, কেউ পানের বরজে কাজ করেন।
আরও পড়ুন-দায়িত্ব নিয়েই সমাধানসূত্র
দুর্গাপুজোর মাস দুই আগে থেকে গ্রামের মহিলাদের ব্যস্ততা বাড়ে। প্রতি রবিবার দুপুরে বসে দুর্গোপুজোর প্রস্তুতি বৈঠক। সেখান থেকে পুজোর পরিকল্পনা হয়। গত পনেরো বছর গ্রামের জনা চল্লিশ মহিলা দ্বীপে আয়োজন করছেন দুর্গোৎসবের। চাঁদাতোলা, প্রতিমাশিল্পী, ডেকরেটর, লাইটের বায়না দেওয়া সবই করে থাকেন মহিলারা। পুজোর ক’টা দিন আটপৌরে সাদামাঠা গ্রাম্য মহিলাদের স্বপ্নপূরণের দিন। আড়ম্বর নেই। কিন্তু এই পুজো আন্তরিকতায় একশো শতাংশ। পুজোর ক’টা দিন দেবী মহামায়ার কাছে রিনা, সবিতা, অঞ্জলিদের একটাই প্রার্থনা— স্বামী-সন্তান-পরিজন নিয়ে ঝড়ঝঞ্ঝা থেকে রক্ষা পাওয়া।
আরও পড়ুন-বোনাস হাতে পেয়ে পুজোয় খুশির হাওয়া চা-বলয়ে
পুজো কমিটির সভাপতি মধ্য চল্লিশের রিনা মাটিয়া জানালেন, একসময় গ্রামের পুরুষেরা পুজো করতেন। উদ্যোগীদের সংখ্যা কমতে থাকায় পুজো বন্ধ হতে চলেছিল। তখনই গ্রামের মহিলারা এগিয়ে আসে। সদস্য লক্ষ্মী মান্না জানালেন, পুরুষেরা বিদ্রুপ করেছিল। আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি। গতবছর থেকে সরকারি অনুদান মিলছে। ফলে উদ্বেগ কমেছে।