ইভটিজিং, রাজনৈতিক অভিসন্ধি, ক্লাব ভাঙচুর! উত্তপ্ত মুচিপাড়া

Must read

প্রতিবেদন : প্রথমে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ। তার জেরে ক্লাব ভাঙচুর। এই দুই ঘটনার জেরে শুক্রবার দুপুরে ধুন্ধুমার মধ্য কলকাতার মুচিপাড়া থানা এলাকা। ঘটনায় তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় বিজেপি নেতা সজল ঘোষকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার পর স্থানীয় ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপি নেতা সজল ঘোষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান।

আরও পড়ুন : ‘মূর্খ’, তথাগতর নিশানায় এবার দিলীপ ঘোষ

অভিযোগ পেয়ে বিজেপি নেতার বাড়িতে যায় মুচিপাড়া থানার পুলিশ। বাইরে থেকে বারবার তাঁকে বেরিয়ে আসতে অনুরোধ জানান পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু তাদের অনুরোধে কান দেননি অভিযুক্ত বিজেপি নেতা। তিনি বারবারই ঘরে ঢুকে তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি জানান।

আরও পড়ুন : “কন্যাশ্রী” বানান কাণ্ড: দিলীপ ঘোষকে বর্ণপরিচয় পাঠালেন কংগ্রেস নেতা

এরপর বাড়ির দরজা ভেঙে বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুচিপাড়া থানার বাইরে। ধৃতদের শাস্তির দাবিতে একজোট হয়েছেন ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতৃত্ব। ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাতে। স্থানীয় এক তরুণী বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ তখন স্থানীয় কিছু দূষ্কৃতী তাঁর শ্লীলতাহানি করে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার প্রতিবাদ জানান। একটি ক্লাবে ভাঙচুরও করা হয়। অভিযোগ এর জবাবে সজল ঘোষের দলবল শুক্রবার সকালে স্থানীয় একটি দোকানে ভাঙচুর করে, দোকানের বেশ কিছু টাকা পয়সাও খোয়া যায়। দোকান ভাঙচুরের ঘটনায় ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত থাকার অভিযোগ জানিয়ে মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ জানান এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই অভিযোগের জেরেই এদিন বিকেলে তাঁর বাড়ি থেকে বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও তৎপর রয়েছে পুলিশ। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।

বিজেপি বলেই কী পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে সজল ঘোষকে গ্রেফতার করলো? এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “সজল তৎকাল বিজেপি। ও হুজুগে পড়ে ভোটের আগে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছে। ওর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। গ্রেফতার হওয়ার সময় টিভিতে দেখলাম ও বিজেপি জিন্দাবাদ বলেছেন চেঁচাচ্ছে। কিন্তু ওর সঙ্গে তখন বিজেপির চারটে লোকও ছিল না। ওর বিজেপিতে যাওয়া ঠিক হয়নি। আর বারবার দলবদল করায় ওর রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। ও কী ধরনের অপরাধ করেছে, অন্যায় করেছে, তার মধ্যে আমি ঢুকছি না। কিন্তু বারবার দলবদল করাটা ঠিক হয়নি।”

এরপরই ঘটনা প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, ” কাল রাতে একটা অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। কিছু অধুনা বিজেপির লোকেরা বিজেপি করে এক মহিলাকে রাস্তায় অসম্মান করেছে। সেটা ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। ওই মহিলা যখন থানায় অভিযোগ জানাতে যাচ্ছেন, তখন সজলের বিষয়টির মধ্যে ঢোকা ঠিক হয়নি। কারণ, সজল ওই ওয়ার্ডের নয়, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের। অনেক দায়িত্বের সঙ্গে ওর বিষয়টি সামলানো উচিত ছিল। তবে দরজা ভেঙে সজলকে গ্রেফতার করার বিষয়টি সেই সময় কতটা জরুরি ছিল, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। কারণ, এ ধরনের দৃশ্যের অবতারণা হলে যে অভিযুক্ত তার পক্ষেই সহানুভূতি চলে যায়। দরজা ভাঙ্গার দৃশ্যটি তাই মিডিয়ার সামনে হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল না। ওর রাজনৈতিক ফাঁদে পা দিয়েছে পুলিশ। তবে সজলেরও ভূমিকাও ঠিক ছিল না। পুলিশ ডাকলে ওর বেরিয়ে এসে সহযোগিতা করা উচিত ছিল।”

Latest article