খারকিভে তীব্র রুশ হামলা

Must read

প্রতিবেদন : যে কোনওভাবেই হোক না কেন ইউক্রেনকে নিজেদের দখলে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাশিয়া। পুতিন বাহিনীর আক্রমণে আগেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল ইউক্রেনের মারিউপোল শহর। এবার উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভেও (Ukraine, kharkiv) একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল রাশিয়া। শনিবার একের পর এক রুশ গোলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এই শহরের (Ukraine, kharkiv)। খারকিভের পাশাপাশি মাইকোলিভ শহরেও এদিন ব্যাপক গোলাগুলি চালিয়েছে রাশিয়া (Russia)। এরইমধ্যে রাশিয়াকেও পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে ইউক্রেনীয় সেনা। শনিবার ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, এই যুদ্ধে রাশিয়ার বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাশিয়া আগেই জানিয়েছিল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকা ইউক্রেনকে কোনওরকম অস্ত্র পাঠালে সেগুলি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। সেই মতোই শুক্রবার রাত থেকেই রাশিয়া ইউক্রেনের একাধিক অস্ত্রভাণ্ডারে ব্যাপক হামলা চালায়। ইউক্রেনীয় সেনা যাতে পাল্টা হামলা চালাতে না পারে সেজন্য শনিবার খারকিভ শহরে তিনটি সেতু উড়িয়ে দিয়েছে পুতিন বাহিনী। ধ্বংস করে দিয়েছে একটি মিউজিয়াম। এরইমধ্যে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি দাবি করেছেন, রুশ হামলায় মারিউপোল শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ইউক্রেনের সাংবাদিক আলেকজান্ডার মেকভ। প্রয়াত সাংবাদিকদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিধায়কদের নমুনা স্বাক্ষর

অন্যদিকে আজভস্টল ইস্পাত কারখানায় আটকে থাকা সাধারণ নাগরিক ও সেনাদের উদ্ধারের কাজ চলছে। যুদ্ধের কারণে প্রায় দু’মাস তাঁরা ওই ইস্পাত কারখানার বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই বাঙ্কার থেকে সদ্য বেরিয়ে আসা ২৪ বছরের তরুণী অ্যানা জেইতসেভ জানিয়েছেন, এই দু’মাস তাঁরা নিয়মিত পেটভরে খেতে পাননি। মেলেনি পর্যাপ্ত পানীয় জল। পানীয় জল বলতে বৃষ্টি ও তুষারপাতই ছিল ভরসা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় জমে যাওয়া বরফ গলিয়ে তাঁরা পানীয় জল পেতেন। খাবার নিয়ে পরিবারের সদস্যের মধ্যে প্রায়ই কাড়াকাড়ি চলত। এমনকী, মাঝে মাঝেই বাঙ্কারের ভিতরে অক্সিজেনেরও ঘাটতি হত। এভাবেই নিদারুণ কষ্টের মধ্যে তাঁরা সেখানে দু’মাস কাটিয়েছেন। যখন-তখন বোমাবর্ষণ, ঘনঘন সাইরেনের শব্দ, উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্রের প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে তাঁরা বাঙ্কারের মধ্যেও ভয় ও আতঙ্কে কেঁপে উঠতেন। ঠিকমতো খেতে না পেয়ে এই দু’মাসে তাঁর ২০ পাউন্ড ওজন কমে গিয়েছে। একই পরিস্থিতি তাঁর মা-বাবা ও শিশুসন্তানের। অ্যানা আরও জানিয়েছেন, বাঙ্কারের নিচে খুপরি ঘরগুলির চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বহু পরিবার দিন কাটাতে বাধ্য হয়েছে। প্রতি মুহূর্তেই প্রাণসংশয়ের আশঙ্কায় ভুগতেন তাঁরা। বাঙ্কার থেকে বেরিয়ে এসে দিনের আলোর মুখ দেখে তাঁরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন। তবে অ্যানা জানেন না, এই স্বস্তি কতক্ষণ স্থায়ী হবে।

Latest article