প্রতিবেদন : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল দলের উপর কারও কোনও অভিযোগ নেই। এলাকার কিছু মানুষ অন্যায় করেছিল। তাদের বিরুদ্ধেই মানুষ সোচ্চার হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যাতে কালিমালিপ্ত না হয় তার জন্যই মিছিল করে ছিল। যারা অন্যায় করেছিল তাদের শনাক্ত করার জন্য। সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali Issue) মানুষের সঙ্গে কথা বলার পর এমনটাই জানান সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। সেচ ও অগ্নি সম্পর্কিত কিছু সমস্যা থাকায় শনিবার সন্দেশখালি পরিদর্শনে আসেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। রাজ্যের দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী সন্দেশখালি এলাকায় সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। মানুষের দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে এলাকা ঘুরে নদীর নোনা জল চাষের জমিতে ঢুকিয়ে মাছ চাষের চারটি পয়েন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। একাধিক ব্রিজ, রাস্তা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন দুই মন্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এলাকার বিধায়ক সুকুমার মাহাতো, দুই মন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকরা। তৃণমূলের দুই মন্ত্রী এলাকায় ঢুকতেই শঙ্খ বাজিয়ে ও উলুধ্বনি দিয়ে তাদের স্বাগত জানানো হয়। তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য রাস্তার দু’ধারে মানুষের ঢল নামে। এদিন পার্থ ভৌমিক আরও বলেন, এক্স, ওয়াই, জেড যে-ই অন্যায় করুক না কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার তাকে ক্ষমা করবে না। দলের কেউ অন্যায় করলে এবং তা প্রমাণিত হলে দলও তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কেউ ছাড় পাবে না। মানুষ অভিযোগ করলে তার তদন্ত হবে, সমস্যা থাকলে সমাধান হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ গোটা তৃণমূল কংগ্রেস দল সন্দেশখালির (Sandeshkhali Issue) মানুষের পাশে আছে। তবে সিপিএম ও বিজেপি আবারও পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। দমকলমন্ত্রী তথা বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত সুজিত বসুও বলেন, অন্যায় করলে কেউ রেয়াত পাবে না। রাজ্য সরকার, পুলিশ প্রশাসন মানুষের সমস্যার সমাধানে লাগাতার কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৫৪টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে দেড়শো অভিযোগ তদন্ত করে শর্ট আউট করা হয়েছে। এবং একশো মানুষকে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে জমি, টাকা, খেলার মাঠ পুলিশ প্রশাসন ও দলের তরফে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে ক্যাম্পে গিয়ে জানাতে পারেন, সমস্যার সমাধান পুলিশ-প্রশাসন করবে। প্ররোচনায় পা দিয়ে এলাকা উত্তপ্ত বা উত্তেজনা না ছড়িয়ে পুলিশ-প্রশাসনকে সুষ্ঠুভাবে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার আবেদনও করেন সুজিত।
এদিন দুপুরে ধামাখালি থেকে লঞ্চে করে দুই মন্ত্রী সন্দেশখালিতে আসেন। এলাকা ঘুরে দেখেন, মানুষের সমস্যা শোনেন। নদীবাঁধ কেটে চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে জোর করে মাছ চাষের যে অভিযোগ উঠেছিল তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন সেচমন্ত্রী ও দমকলমন্ত্রী। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ব্রিজ, ঢালাই রাস্তা, দুর্বল নদীবাঁধ মেরামতের আশ্বাসও দেন তাঁরা। দুই মন্ত্রীর উপস্থিতি ও মানুষ তাদের সমস্যার কথা বলতে পারায় ও সমস্যার সমাধানের আশ্বাস পাওয়াতে বেজায় খুশি সন্দেশখালির মানুষ।