উপনির্বাচনের আগেই আবার নতুন করে উত্তপ্ত ত্রিপুরা। হামলা চালানো হল তৃণমূল কর্মীদের ওপর। অভিযোগের আঙুল উঠেছে বিজেপির দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরায় সুরমা বিধানসভা এলাকায়। ২ তৃণমূল কর্মীর ওপর বিরুদ্ধে হামলার চালানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। বুধবার সুরমার অন্তর্গত চাঙ্কাপ বাজারে ৭০টি পরিবার তৃণমূলে যোগ দেয়। তার পরেই ওই হামলা হয়েছে।
আজ, বৃহস্পতিবার আক্রান্তদের দেখতে ধলাই জেলা হাসপাতালে যায় তৃণমূল নেতৃত্ব। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূলের ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রদেশ সভাপতি সুবল ভৌমিক, রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ, দেবু টুডু, বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, যুবনেতা শক্তিপ্রতাপ সিং, মুকুল বৈরাগ্য, শান্তনু সাহা, সুদীপ রাহা-সহ আরও অনেকে। তাঁরা আহতদের দেখার পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের লোকেদের সঙ্গেও কথা বলেন। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন-‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়’ দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিয়ে বার্তা মুখ্য়মন্ত্রীর
ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল ধলাই জেলার পুলিশ সুপার রমেশ যাদবের সঙ্গে দেখা করে ডেপুটেশনে দেন। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও শুক্রবার ত্রিপুরায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেও নির্বাচনকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার দাবি জানানো হবে।
ত্রিপুরায় দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন এর প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার তারা পথে নামবেন। সুবল ভৌমিক বলেন, ‘‘নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে সরকারের মদতপুষ্ট হার্মাদবাহিনী হামলা চালাচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর।’’
আরও পড়ুন-১০৪ ঘণ্টা! ৮০ ফুট নীচের গর্ত থেকে উদ্ধার হল ছত্তিশগড়ের ছোট্ট রাহুল
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ, রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক সুবল ভৌমিক। জানা গেছে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর রাত ১১টা নাগাদ একদল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী সদ্য তৃণমূল যোগ দেওয়া কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়। সেই হামলায় দু’জন আহত হন। তাদের মধ্যে এক জন কিশোর রয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁদের কোপানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-জঙ্গিদের স্কুল
ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুবল ভৌমিক আরো বলেন, ‘বিজেপির মনে রাখা উচিত তাদের মুখ্যমন্ত্রীও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। শাসকদল বলে কী এই অধিকার তাদের? বাস্তব হল, বিজেপি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ছাড়া কিছুই করছে না।’
রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার
এই আপনার ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা? আমাদের কর্মীদের ওপর এভাবে হামলায় স্পষ্ট, তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় পাচ্ছেন আপনারা।” এই নারকীয় ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি জানান সুস্মিতা দেব।
থানায় এই মর্মে অভিযোগ জানিয়েছেন সুবল ভৌমিক।বিজেপির স্বপ্না দাস, বালাই মালাকার ও অন্যান্য বিজেপি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।১৫ই জুনের ঘটনার ভিত্তিতে এই অভিযোগ জানানো হয় বলেই জানা গিয়েছে।ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূলের ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “এত বর্বরতা! এত নৃশংসতা! বিজেপির জল্লাদ বাহিনীর নৃশংস হামলার সাক্ষী হয়ে রইল গোটা দেশ। গুন্ডারাজের সরকার, সন্ত্রাসবাদের সরকার!বিজেপি জনসমর্থন হারাচ্ছে বলে নিষ্ঠুরতার রাস্তা অবলম্বন করেছে। রাতের অন্ধকারে নিরীহ মানুষদের ওপর হামলার পর স্বৈরাচারী সরকার বর্বরতার সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ভয় পেতে জানে না। যত বেশি আঘাত করা হবে, তৃণমূল কংগ্রেস তত বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।”