সংবাদদাতা, মালদহ ও রামপুরহাট : সংসারে অনটন। বাবা উপার্জনের জন্য ছাদ ঢালাইয়ের কাজেও যান। কিন্তু সব বাধাকে দূরে সরিয়ে হাই মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিল মালদহের রতুয়ার ভাদো এলাকার সারিফা খাতুন। ৮০০-র মধ্যে ৭৮৬ পেয়েছে সে। স্থানীয় ভাদো মুসলিম গার্লস মিশনে পড়াশুনা করলেও সরিফা পরীক্ষা দিয়েছিল ভাদো বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসা থেকে। সারিফার সঙ্গেই পড়াশুনা করত ভাদোর ইমরানা আফরোজ। ইমরানাও রাজ্যে দ্বিতীয় হয়েছে। ইমরানার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭৫। এছাড়া ওই গার্লস মিশনের আরও দুই ছাত্রী আনজুমানআরা খাতুন ও মাহিদা খাতুন ভাদো বটতলা হাই মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল।
আরও পড়ুন-হুমকি ফোন পেত সরস্বতী
৭৬৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে যুগ্মভাবে দশম হয়েছে। বীরভূমের জেলার ৩১টি মাদ্রাসার মধ্যো ২৩টি মাদ্রাসা, চারটি সিনিয়র এবং চারটি জুনিয়র মাদ্রাসার মধ্যে মাদ্রাসা ও সিনিয়র মাদ্রাসার আলিম ও ফাজিলের ফল প্রকাশ হল। জেলায় ১৩টি পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল। মাদ্রাসা ও সিনিয়র মাদ্রাসার আলিম ও ফাজিল মিলে ৩৩২৮ জন পরীক্ষার্থী ছিল। যার মধ্যে ৬৫ শতাংশ মহিলা পরীক্ষার্থী। হাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় ভাদো এলাকার চার ছাত্রীর ফলাফল বের হতেই এদিন গোটা এলাকাজুড়েই খুশির আবহ ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন-দুয়ারে সরকার শিবিরে পড়ুয়ারা
ইমরানা ও মাহিদার বাবা শিক্ষকতা করেন। আনজুমানআরার বাবা ক্ষুদ্র চাষি। কিন্তু সারিফার বাবা ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালান! তার পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে সারিফা ছোট! সারিফার বাবা উজির হোসেন বাড়ির সামনেই ঠেলাগাড়িতে করে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি ঢালাইয়ের কাজ হলে বাড়তি রোজগারের আশায় সেখানেও শ্রমিকের কাজে যান। ফলে মিশনের তার মাসের টিউশন ফি এখনও দিতে পারেনি সারিফা। কিন্তু ইচ্ছেশক্তি আর সংকল্প থাকলে যে সবকিছুই সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছে সারিফা।