প্রতিবেদন : খোলা মনে সরকার চাইছে এসএলএসটি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির কর্মপ্রার্থীদের জটিলতার অবসানের। বুধবার স্কুল শিক্ষা দফতর, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে এমনটাই জানালেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। আন্দোলনকারীদের দেওয়া প্রস্তাবও জরুরি ভিত্তিতে খতিয়ে দেখতে শুরু করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন।
আরও পড়ুন-হায়দরাবাদে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু তৎপর শ্রমিক কল্যাণ দফতর
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য নিয়ে বুধবার বিকাশ ভবনে আলোচনায় বসেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন, কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার, তাঁদের আইনি অফিসাররা। কর্মপ্রার্থীদের বক্তব্যগুলি তুলে ধরেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ, তাঁর কাছেই আন্দোলনকারীরা তাঁদের সমস্যার কথা বলেন। বৈঠকে বারবার আইনি জটিলতার কথা উঠে আসে। পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। ঠিক হয় সমস্যার দ্রুত সমাধানের সবক’টি পথে চেষ্টা করা হবে। তবে আবার কেউ কোনও মামলা করে দিলে বিষয়টা আবার আটকে যাবে বা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হতে পারে, এই আশঙ্কাও উঠে আসে এদিনের বৈঠকে। আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব, আদালতে সমাধানের পাশাপাশি বিকল্প পথেও চেষ্টা হোক। আইনি শর্তাধীনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করুক কমিশন। পরে যদি আদালত তাতে স্থগিতাদেশ দেয় তখন কর্মপ্রার্থীরা সেটা মেনে নেবেন। এই আইনি শর্তাধীনভাবে প্রক্রিয়াটি এগোনোর প্রস্তাব খোলামনে আলোচনা করেন সরকারপক্ষের কর্তারা। শেষে ঠিক হয়, এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে আইনি পরামর্শ নেবে কমিশন।
আরও পড়ুন-রেলের উদাসীনতায় দুর্ভোগে মানুষ, ফুটব্রিজ নিয়ে আন্দোলনের হুমকি
কমিশনের চেয়ারম্যান কথা বলবেন আইনজ্ঞদের সঙ্গে, বিশেষ করে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তর সঙ্গে। যদি আইনি দিক থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া যায়, তাহলে কমিশন সেইমতো এগোবে। শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন সংশ্লিষ্ট অফিসারদের শূন্য পদের তালিকা তৈরি করে কমিশনকে পাঠিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। যদি আইনি সম্মতি পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে সেই শূন্য পদকে সামনে রেখেই এগোবে নিয়োগ প্রক্রিয়া। এবং এই সংক্রান্ত আরও যা যা বিষয় রয়েছে সেইগুলি নিয়ে সরকারি পদক্ষেপ শুরু হবে। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কুণাল ঘোষ বলেন, আমি সরকারের কেউ নই। আন্দোলনকারীরা আমাকে যা বলেছিলেন, আমি সেগুলি তুলে ধরেছি। সরকার সদিচ্ছা দেখাচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী আন্তরিক। আদালত সংক্রান্ত জটিলতাগুলির জন্য দ্রুত পদক্ষেপ আটকে যাচ্ছে। আমরা দ্রুত নিয়োগ চাই। শেষপর্যন্ত আন্দোলনকারীদের তরফে যে আইনি শর্তাধীন নিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছিল, সেটি নিয়েও কথা হয়েছে। কমিশন এ-বিষয়ে দ্রুত আইনি পরামর্শ নেবে। এদিন এসএলএসটি শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষা সংক্রান্ত মামলাটিও ছিল। কিন্তু বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এদিন এজলাসে না বসায় শুনানি হয়নি। কর্মপ্রার্থীরা বলেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আমাদের নিয়োগের জন্য যা যা করার করে দিয়েছেন। প্রক্রিয়া চলছিল। আমাদের প্যানেলে কোনও বিতর্ক নেই। কিন্তু যারা চায় না চাকরি হোক, তারা কোর্টে গিয়ে অযোগ্যদের হয়ে মামলা করে স্থগিতাদেশ দিয়ে আমাদের নিয়োগ আটকে রেখেছে। আমাদের আশা ছিল, আগের শুনানিগুলির পর এদিন মহামান্য হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ সরিয়ে আমাদের নিয়োগে ছাড়পত্র দেবেন। কিন্তু বুধবার আদালত না বসায় আমাদের মন ভেঙে গিয়েছে। এই সময় পেয়ে গেলে চাকরি ঠেকাতে যারা ব্যস্ত, সেই চক্রান্তকারীদের হাত শক্তিশালী হচ্ছে।