মুসলিম পড়ুয়া নিগ্রহ-কাণ্ড, তদন্তে ঢিলেমির জন্য যোগী সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের

গত ৬ সেপ্টেম্বর, শীর্ষ আদালত মুজাফফরনগরের পুলিশ সুপারকে এই মামলায় একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

Must read

প্রতিবেদন : উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে মুসলিম পড়ুয়াকে চড় মারার ঘটনায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তে ইচ্ছাকৃত ঢিলেমির অভিযোগ উঠল যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এর জেরে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট তীব্র ভর্ৎসনা করে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে। শীর্ষ আদালত কড়া ভাষায় বলেছে, শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার কারণে যেভাবে এক পড়ুয়াকে চরম হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তা রাজ্যের বিবেককে কাঁপিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। তারপরেও তদন্তে ঢিলেমি চলছে!

আরও পড়ুন-জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে চাকলাধামের সংস্কার

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা ও পঙ্কজ মিথালের বেঞ্চ বলেছে, শীর্ষ আইপিএস আধিকারিকের নজরদারিতে এই ঘটনার তদন্ত করতে হবে। উচ্চপর্যায়ের আধিকারিকই তদন্তের রিপোর্ট পেশ করবেন শীর্ষ আদালতে। সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, শিক্ষক একটি সম্প্রদায়কে টার্গেট করছেন। আমাদের গোটা ঘটনার গভীরে যেতে হবে। এই মানসিকতা নিয়ে যদি কোনও শিক্ষক পড়ুয়াদের শিক্ষাদান করেন তাহলে শিক্ষার মান কোথায় পৌঁছেছে? রাজ্য সরকারকে গোটা ঘটনার দায় নিতে হবে। যেভাবে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে তাতে গুরুতর গলদ রয়েছে। এটা অত্যন্ত আপত্তিকর। যোগী সরকারকে তুলোধনা করার পাশাপাশি সোমবার শীর্ষ আদালত জানতে চেয়েছে, স্কুল কি এই ঘটনার পর শিশুটির কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করেছিল? এরকম ঘটনা ঘটলে তা প্রশাসনের বিবেককে নাড়া দেওয়ার মতো? এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার কী করছে?

আরও পড়ুন-মুডিজ সংস্থার বিস্ফোরক রিপোর্ট, আধারে বাড়ছে তথ্য জালিয়াতি, সুরক্ষা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন

গত ২৬ অগাস্ট প্রকাশ্যে আসে উত্তরপ্রদেশের চরম নিন্দনীয় বিতর্কিত ঘটনাটির খবর। জানা গিয়েছে, নামতা বলতে পারছিল না এক মুসলিম পড়ুয়া। ক্লাসের শিক্ষিকা তখন নির্দেশ দেন, সহপাঠীরাই ওই পড়ুয়াকে এক এক করে এসে থাপ্পড় মারবে। পড়ুয়াদের সামনে শিক্ষিকা আরও বলেছিলেন, মুসলিম মহিলারা তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার দিকে খেয়াল রাখেন না। সেই জন্যই মুসলিম পড়ুয়াদের পড়াশোনার মান এত খারাপ। তাই মুসলিম পড়ুয়াকে ক্লাসের সবার পেটানো উচিত। গোটা ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের নিন্দায় সরব হয় দেশের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। বিজেপির নিকৃষ্ট সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নীতিতে বিশ্বাসী ওই শিক্ষিকা শিশু পড়ুয়াদের মধ্যে ধর্মীয় বিদ্বেষের বিষ ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে। শিক্ষিকার মদতে সহপাঠীদের হাতে নিগৃহীত ওই পড়ুয়া মানসিকভাবে এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে যে স্কুলে আসাই বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত চেয়ে মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র তুষার গান্ধী শীর্ষ আদালতে আবেদন জানান।

আরও পড়ুন-আজও রাজরীতি মেনেই হয় পাহাড়ের প্রথম দুর্গাপুজো

গত ৬ সেপ্টেম্বর, শীর্ষ আদালত মুজাফফরনগরের পুলিশ সুপারকে এই মামলায় একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেখানে পুলিশ সুপারকে ছাত্র এবং তার পিতামাতার সুরক্ষার জন্য নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে জানাতে বলেছিল। তবে এই ঘটনার তদন্তে ব্যাপক ঢিলেমির অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। ইচ্ছাকৃতভাবে অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। যার জেরে এদিন আদালতে তীব্র ভর্ৎসিত হল যোগী সরকার।

Latest article