প্রতিবেদন : পঞ্চায়েত দখল করার পরিকল্পনা থেকেই আমার স্বামীকে খুন করল সিপিএমের হার্মাদরা। সইফুদ্দিন লস্করের খুনের পর হাহাকার করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন তাঁর স্ত্রী ও তৃণমূল পরিচালিত বামনগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান সেরিফা বিবি লস্কর। আমার স্বামী এই অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। মানুষের বিপদে পাশে থাকত। এই পঞ্চায়েতটা দখল করতে চেয়েছিল সিপিএম। এলাকায় সিপিএমের দাদাগিরি বন্ধ হয়ে গেছিল। তাঁর সংযোজন, নিজেদের জমি ফেরত পেতে আমার স্বামীকে খুন করেছে ওরা। এই খুনের বদলা চাই। আইন যেন ওদের শাস্তি দেয়, বলতে বলতেই কান্নায় লুটিয়ে পড়লেন সেরিফা বিবি।
আরও পড়ুন-বহু জেলায় নতুন মুখ, সঙ্গে ৪ রাজ্য সম্পাদক, নদিয়ার সভানেত্রী মহুয়া মৈত্র
সোমাবার কাকভোরে বাড়ির কাছেই মসজিদে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় সিপিএমের ভাড়াটে খুনিদের অতর্কিত হামলায় খুন হয়ে গেলেন জয়নগর থানার অন্তর্গত বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সইফুদ্দিন লস্কর (৪৩)। তিনি আবার বামনগাছি অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতিও। মৃত সইফুদ্দিন লস্করের স্ত্রী সেরিফা বিবি লস্কর, ওই বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতেরই তৃণমূলের পঞ্চায়েতের প্রধান। গুলির শব্দ শুনেই লোকজন ছুটে আসে এবং তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জয়নগর এক নম্বর ব্লকের পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে এলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। জেলার পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানান, দুটি বাইকে মোট চারজন ভাড়াটে খুনি এসেছিল। একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
আরও পড়ুন-লৌহকপাট বিতর্ক : ক্ষমা চাইল টিম পিপ্পা
একজন মারা গিয়েছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে কী কারণে মৃত্যু তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুটি দেহই এদিন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ঘটনার খবর পেয়েই এদিন পদ্মেরহাট হাসপাতালে ছুটে আসেন স্থানীয় বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার তৃণমূলের বিধায়ক বিভাস সরদার। বিভাসবাবুর দাবি, দুষ্কৃতীরাই এই নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত দুই অভিযুক্তকে ধরতে পেরেছে। হাসপাতালে আসেন জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস। তিনি বলেন, এই খুনের দায় বিজেপি ও সিপিএমের। আরেক তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা বলেন, লোকসভা ভোটে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে জেনেই এই খুন পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। সাইফুদ্দিনের বাবা ইলিয়াস লস্কর বলেন, আমার ছেলে কারোর শত্রু হতে পারে না, ছেলেকে ওরা আমার বুক থেকে কেড়ে নিল। ও তো সমাজের ভাল কাজ করত। কারও কোনওদিন কিছু ক্ষতি করেনি আমার ছেলেটাকে মেরে দিল হার্মাদরা। এর বিচার চাই।
আরও পড়ুন-সত্যিই কি টাইম ট্রাভেল সম্ভব
ঘটনার তদন্তে জয়নগরের বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যুট আউটের ঘটনাস্থল মরিশ্বর বাঙাল বুড়ির মোড় পরিদর্শন করেন এডিজি সাউথ বেঙ্গল সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, ডিআইজি প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ আকাশ মাঘারিয়া। ঘটনাস্থলে এসে সাধারণ বাসিন্দা, পুলিশ সুপার, জয়নগর থানার আইসির সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তিনি আশ্বাস দেন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের ধরবেন। তদন্তের স্বার্থে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিআইডির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।