প্রতিবেদন : মণিপুরের হিংসা নিয়ে নিষ্ক্রিয় ও মৌন থাকার খেসারত দিতে গিয়ে মিজোরামে সভা বাতিল প্রধানমন্ত্রীর। মণিপুরের অশান্তি সামলাতে ব্যর্থ কেন্দ্রের মোদি সরকার। শুধু তাই নয়, এই বিষয়টি নিয়ে কার্যত নীরব থেকেছেন নরেন্দ্র মোদি। দেশবিদেশের বহু ঘটনায় বহু প্রতিক্রিয়া দিলেও মণিপুরের জাতিহিংসার ইস্যু পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-উৎসবের আলো
বিজেপি-শাসিত ওই রাজ্যে জনজাতি সংঘর্ষে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু নিয়েও উদাসীন মনোভাব দেখিয়েছেন তিনি। বিশেষত মণিপুরের সংখ্যালঘু কুকি-জো সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন বা গির্জা পোড়ানোর মতো ঘটনা নিয়ে তাঁর কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। সাম্প্রদায়িক অঙ্কেই বিজেপির এই পদক্ষেপ বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। আর এবার মিজোরামের ভোটে মণিপুর ইস্যু ছায়া ফেলতেই অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপি নেতারা। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেও লাভ না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রচারসভাই বাতিল করতে হল। মণিপুরের পাশের রাজ্য মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। জানা গিয়েছে, প্রতিবেশী রাজ্যের অশান্তির জেরে মিজোরামে অস্বস্তিতে পড়তে পারেন মোদি, অনুমান করে শেষ মুহূর্তে সভা বাতিল হয়েছে।
আরও পড়ুন-দুঃখবিলাসী উমার দালান
সোমবার মিজোরামে বিধানসভা ভোটের প্রচার করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। যদিও শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর সভা বাতিল করা নিয়ে স্পষ্টভাবে কোনও কারণ জানায়নি বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি ভানলালমুয়াকা জানান, প্রধানমন্ত্রী আসছেন না। পরিবর্তে সভা করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যদিও সেটাও নিশ্চিত নয়। সোমবার মিজোরামে সভা করার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতন গড়কড়ির। ২০১৭ সাল থেকে মিজোরামে এমএনএফ এবং বিজেপির জোট সরকার চলছে। ৪০ সদস্যের মিজোরাম বিধানসভায় বর্তমানে বিজেপির মাত্র একজন বিধায়ক রয়েছেন। ৪০ আসনের পার্বত্য রাজ্যটিতে ৭ নভেম্বর বিধানসভা নির্বাচন। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে সভা করবেন না। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের মনোভাবের কারণেই এই সিদ্ধান্ত তাঁর।
আরও পড়ুন-দুঃখবিলাসী উমার দালান
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, মিজোদের সঙ্গে মণিপুরের কুকিদের জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে। তাঁর কথায়, মণিপুরে যা হয়েছে, তা মিজোরামের উপরেও আঘাত। মিজোরামের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ খ্রিস্টান। মণিপুরের জাতিহিংসা এবং হিন্দু মেইতেই সম্প্রদায়ের দ্বারা শতাধিক গির্জা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী। নিরাপত্তার কারণে কয়েক হাজার কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে মিজোরামের ত্রাণ শিবিরে আছেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে মাখামাখি ভোটের ফলে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বুঝেই ভোলবদল মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর।
আরও পড়ুন-বাম-শাসিত কেরলে জনসভা হামাস নেতার!
মে মাস থেকে লাগাতার উত্তপ্ত মিজোরামের প্রতিবেশী রাজ্য মণিপুর। সেখানে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে তার আঁচ এসেছে মিজোরামেও। মণিপুরে ক্ষমতায় বিজেপি। ফলে সেখানকার হিংসার প্রভাব বিজেপির জোটসঙ্গী এমএনএফ-এর উপরেও পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এদিকে, ইতিমধ্যেই আইজলে পদযাত্রা করে গিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। মিজোরামের দক্ষিণ এবং পশ্চিম অংশে প্রচারে যাবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। বিধানসভা ভোটের আগে মণিপুর-অস্বস্তি মিজোরামে চাপে রেখেছে পদ্ম শিবিরকে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ তাঁর এক্স-পোস্টে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ৩০ অক্টোবর মিজোরামে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খবর আসছে যে তিনি তাঁর সফর বাতিল করেছেন। এটার কারণ কী হতে পারে? ১৮০ দিন ধরে গভীর সমস্যায় জর্জরিত প্রতিবেশী রাজ্যে যাওয়ার সময় পাননি… তাই মিজোরামের সমাবেশে তিনি আর কোন
মুখে যাবেন?