প্রতিবেদন : প্রচণ্ড দাবদাহে ফুটছে কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ। টানা গরমে নাভিশ্বাস আমজনতার। টানা ৫৫ দিন শহরে দেখা নেই বৃষ্টির। চলছে তাপপ্রবাহ। চড়চড়িয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। কলকাতায় পারদ চল্লিশ ছুঁই ছুঁই। বাকি রাজ্যে পেরিয়ে গিয়েছে চল্লিশের কোঠা। এই অসহ্য পরিস্থিতিতে জনজীবন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি দক্ষিণের কয়েকটি জেলায় খরার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে হাওড়ার ব্যাঁটরায় গরমে অসুস্থ হয়ে এক টোটোচালকের মৃত্যুর খবর এসেছে। মৃতের নাম বাসু মণ্ডল, বয়স ৫৪ বছর।
আরও পড়ুন – থাবা বসল সিলেবাসে, ভুলতে হবে অনন্য অতীত
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে ব্যাঁটরা থানার শানপুর মোড়ে টোটো চালাতে গিয়ে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাওড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গরম নাকি অসুস্থতার জেরে মৃত্যু, তা জানতে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এই রেকর্ড গরমের প্রভাব পড়ছে কৃষিক্ষেত্রেও। অসময়ের সবজি এবং ফলমূলের উৎপাদনের ওপরেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে এই তাপপ্রবাহ। অতিরিক্ত গরমে সবজি ও গ্রীষ্মকালীন ফলের মুকুল ঝরে পড়ছে। উৎপাদনে এর প্রভাব পড়তে বাধ্য। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে রাজ্য সরকার। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী নিজে পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বৈঠক করতে পারেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রীষ্মকালীন ফসলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার হার ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রার হার ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে ফসলের ক্ষতি হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে এবং ক্রমাগত শুকনো হচ্ছে আবহাওয়া (Weather)। এই অবস্থা ডালের পরাগায়ণে একটি পার্থক্য তৈরি করতে পারে। যেসব কৃষক মার্চ মাসের মাঝামাঝি বা শেষ সপ্তাহে গম কাটার পর ডাল রোপণ করেছিলেন তাঁরা ক্ষতির মুখোমুখি হবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, সরকার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। আচমকা ঝড়ে বোরো চাষের যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সোমবার আলিপুর আবহাওয়া (Weather) দফতরের প্রধান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী ২৮ তারিখ পর্যন্ত কলকাতায় বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই।