দূর করে একাকিত্ব
দক্ষিণ কলকাতার বৃদ্ধ দম্পতি। কর্মসূত্রে ছেলে বাইরে। ফ্ল্যাট বাড়িতে দু’জনের সংসারে থাবা বসিয়েছিল চরম একাকিত্ব। নিঃসঙ্গ, অলস জীবন। সকাল থেকে রাত কাটছিল একে অপরের বিবর্ণ মুখের দিকে তাকিয়ে। ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসছিল মুখের এবং বুকের কথা। তাঁদের সমস্যা শোনেন এক সহৃদয় প্রতিবেশী। তিনি বাড়িতে কুকুর পোষার পরামর্শ দেন। প্রথমে গররাজি হলেও শেষমেশ পরামর্শ মেনে নেন দম্পতি। বাড়িতে আনেন একটি ছোট্ট কুকুর। ফল পেলেন হাতেনাতে। কয়েক দিনের মধ্যেই দূর হয়ে গেল তাঁদের একাকিত্ব। অলস জীবন হয়ে উঠল সচল। প্রাণবন্ত পোষ্যকে দেখভাল করতে করতে এখন পেরিয়ে যায় দু’জনের সময়। দমবন্ধকর পরিবেশে পোষ্যটি এনেছে একমুঠো ফুরফুরে হাওয়া। রোজ বিকেলে তাঁরা পোষ্যকে নিয়ে হাঁটতে বেরোন। ফেরার পথে দোকান ঘুরে আসেন। কেনেন টুকিটাকি। পোষ্যের জন্য। এইভাবেই বৃদ্ধ দম্পতি ফিরে পেয়েছেন নতুন জীবন। মুখে ফুটেছে হাসি।
আরও পড়ুন-যোগী পুলিশকে ডোন্ট কেয়ার! রাজার হালে জেলে দিন কাটাচ্ছে দাগি অপরাধী
বিবাহের এক যুগ পেরিয়ে গেছে অর্থনৈতিকভাবে সফল এক দম্পতির। এখনও তাঁরা নিঃসন্তান। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন। কোনও ফল হয়নি। আত্মীয়স্বজন শিশু দত্তক নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রাজি হননি তাঁরা। অনেক ভেবেচিন্তে দম্পতি ঘরে এনেছেন একটি বিড়ালছানা। দুধসাদা রঙের। পোষ্যটিকে নিয়ে এখন তাঁরা সুখেই আছেন।
বহু ছোট সংসারে এক সন্তানের একাকিত্ব দূর করার জন্য এখন কুকুর, বিড়াল, খরগোশ পোষার প্রবণতা বেড়েছে। কেউ কেউ পোষেন পাখি। করোনাপর্বে বহু পরিবারের অলস দিনের সঙ্গী ছিল কোনও না কোনও পোষ্য। তাদের নিয়ে ব্যস্ত থেকে দিন কেটেছে গৃহস্থের। তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় পোষ্যের সঙ্গে তোলা ছবি আপলোড করেছেন অনেকেই। এই তালিকায় সাধারণ মানুষ যেমন আছেন, তেমন আছেন বহু সেলিব্রিটি। করোনা পরিস্থিতির পর ঘরে পোষ্য পালনের প্রবণতা অনেকটাই বেড়েছে। আধুনিক সমাজে পোষ্য হয়ে উঠেছে জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ। যাঁরা মনে করেন এটা নেহাতই বাতুলতা, বেকার খরচ, মনোরঞ্জন এবং লোকদেখানো ছাড়া আর কিছু নয়, তাঁদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
আরও পড়ুন-রাহুর দশা বিজেপির! দল ছাড়লেন প্রতাপ সিং
পড়তে হবে মনের ভাষা
ঘরে আনার পর থেকেই যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে পোষ্যদের প্রতি। বড় করতে হবে সন্তানস্নেহে। তাদের ভালমন্দ সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। মুখের ভাষা বোঝা হয়তো সম্ভব নয়। পড়তে হবে মনের ভাষা। সঙ্গী হতে হবে তাদের আনন্দ ও মনখারাপের। কোনওভাবেই উপেক্ষা করলে চলবে না। গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষই কৃষি কাজের পাশাপাশি করেন পশুপালন। পোষেন গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি। এইসব প্রাণী পালনের মধ্য দিয়ে তাঁরা রীতিমতো জীবন ধারণ করেন। প্রাণীসম্পদের মূল প্রোডাক্ট মাংস, দুধ এবং ডিম। দিনে দিনে এর চাহিদা বাড়ছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে পোল্ট্রি একটা বড় ইন্ডাস্ট্রি। সেখান থেকে মাংস এবং ডিম উৎপাদিত হয়। বিক্রি হয় বাজারে। এইভাবে লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। ২০১১ সালের পর থেকে বেড়েছে প্রোডাকশন। কয়েক বছর আগে ৫ হাজার মেট্রিক টন মাংস উৎপাদিত হত। এখন ১১ হাজার মেট্রিক টন মাংস উৎপাদিত হয়। আগে ছিল ৪০০ কোটি টাকার বাজেট। এখন বাজেট ১২০০ কোটি টাকারও বেশি। এবার আসা যাক দুধের কথায়। দুগ্ধজাত সামগ্রী মূলত মিষ্টি তৈরির কাজে লাগে। দিনে দিনে এর চাহিদাও বিপুল পরিমাণে বাড়ছে। বহু মানুষ গরু, মহিষ, ছাগল পালন করেন দুধ উৎপাদনের জন্যই। এইভাবে সমাজের একটা বড় অংশের উপার্জন হয়। তার জন্য কিন্তু প্রাণীদের সুস্থ রাখা জরুরি।
আরও পড়ুন-শিক্ষিকাদের পোশাক নিয়ে হুলিয়া জারি গেরুয়া সরকারের, মহারাষ্ট্রে যেন তালিবানি ফতোয়া
অসুস্থতা কীভাবে বোঝা যায়
মানুষের অসুখবিসুখে চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হয়। তেমনই পোষ্যদেরও শারীরিক অসুস্থতায় প্রয়োজন হয় চিকিৎসকের। শারীরিক অবস্থা বোঝার জন্য মনোযোগ দিতে হবে তাদের চলাফেরা এবং গতির দিকে। স্বাভাবিকের চেয়ে ভিন্ন গতিতে চললে বুঝতে হবে পশু অসুস্থ। অসুস্থতার আরও কিছু লক্ষণ আছে। সেগুলো হল, ঠিকমতো না খাওয়া, উৎপাদিত দুধের পরিমাণ কমে যাওয়া, সারাদিন অলস থাকা, শ্বাসকষ্ট, নাক ও চোখ থেকে জল পড়া, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি। এইসব লক্ষণগুলো দেখা দিলে পশুকে সুস্থ প্রাণীদের থেকে দূরে রাখতে হবে এবং প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যেতে হবে প্রাণী হসপিটালে। দিতে হবে ওষুধ এবং টিকা। প্রয়োজনে ডায়ালিসিস, অপারেশন পর্যন্ত করাতে হতে পারে।
কোথায় হয় চিকিৎসা
গ্রামবাংলায় আছেন বহু প্রাণী চিকিৎসক। অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে পরিষেবা দেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রায় প্রত্যেকটা ব্লকে আছে দুটো করে প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্র। সেখানে থাকেন একজন ডাক্তার, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং গ্রুপ ডি। সারা রাজ্যে এইরকম ৭৩০টা প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ১০টা ভেটেরিনারি পলি ক্লিনিক রয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেকটা গ্রাম পঞ্চায়েতে আছে একটি করে সহায়ক কেন্দ্র। এ ছাড়াও প্রত্যেকটা ব্লকে ব্লক লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট অফিস রয়েছে। এই অফিস মূলত ব্লকের চিকিৎসা নিয়ন্ত্রণ করে। কোথায় কী ওষুধের প্রয়োজন, কী টিকার প্রয়োজন ইত্যাদি বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নজর রাখে।
আরও পড়ুন-আগাম জামিন পেলেন কেজরি
এখান থেকে ছাগল, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি প্রাণিসম্পদ বিলি করা হয়। প্রাণী-পালকদের নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এফপিসি/এফপিও। এ তো গেল গ্রামের কথা। শহরাঞ্চলে প্রাণী চিকিৎসার জন্য হসপিটাল আছে প্রায় প্রতিটি মহকুমায়। পশ্চিমবঙ্গে এই চিকিৎসা ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত। পুরো বিষয়টির মধ্যেই রয়েছে পরিকল্পনার ছাপ। শুধুমাত্র গৃহপালিত পশুদের নয়, বনের পশু এবং পথের পশুদেরও যতটা সম্ভব আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। দেওয়া হয় ওষুধ, টিকা ইত্যাদি। প্রয়োজনে অপারেশন করা হয়। রাস্তায় মাঝে মধ্যেই গরু, কুকুরকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের জন্য রয়েছে ভ্রাম্যমাণ প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্র। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে।
কীভাবে হয় রোগ নির্ধারণ
প্রাণীদের রোগ নির্ধারণের বেশ কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। প্রাথমিকভাবে রোগ নির্ধারণ করেন ব্লক স্তরের প্রাণী চিকিৎসকরা। তাঁরা যতটা সম্ভব চিকিৎসা করেন। ওষুধ দেন, টিকা দেন। রক্তের বা অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করেন। নমুনা পাঠানো হয় মহকুমা স্তরের রোগনির্ণয় কেন্দ্রে। রিপোর্ট এলে নেওয়া হয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ। রোগ গুরুতর হলে নিয়ে যাওয়া হয় মহকুমা প্রাণী সম্পদ হসপিটালে। সেখানকার আধিকারিক রোগ নিরাময়ের ব্যবস্থা করেন। সমস্যা না মিটলে পাঠানো হয় জেলায়। রোগ নির্ণায়ক আধিকারিকের কাছে। মূল কেন্দ্র বেলগাছিয়ার ইনস্টিটিউট অফ অ্যানিম্যাল হেল্থ অ্যান্ড ভেটেরিনারি বায়োলজিক্যালস। সেখান থেকে পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। প্যাথলজিক্যাল টেস্ট থেকে শুরু করে পোস্টমর্টেম, সবই হয়। এই কেন্দ্রে তৈরি হয় প্রায়োজনীয় টিকার প্রায় ৯০ শতাংশ। বাংলার কৃতি গবেষকরাই এইসব টিকা তৈরি করেন। মনে রাখতে হবে, প্রাণী চিকিৎসার ব্যাপারে সাধারণ মানুষ এখন যথেষ্ট সচেতন। পোষ্য অসুস্থ হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। নিয়ে যান হসপিটালে, প্রাণী চিকিৎসকের কাছে। গরু, মহিষের মতো বড় আকারের প্রাণী অসুস্থ হলে অনেক সময় হসপিটালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তখন পরিসেবা দেয় ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা কেন্দ্র। এটা রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনায় চালু হয়েছে(এমভিসি)। আছে এমভিইউ। বর্তমানে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পশুদের সরকারি উদ্যোগে টিকা দেওয়া হয়। ব্লক স্তরে টোটাল সিস্টেমটা কন্ট্রোল করেন ব্লক লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট অফিসার এবং জেলা স্তরে উপ অধিকর্তা, প্রাণিসম্পদ বিকাশ। প্রাণীদের জন্য ডায়ালিসিস ব্যবস্থা চালু হয়েছে কলকাতার বেলগাছিয়া ভেটারিনারি হাসপাতালে।
আরও পড়ুন-৭ দফায় লোকসভা নির্বাচন, ৪ জুন ভোটগণনা
নতুন প্রজন্ম কতটা আগ্রহী?
প্রাণী চিকিৎসা শুধু পেশা নয়, এক ধরনের পরিষেবাও। যাঁরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হবেন তাঁদের আগে পশুপ্রেমী হতে হবে। প্রাণী চিকিৎসক হওয়ার জন্য যে কোনও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান (রসায়ন, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান) বিষয়ে ন্যূনতম পঞ্চাশ শতাংশ নম্বর নিয়ে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করতে হয়। তারপর ভেটেরিনারি নিয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি পড়ার জন্য ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এনট্রান্স টেস্ট (নিট)-এ উত্তীর্ণ হতে হয়। পশুপালন, পশু-পুষ্টি, ভেটেরিনারি প্যাথলজি, পশু জেনেটিক্স এবং প্রজনন, ভেটেরিনারি মাইক্রোবায়োলজি, ভেটেরিনারি প্যাথলজি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাচেলর অফ ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি (বিভিএসসি অ্যান্ড এএইচ) ডিগ্রি পড়া যায়। ব্যাচেলর অফ ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি ডিগ্রি নিয়ে পড়াশোনার সময়কাল সাধারণত ১ বছরের ইন্টার্নশিপ-সহ সাড়ে ৫ বছরের হয়ে থাকে। ডিগ্রি কোর্স পাশ করার পর ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেটেরিনারি কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশন করাতে হয়। কলকাতার বেলগাছিয়ায়, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্সেস প্রতিষ্ঠানে এই বিষয়ে পড়ানো হয়। এই প্রতিষ্ঠানের নদিয়ার মোহনপুর ক্যাম্পাসে মূলত স্নাতকস্তর পড়ানো হয় এবং স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি-র জন্য যেতে হয় বেলগাছিয়ার শাখায়। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভারতের আরও অনেক প্রতিষ্ঠানে এই বিষয়ে নিয়ে পড়াশোনা করা যায়। ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করার পর স্নাতকোত্তর, পিএইচডি করারও সুযোগ থাকে। এই পেশায় চাকরির অনেক সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, চিড়িয়াখানা বা কোনও প্রাণী-চিকিৎসালয়ে নিয়োগ হতে পারে। শুধুমাত্র চিকিৎসা নয়, আছে বিভিন্ন কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর সুযোগ। সুযোগ আছে ওয়াইল্ড লাইফ স্পেশালিস্ট হওয়ার। আবার অনেকেই গবেষণার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করেন। আবিষ্কার করেন নতুন নতুন ওষুধ, টিকা। মিটছে ঘাটতি। উপকৃত হচ্ছে সমাজ। অনেকেই যুক্ত হচ্ছেন বড় বড় পোল্ট্রি ফার্মের সঙ্গেও। সবমিলিয়ে পেশা হিসেবে খুবই ভাল। স্বাভাবিক কারণেই এগিয়ে আসছে নতুন প্রজন্ম। প্রত্যেকের একটাই লক্ষ্য, সুস্থ রাখতে হবে পশুপাখিদের।
আরও পড়ুন-ভাষায় সংযত থাকুন, নির্দেশ কমিশনের
প্রয়োজনীয় টিপস
সুষম খাবার : উচ্চমানের সুষম খাবার দিতে পারেন। বিশেষভাবে কুকুর ও বিড়ালের জন্য। তাতে তাদের সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি রয়েছে। সঠিক পরিমাণ, গুণমান, সময় ও খাবারের ফ্রিকোয়েন্সি ছাড়াও একজন প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
শারীরিক কার্যকলাপ : পোষ্যকে সবসময় ঘরের মধ্যে আটকে রাখবেন না। শারীরিক ধরন অনুযায়ী শারীরিক কার্যকলাপ করাতে পারেন। বিড়াল সাধারণত নিজের যত্ন নিজেই নিতে পারে। তবে কুকুরের ক্ষেত্রে বিষয়টা অন্যরকম। তাদের জাত ও ধরনের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট মাত্রার শরীরচর্চার দরকার পড়ে। এ-ছাড়া বিভিন্ন প্রাণীদের সঙ্গে মেলামেশা করার সুযোগ করিয়ে দেওয়াও জরুরি।
প্রতিরোধমূলক যত্ন : পোষ্যকে টিকা দেওয়ানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। মানুষের সন্তানকে যেমন পোলিওর শট বা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, তেমনই পোষ্যেরও টিকা গ্রহণ প্রয়োজন। কৃমি, ইক্টোপ্যারাসাইট নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সঙ্গে পর্যবেক্ষণযোগ্য উপসর্গ বা তাদের স্বাস্থ্যের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে আরও কিছু প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা করা দরকার। সময়মতো বুস্টার শট দিতে ভুলবেন না যেন।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা : পোষ্যদের বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন। পাশাপাশি বছরে বেশ কয়েকবার চেকআপেরও দরকার হয়। দাঁত, ত্বক ও লোমের গুণমান থেকে শুরু করে ওজন, কার্ডিয়াক ও আরও অনেক কিছু রয়েছে, যার জন্য নিয়মিত চেকআপ ও অভিজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নেওয়া দরকার।
স্থান এবং নিরাপত্তা : মনে রাখতে হবে, পোষ্যেরও কখনও কখনও কিছু সময় ও স্থানের প্রয়োজন হয়। তাদের নিজস্ব আরামদায়ক ও পরিচিত জায়গা থাকে, যেখানে তারা নিজেদের একান্ত সময় ব্যয় করে। এটা দেখা প্রতিটি পোষা প্রাণীর অভিভাবকের দায়িত্ব।
কোমল ত্বক ও লোমের যত্ন : পোষ্যের আকর্ষণ লুকিয়ে রয়েছে কোমল ত্বক ও লোমের মধ্যে। এইগুলো ভালবাসা, স্নেহ ও মনোযোগের উৎস। খেলার সময়, আলিঙ্গন করার সময় মনে রাখতে হবে পোষ্যের জন্য ডোজগুলি ঠিকঠাক দেওয়া হচ্ছে কি না। প্রাথমিক যত্নের পদক্ষেপের অংশ হিসাবে পোষা প্রাণীদের জন্য সামাজিকীকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।