কাতার বিশ্বকাপের বিস্ময় স্টেডিয়াম ৯৭৪

কোনও স্টেডিয়ামের নাম এরকম হয় আগে কেউ কখনও শোনেনি। আসলে এটি হল কাতারের ইন্টারন্যাশনাল ডায়ালিং কোড নম্বর (৯৭৪)

Must read

প্রবীর ঘোষাল, দোহা: বিশ্বকাপের আয়োজক হিসাবে কাতার এবার অনেক ভেলকি দেখিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল, স্টেডিয়াম ৯৭৪। কোনও স্টেডিয়ামের নাম এরকম হয় আগে কেউ কখনও শোনেনি। আসলে এটি হল কাতারের ইন্টারন্যাশনাল ডায়ালিং কোড নম্বর (৯৭৪)। পুরো স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়েছে দোহার সমুদ্রবন্দর থেকে আনা রিসাইকেলড শিপিং কন্টেনার ও স্টিল দিয়ে। বালি-সিমেন্টের কোনও কারবার নেই। দর্শক আসন ৪৪ হাজার ৮৯।

আরও পড়ুন-মরক্কোকে হালকাভাবে নিচ্ছে না ফ্রান্স

আরও চমক হল, পুরো স্টেডিয়ামটি বিশ্বকাপের পর গুটিয়ে ফেলার কথা ছিল। গতকাল থেকে প্যান্ডেলের মতো খোলাখুলির কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। নতুন বছরে পা দিতেই জায়গাটা ফাঁকা মাঠ হয়ে যাবে। মঙ্গলবার সকালে দোহার প্রাণকেন্দ্র থেকে দশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ৯৭৪ স্টেডিয়ামের সামনে গিয়ে হাজির হয়েছিলাম। আরব সাগরের তীরে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে স্টেডিয়ামটিকে ঘিরে রয়েছে বড় বড় হোটেল। সবই নতুন। মরুভূমির দেশে এই অঞ্চলের সবুজের সমারোহ দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। কাতার বিশ্বকাপের খেলা হচ্ছে ৮টি স্টেডিয়ামে। তার মধ্যে একমাত্র এই স্টেডিয়ামটি বাতানুকূল নয়। সমুদ্রের হাওয়া দর্শকদের মন জুড়িয়ে দিয়েছে। প্রকৃতির কাছে যেন হার মেনেছে বিজ্ঞান।

আরও পড়ুন-‘তোমরাই দেশের ভবিষ্যত, কখনও ভয় পাবে না’ প্রাক-বড়দিনে শিশুদের বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

৯৭৪ স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে ছ’টি খেলা হয়েছে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, ডেনমার্কের মতো নামী দেশগুলি খেলেছে। স্টেডিয়ামের সব আসন ভরে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা-পোল্যান্ড ম্যাচে। প্রথমে স্টেডিয়ামে ঢুকতে গিয়ে বাধা পেলাম। বিশালদেহী কাতার পুলিশের আফ্রিকান সার্জেন্ট গেট আগলে দাঁড়ালেন। অনেক কাকুতি-মিনতির পর অনুমতি দিলেও, ফটো তুলতে নিষেধ করলেন। বাইরে অবশ্য বেশ কিছু পর্যটক এসেছেন স্টেডিয়ামটি পর্যবেক্ষণ করতে। তার মধ্যে নাইজেরিয়ার লোমচুও ছিলেন। মধ্যবয়সি। তাঁর সঙ্গী ওকেরোর ছেলে আবার নাইজেরিয়া যুব ফুটবল দলের স্ট্রাইকার। দুই বন্ধু এই নিয়ে তিনটি বিশ্বকাপ দেখতে এসেছেন। তাঁদের মনে দৃশ্যমান স্টেডিয়াম সত্যিকারেরই বিস্ময়ের। ৯৭৪ স্টেডিয়ামটি দেখতে আসা কলকাতার লেডিস পার্কের বাসিন্দা অনাদি বিশ্বাস এবং হাবড়ার অর্ণব ঘোষের গর্ব, এইরকম একটি অভিনব নির্মাণকর্মের মাথায় কিন্তু একজন বাঙালি।

আরও পড়ুন-‘মুখরোয় এত বড় ঘটনা ঘটল, মুখ্যমন্ত্রী কী করছিলেন’ নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য,পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূল সুপ্রিমো

স্টেডিয়ামে কন্টেনার খোলার কাজে ব্যস্ত ঠিকাশ্রমিক নেপালের প্রধান, ফিলিপিন্সের সুকো আর শ্রীলঙ্কার রমনের আনন্দ কাজের সুবাদে বিনা পয়সায় তাঁদের বিশ্বকাপের ম্যাচগুলি দেখা হয়ে গিয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার একটি বিচিত্রানুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হবে ৯৭৪ স্টেডিয়ামের অস্তিত্ব। অবশ্য সব কাজ মিটতে আরও কয়েকটা দিন লাগতে পারে।

Latest article