গরিবকে ভাতে মেরে প্রতিহিংসা কেন্দ্রের, দিল্লিতে এসেই প্রতিবাদ ওদের

মনরেগার টাকা না দিয়ে ২০ হাজার কোটি টাকার সেন্ট্রাল ভিস্তায় নতুন সংসদ ভবন। বহুমূল্য প্রাসাদের মতো

Must read

নবনীতা মণ্ডল নয়াদিল্লি: মনরেগার টাকা না দিয়ে ২০ হাজার কোটি টাকার সেন্ট্রাল ভিস্তায় নতুন সংসদ ভবন। বহুমূল্য প্রাসাদের মতো। গরিবের পরিশ্রমের টাকা মেরে দিয়ে বিজেপির প্রতিহিংসা আর বঞ্চনার প্রমাণ ওই অট্টালিকা। সোমবার বাংলার বঞ্চিত জবকার্ড হোল্ডারদের তৃণমূল কংগ্রেস দেখিয়ে দিল কী কুৎসিত রাজনীতি করছে বঙ্গবিদ্বেষী মোদি সরকার। আগামী দিনে সরকার বদল করেই এর জবাব দেবে বাংলার মানুষ।

আরও পড়ুন-সুখবর! এবার মাত্র দেড় ঘণ্টায় ডায়মন্ড হারবার থেকে পৌঁছে যাওয়া যাবে গঙ্গাসাগর

কেন্দ্র চক্রান্ত করে ট্রেন বাতিল করায় দীর্ঘ বাসযাত্রার ধকল নিয়ে এদিনই দিল্লি এসে পৌঁছেছেন হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ থেকে আসা হাজার হাজার জবকার্ড হোল্ডার। সাধারণ মানুষের প্রাপ্য টাকা আটকে বিলাসবহুল ভবন তৈরির নমুনা দেখে তাঁরা হতবাক। ভাবতেই পারছেন না টানা দু’বছর ধরে কেন্দ্রের বঞ্চনায় যখন তাঁরা হকের পাওনা থেকে বঞ্চিত, সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে এই সমস্ত নির্মাণে। প্রধানমন্ত্রীর বহুমূল্য বাসভবনও হয়েছে এই সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূল কংগ্রেসের ৭০ জন যুবনেতা ৫৬টি বাসে করে সোমবার বঞ্চিতদের ঘুরিয়ে দেখান ভারতমণ্ডপম, কর্তব্যপথ, ইন্ডিয়া গেট, সেন্ট্রাল ভিস্তা, নতুন সংসদ ভবন।

আরও পড়ুন-অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ, বিশেষ নজরদারির নির্দেশ

হুগলির বলাগড় থেকে আসা মনোরঞ্জন বিশ্বাস বললেন, এত বড় বড় অট্টালিকা বানানোর জন্য যদি মোদি সরকারের হাতে টাকা থাকে তাহলে বছরের পর বছর আমাদের হকের টাকা থেকে কেন বঞ্চিত করছে কেন্দ্র? মুর্শিদাবাদ থেকে এসেছেন শেখ সইফুল। তিনি এতদিন যুক্ত ছিলেন ১০০ দিনের মাটিকাটা, পুকুর ভরানো, রাস্তা তৈরির কাজে। ইদের সময়ে পরিবারের জন্য নতুন জামাকাপড় কেনার টাকা হাতে নেই, কারণ তা আটকে রেখেছে মোদি সরকার। সইফুলের কথায়, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কি মন বলে কিছু নেই? প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বর্ধমান থেকে এসেছেন রূপা মণ্ডল। তিনি নিজে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা, ইতিমধ্যেই চিকিৎসার খরচে টান পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চিকিৎসার খরচ মেটালেও এতদিন ধরে তার যে প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র, তার দাবিতে তিনি আজ অসুস্থ বাবা-মাকে প্রতিবেশীর ভরসায় ছেড়ে রাজধানীতে এসেছে প্রতিবাদে শামিল হতে। হুগলির নবগ্রাম ব্লক থেকে এসেছেন ৩ জন মহিলা ৭ জন পুরুষ জবকার্ড হোল্ডার। তাঁদের সবার বক্তব্য, রাজ্যের থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ বাকি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা তারা পেলেও মনরেগার বকেয়া না পেয়ে অর্থকষ্টে আছেন।

আরও পড়ুন-নিরামিষ খেয়েই প্রতিমা গড়তে বসেন মৃৎশিল্পী

৪৩ ঘণ্টা বাসযাত্রা করে ৩ হাজার জবকার্ডধারী এবং তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা বাংলাকে বঞ্চনার প্রতিবাদে কর্তব্যপথের রাস্তায় নিজেদের হক আদায় করতে নেমেছেন। হুগলির আরামবাগ থেকে এসেছেন তপন সাঁতরা। কেন্দ্রের আবাস যোজনায় নাম ওঠার পর নিজের মাটির বাড়ি তিনি ইতিমধ্যেই ভেঙে ফেলেছেন, অথচ বাড়ি তৈরির টাকা কেন্দ্রের কাছ থেকে আসেনি। পরিবার নিয়ে এখন তিনি বাস করছেন প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট জায়গায়।

আরও পড়ুন-বাংলায় ইলেকট্রিক স্কুটার কারখানার সম্ভাবনা, বিপুল কর্মসংস্থান

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, বাংলা থেকে আসা মানুষ এত বড় বড় অট্টালিকা আর এত বৈভব দেখে হতবাক। তাঁরা বলেছেন, নিজের চোখে না দেখলে আমরা জানতেই পারতাম না রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমাদের হকের টাকা না দিয়ে বাংলার বিজেপি এবং কেন্দ্রের সরকার কী ঘৃণ্য রাজনীতিটাই না করেছে আমাদের সঙ্গে!

Latest article